অফিস ডেস্ক
পীরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি:-রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার চতরাহাটে প্রভাবশালীর দখলে থাকা জমি প্রশাসনের হস্তক্ষপে ফিরে পেয়েছে জমির মালিকরা। এলাকাবাসীর মাঝে স্বস্তি।
ব্যাক্তিমালিকানার পাশাপাশি ওই প্রভাবশালী স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের শ্মশানের জায়গাও দখল করে রাখেন। বিষয়টি নিয়ে উভয় পক্ষ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করলে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ফিরে পেলেন শ্মশানের জায়গা। লাল পতাকা টানিয়ে সীমানা নির্ধারণ করে তার জমি বুঝিয়ে দিয়েছে প্রশাসন। প্রশাসনের উপস্থিতিতে শ্মশান ঘাটে সাইনবোর্ড টানিয়ে দিয়েছেন স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন।
জানা গেছে, চতরা ইউনিয়নের ইকলিমপুর মৌজায় চতরাহাটের ৫ শতক জমি শাহানারা বেগমকে প্রায় এক যুগ আগে দলিল সম্পাদন করেন দেন তার বড় ভাই মৃত খায়রুজ্জামান প্রধান। ওই জমি দীর্ঘ ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে জোরপূর্বক দখল করে ভোগ করেন ইকলিমপুর গ্রামের মৃত, মজিদ দেওয়ান এর ছেলে স্থানীয় প্রভাবশালী ফরমান আলী। পাশাপাশি হিন্দুদের শ্মশানঘাট দখল করে রাখেন ভয়ভীতি দেখিয়ে। জমির সীমানা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে দ্ব›দ্ব চলে আসছে। অবশেষে উপজেলা প্রশাসন সীমানা নির্ধারন করায় এলাকাবাসীর মাঝে স্বস্তি ফিরেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হিন্দু সম্প্রদায়ের একাধিক লোক জানান, চতরাহাটের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হয়েও ভূমিহীন সেজে ৯ শতক জমি বন্দোবস্ত নেয় ফরমান আলী। কাগজে কলমে ৯ শতক জমি নিলেও ২ পাশে প্রায় কোটি টাকা মূল্যের আরও ১০ শতক জমি দখল করে গোডাউন বানিয়েছেন তিনি। আমরা শ্মশান ঘাট উদ্ধারের কথা বললেই প্রভাব খাটিয়ে জোরপূর্বক জায়গাটি দখল করে বাগান বানিয়েছেন। তার ভয়ে আমরা ভীত সতস্ত ছিলাম।
তারা আরও জানান, এলাকার হিন্দু পরিবারের লোকজন আগে থেকেই চতরা খোকার বাজার ক্যানেলে লাশ সৎকার করত। সেই স্থানের অধিকাংশ জায়গা দখল করে রাখেন ফরমান আলী।
স্থানীয়রা বলছেন, চতরা বাজারে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ফরমান আলী আগে থেকেই ধনী ও স্বাবলম্বী ব্যাক্তি হলেও ভুমিহীন সেজে সরকারের কাছ থেকে ৯ শতক জমি বন্দেবাস্ত নেয় কিন্তু রহস্যজনক কারনে তিনি স্থানীয় হিন্দুদের শ্মশান ও ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রায় ২০শতক জমি জোরপূর্বক দখল করে রাখেন।
এরআগে বিভিন্ন সময় জমিটি উদ্ধারের জন্য গেলে ফরমান আলী কাউকে সীমানা নির্ধারণ করতে দেয়নি। তারা আরও অভিযোগ করে বলেন, ফরমান আলীর কারনে এক মৌজার প্রিন্ট পর্চার কাজ অফিসে ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে। জমির ম্যাপ সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত প্রিন্ট পর্চার কাজ করতে পারছে না জরিপ অধিদপ্তর। যে কারনে উপজেচলার সব প্রায় সব মৌজায় আরএস খতিয়ান হলেও ইকলিমপুর মৌজার ভ‚মির মালিকগণ আরএস খতিয়ান সংগ্রহ করতে পারেনি।
চতরা বিট কর্মকর্তা এসআই আহসান হাবিব বলেন, ‘এসিল্যান্ড স্যার ঘর সরানোর জন্য এক মাসের সময় দিয়েছে। বিষয়টি আমাকে মৌখিকভাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। আমি সেই মোতাবেক দখলদারকে জায়গা খালি করতে বলেছি’।
এ বিষয়ে পীরগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তানভীর আহমেদ বলেন, ‘আমরা ইকলিমপুর মৌজার আরএস খতিয়ানের কাজ করতে পারছিনা। কর্তৃপক্ষ উক্ত মৌজার খতিয়ানের কাজ সম্পন্ন করতে মাঠ পর্যায়ে গিয়ে সীমানা নির্ধারণ করে দিয়েছি’। তিনি আরো জানান, ‘অবৈধ ভোগদখলকারীকে স্থাপনা সরাতে এক মাসের সময় দেওয়া হয়েছে। যদি সময়ের মধ্যে অবৈধ স্থাপনা না সরায় তাহলে কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেবে’।
মোঃ আকতারুজ্জামান রানা.পীরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি