সোমবার, ১৬ জানুয়ারী, ২০২৩
17 Dec 2024 04:12 am
রাশেদুল ইসলাম আপেল, নীলফামারীঃ নীলফামারীর ডোমার উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দলিল লেখক সমিতির নামে বছরে দেড় কোটি টাকা চাঁদা হাতানোর অভিযোগ উঠেছে। গত বছরের এক জানুয়ারী থেকে ৩১ডিসেস্বের পর্যন্ত উক্ত অফিসে তিন হাজার সাতশত ৫৮টি দলিল রেজিস্ট্রি সম্পাদন হয়েছে। দলিল গ্রহীতাদের অভিযোগ অনুযায়ী দলিল লেখক সমিতির নামে চাঁদা নেওয়ার পরিমান দাঁড়ায় মোট এক কোটি ৫০লক্ষ ৩২হাজার টাকা । তবে দলিল লেখক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চাঁদা নেওয়ার বিষয়টি অস্বিকার করেন। লেখক সমিতি চাঁদা তারা নিতে পারেন, এখানে আমার সংশ্লিষ্টতা নেই বলে জানান দায়িত্বরত সাব-রেজিস্ট্রি মাহফুজুর রহমান। ভুক্তভোগী দলিল গ্রহীতা উপজেলার বোড়াগাড়ী ইউনিয়নের নয়ানী বাগডোকড়া খামাতপাড়া এলাকার কেশব চন্দ্র রায় অভিযোগ করে বলেন, আমি দুই শতক জমি রেজিস্ট্রি করেছি। রেজিস্ট্রি বাবদ আমার কাছে দুইহাজার পাঁচশত টাকা নিয়েছে। আর দলিল লেখক সমিতির চাঁদা বাবাদ চার হাজার টাকা নিয়েছে। এছাড়াও অফিস খরচ বাবদ এক হাজার পাঁচশত টাকা নিয়েছে তারা। আমার দুই শতক জমি রেজিস্ট্রি করতে মোট আট হাজার টাকা নিয়েছে দলিল লেখকরা। একই এলাকার হরিপদ রায় ও হরি কিশোর রায়ও সমিতির নামে দলিল প্রতি চার হাজার করে টাকা দলিল লেখকদের দিয়েছেন বলে সাংবাদিকদের জানান।
সোনারায় ইউনিয়নের শমছের হাজী জানায়, আমরা জমি রেজিস্ট্রি করেছি। রেজিস্ট্রি খরচ ছাড়াও আমাদের কাছে সমিতির নামে চার হাজার টাকা নিয়েছে। ওই টাকা নাকি সমিতির সবাই ভাগ করে নেয়। চিকনমাটি এলাকার মো. মোবারক হোসেন জানান, আমি সাড়ে ৪২শতক জমি রেজিস্ট্রি করেছি। আমার কাছে সবমিলে ৬৫ হাজার টাকা খচর নিয়েছে দলিল লেখক। সোনাহার এলাকার মো. সুমন ইসলাম জানান, সমিতির নামে চার হাজার টাকা না দিলে তো আর জমি রেজিস্ট্রি হবে না। তাই সবাই বাধ্য হয়েই সেই টাকা দিচ্ছে। দলিল লেখক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চার হাজার টাকা চাঁদার বিষয়টি অস্বিকার করে জানান, এখানে নিময় মেনেই রেজিস্ট্রি হয়। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ডোমার উপজেলা শাখার সাধারন সম্পাদক গোলাম কুদ্দুস আইয়ুব জানান, এখন দ্রব্য মূল্যের উর্ধ্বগতিসহ বিভিন্ন সমস্যায় পড়েছে সাধারন মানুষ। আর কেউ জমি কিনলে দলিল লেখক সমিতির নামে চার হাজার টাকা চাঁদা, এটা মেনে নেওয়া যায় না। দ্রুত এই চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও দলিল রেজিস্ট্রির নামে চাঁদা বন্ধের দাবী করেন তিনি। ডোমার সাব-রেজিস্টার মাহফুজুর রহমান জানান, দলিল লেখকরা বাইরে অতিরিক্ত টাকা নিতে পারে। এটা আমার দেখার বিষয় না।