অফিস ডেস্ক
নাজমুল হক নাহিদ,আত্রাই (নওগাঁ)প্রতিনিধি:- নওগাঁর আত্রাইয়ে অসাধু ব্যাক্তিদের নিষিদ্ধ সুতির জাল দিয়ে চলছে মাছ শিকার। যার কারণে দ্রুত পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এবং ব্যাহত হচ্ছে পেঁয়াজ, সরিষাসহ অন্য রবিশস্যের আবাদ। দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি কৃষকদের।
উপজেলার পৈসাওতা এবং উদয়পুর সহ বিভিন্ন স্থানে সুতি জাল দিয়ে মাছ শিকার করছে। এতে মাঠের পানি প্রবাহ বাঁধাকস্থ হওয়ার কারণে প্রায় ১০-১২ হাজার বিঘা রবিশস্য সময় মত আবাদ করতে পারছেনা কৃষকেরা।
আত্রাইয়ে এ উপজেলা নিচু এলাকা হওয়ায় খাল বিলের সাথে নদীর সংযোগ সুইসগেট গেটের মাধ্যমে রয়েছে।
তবে বিভিন্ন সুইসগেটে সুতি জাল দিয়ে পানি প্রবাহের বাধাগ্রস্থ করায় মাঠে পানি নামতে অনেক সময় লাগছে।
যার কারণে রবিশস্যেরর আবাদ করতে পারছে না কৃষক।
কৃষকেরা জানান, প্রতিবছর অক্টোবরের মাঝামাঝি জমি থেকে পানি নেমে যায়। কিন্তু এ বছর উপজেলার বিপ্রো-বোয়ালিয়া, কাঁদওলামা, মাঝগ্রাম, নৈদিঘী, নবাবেরতাম্বু, মধ্য বোয়ালিয়াসহ বেশ কিছু গ্রামের মাঠে এখনো পানি জমে আছে।
সরজমিনে দেখা যায়, প্রধান পানি নিষ্কাশন খাল ডুবাই, ইসরাফিলসেতু, শুঁটকিগাছা সহ বিভিন্ন স্থানে পানি নিষ্কাশন খালের আড়াআড়ি জুড়ে বাঁশ, পলিথিন, চাটাই দিয়ে বেড়া নির্মাণ করেছে। এই বেড়ার কারণে পানিনিষ্কাশন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
উপজেলার কাঁদওলামা গামের কৃষক আব্দুল মজিদ বলেন, “আমাদের গ্রামের মাগুরার বিলের পানি এখনো নেমে যায়নি, যার কারণে রবিশস্যেরর আবাদ আমরা শুরু করতে পারি-নি। গত বছর এই সময় জমিতে সরিষাও ভুট্টা আবাদ করতে পেরেছি।
কিন্তু এ বছর জমিতে পানি থাকায় আমরা আবাদ করতে পারেনি। “পৈসাওতা গ্রামের কৃষক আকবর আলী বলেন, পৈসাওতা খালে অবৈধ সুতি জাল দেওয়ার কারণে কয়েকদিন আগে প্রশাসন ভ্রাম্যমাণের দিয়ে তা রোধ করেছিল। কিন্তু ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে তারা আবারও খালে সুতি জাল বসিয়ে মাছ শিকার করছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মৎস্যজীবী সহ হাজারো কৃষকেরা।
বিপ্রো-বোয়ালিয়া গ্রামের কৃষক রেজাউল করিম (টিপু) বলেন, আমি ১২ বিঘা জমি আবাদ করি, আমাদের মাঠের জমিতে পানি জমে থাকার কারণে ভুট্টার আবাদ সহ ইরি মৌসুমের বীজও এখন পর্যন্ত বপন করতে পারেনি। এ বছর আমরা সময় মত আবাদ করতে পারবো কিনা জানিনা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছু একাধিক কৃষকেরা জানান, সুতি জালের মাধ্যমে বিভিন্ন সুইসগেট কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিরা পানি বাধাগ্রস্ত করার কারণে উপজেলার কৃষকেরা সঠিক সময় আবাদ করতে পারছে না। প্রশাসনের উদ্যোগের মাধ্যমে খুব দ্রুত এ সকল অবৈধ সুতি জাল উচ্ছেদের জোর দাবিও জানান তাঁরা।
আত্রাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রসেনজিৎ তালুকদার বলেন, “এখন পর্যন্ত কোন কৃষক আমাদের অভিযোগ করেনি। সুতি জালের কারণে পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হলে রবিশস্যসহ ইরি আবাদে করতে দেরি হবে।”
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মাকসুদুর রহমান বলেন, আমরা বিভিন্ন জায়গায় ভ্রাম্যমাণের মাধ্যমে অবৈধ সুতি জাল উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছি। কোথাও যদি এখনো অবৈধ সুতি জাল দিয়ে মাছ শিকার করে আমরা দ্রুতই তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।