ডাঃ শের আলী মর্তুজার ভুল অপারেশনে দুই যুবকের মৃত্যু

অফিস ডেস্ক
প্রতিবেদন প্রকাশ: ১০ নভেম্বার ২০২৫ | সময়ঃ ০৪:০৬
photo

মোকছেদুল মমিন মোয়াজ্জেম,হিলি (দিনাজপুর) প্রতিবেদক:-দিনাজপুরের বিরামপুর ও নবাবগঞ্জে অবস্থিত দুটি অনুমোদনহীন ক্লিনিক ও হাসপাতালে কান, নাক ও গলার ডাঃ মোঃ শের আলী মর্তুজার ভুল অপারেশনে দুই যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। 

 

পরপর দুটি মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে দুই পরিবারে, আর উঠেছে চিকিৎসার নাম করে অবহেলা ও অনিয়মের অভিযোগ।

 

শনিবার (৮ নভেম্বর) রাতে বিরামপুরের মা ও শিশু জেনারেল হসপিটালে ১৭ বছরের শফিকুল ইসলামের টনসিল অপারেশনের পর অবস্থার অবনতি ঘটে। পরিবারের অভিযোগ অপারেশনের পরপরই শফিকুলের রক্তক্ষরণ শুরু হয়। চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে দ্রুত রংপুরে নেওয়া হলে পাঁচ ব্যাগ রক্ত দেওয়ার পর কিছুক্ষণের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়।

 

মৃত শফিকুলের বড়ভাই আব্দুল আজিজ বলেন, ডাক্তারের ভুল অপারেশন আর অবহেলাতেই আমার ভাই মারা গেছে। আমি বিচার চাই, ডাক্তারের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।

 

এর আগে ২৯ অক্টোবর নবাবগঞ্জের ভাদুরিয়ায় রেনেসাঁ ক্লিনিক এন্ড হাসপাতালে ৩১ বছরের মমিনুল ইসলাম লাবুর টনসিল অপারেশন করা হয়। অপারেশনের পর লাবু অচেতন থাকায় তাকে দিনাজপুরে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।

 

লাবুর বাবা আফজাল হোসেন বলেন, দিনাজপুরে নেওয়ার পথে বিরামপুর রেলগেটে মোটরসাইকেল নেওয়ার অজুহাতে ডাক্তার শের আলী মর্তুজা নেমে পালিয়ে যায়। পরে দিনাজপুর হাসপাতালে পৌঁছালে ডাক্তাররা জানান, লাবুর মৃত্যু হয়েছে। তারা আরও বলেন, অপারেশনের সময় ছেলের শ্বাসনালী কেটে গেছে।

 

বিরামপুরের মা ও শিশু জেনারেল হসপিটালের ম্যানেজার হুমায়ুন জানান, ডাঃ শের আলী মর্তুজা তাদের অপারেশন থিয়েটার ভাড়া নিয়ে দুই রোগীর টনসিল অপারেশন করেন। পরে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে রংপুরে পাঠানো হয় এবং রাতে তার মৃত্যুর খবর আসে।

 

অন্যদিকে ভাদুরিয়ার রেনেসাঁ ক্লিনিক এন্ড হাসপাতালের মালিক জোবায়ের আহমেদ কাবা দাবি করেন, ২৯ অক্টোবর আমাদের এখানে কোন অপারেশন হয়নি। ডাঃ মর্তুজা তার চেম্বারে একজন রোগী এনেছিলেন, রোগীটি সম্ভবত স্ট্রোক করেছে।

 

ডাঃ শের আলী মর্তুজার বক্তব্য জানতে তার বিরামপুর কলাবাগানস্থ চেম্বারে গেলে দেখা যায় চেম্বারে তালা ঝুলছে। তার মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলে এক নারী ফোন রিসিভ করে জানান, স্যার নেই, ফোন রেখে স্যার ঢাকায় গেছেন, এরপর ফোনটি কেটে দেন।

 

বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোঃ লুৎফর রহমান বলেন, মা ও শিশু জেনারেল হসপিটালটি অনুমোদনবিহীন। এর আগে তাদের লিখিতভাবে জানিয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি, ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুজহাত তাসনীম আওন বলেন, বিষয়টি তদন্তাধীন। তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শেয়ার করুন