সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
10 Feb 2025 08:13 pm
![]() |
পীরগঞ্জ(রংপুর) প্রতিনিধিঃ- রংপুরের পীরগঞ্জের বড়বিলার ¯েøাইজ গেট এলাকায় আখিরা নদীর দু’পাড়ে দৃশ্যমান দৃষ্টিনন্দন, শোভাবর্ধন সহ ও পর্যটকদের কাছে আকর্ষনীয় করতোয়া নদীতে নামতে নদীর দু’পাড়ে সিঁড়ি, বিশ্রামে বেঞ্জ, ওয়াক ওয়ে, বৃক্ষরোপন সহ পাড় ও ঢালে বøক বসানোসহ কয়েক কোটি টাকার নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।
হযরত শাহ ইসমাইল গাজী (রহ:) কে কেন্দ্র করেই মুলত বড়বিলার পরিচিতি। সেই পরিচিতির আলোকে প্রকৃতি প্রেমিকসহ পর্যটকদের ভীড় দিনে দিনে বেড়েই চলছে।পাউবো’র তথ্যমতে, রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার নদীতীর সংরক্ষণ, ছোট নদী, খাল-বিল পুণঃখনন ও জলাবদ্ধতা নিরসনে (১ম সংশোধিত) প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) রংপুরের নির্বাহী প্রকৌশলীর বাস্তবায়নে উপজেলা সদরের থানা মোড় থেকে বড়বিলা পর্যন্ত আঁখিরা নদীতে ৬টি প্যাকেজে প্রকল্প গ্রহন করা হয়। ওই প্রকল্পে এস্টিমেটে (প্রাককলন) নদী তীর সংরক্ষণ ১৪.৪৩ কিলোমিটার।
এতে বøকের সাইজ ও সংখ্যা ৪০*৪০*৪০ সেন্টিমিটারে ৩ লাখ ৫০ হাজার ৯শ’৫৩ টি, ৩৫*৩৫*৩৫* সেন্টিমিটারে ৪ লাখ ৯৬ হাজার ৪৯টি, ৪০*৪০*২০ সেন্টিমিটারে ৩ লাখ ৬৮ হাজার ৫শ’১টি, ৪০*৪০*১৫*সেন্টিমিটারে ৫ লাখ ৫৯ হাজার ৮শ’৫৭টি, ১শ’৭৫ কেজির জিও বস্তা ১ লাখ ২২ হাজার ৩শ’৯৪টি, স্যান্ড সিমেন্ট বস্তা ১ লাখ ৮০ হাজার ১শ’৮০টি, নদী/খাল পূণঃখনন ৩৭.৮৬২কিলোমিটার যেখানে মাটির কাজ ৭ লাখ ৩২ হাজার ৭শ’৩০.৩০ঘন মিটার, ১টি চর অপসারণ ০.৩৫১কিলো মিটার যেখানে মাটির কাজ ৫৫ হাজার ৯শ’৬৭.১৬ ঘণমিটার, ২টি কম্বাইন্ড রেগুলেটরসহ ৬ হাজার ৭শ’৭৫টি বৃক্ষ রোপন। নদী তীর সংরক্ষণ ৩২টি, নদী/খাল পুণঃখনন ৫টি, চর অপসারণ ১টি, কম্বাইন্ড রেগুলেটর ২টি, বনায়ন ১টিসহ ৪১টি প্যাকেজ সংখ্যা রয়েছে। এতে প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১৯ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।
পাউবো কর্তৃপক্ষ জানায়, উপজেলা সদরের থানা মোড় থেকে বড়বিলা পর্যন্ত আঁখিরা নদীতে গুড ম্যান, ভিশন ও গুণ বাবু নামে পৃথক ৩টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। প্রত্যোকে ২টি করে পৃথক পৃথক প্যাকেজে নদীর দু’দিকের দু’পাড় ও ঢালে ২ কিলোমিটার করে খননসহ বøক বসানোর কাজ করছে।
এরমধ্যে বড়বিলের বিল সংলগ্ন এলাকা যেখানে ¯েøাইজ গেট রয়েছে সেখান থেকে পুর্বদিকে গুড ম্যান নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বাড়তি কাজ হিসেবে নদীর দু’পাড়ে নদীতে নামার ২টি করে ৪টি সিঁড়ি, বিশ্রামে ৫টি করে ১০টি বেঞ্জ, ৩০০ মিটার করে ৬০০ মিটার ওয়াক ওয়ে সহ বনায়নে ৬ হাজার ৭শ’ ৭৫টি বৃক্ষরোপন এস্টিমেট (প্রাককলন) রয়েছে। ঠিকাদারদের দলীয় লোক পরিচয় দিয়ে সাবেক কাউন্সিলর ও আ’লীগ নেতারা তদারকির পাশাপাশি নি¤œমানের সামগ্রী সরবরাহ করে আসছে। এমনকি অভিযোগকারীদের হুমকি-ধামকি দেয়া হতো। প্রকল্পের সাইটে মিডিয়াকর্মীদের উপস্থিতি ঘটলে তাদেরও সংবাদ প্রচারে হুমকি-ধামকি দেয়া হতো। বর্তমান সময়েও অনিয়মসহ নি¤œমানের সামগ্রী ব্যবহৃতে সাংবাদিকদের একের পর এক অভিযোগ দিতে থাকেন। তবে এখনও ভবিষ্যৎ ক্ষতির আশংকায় নাম প্রকাশ না করতে অনুরোধ জানান তারা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নদীর দক্ষিণ পাড়ে নদীতে নামার সিঁড়ি ঢালাইয়ের কাজ চলছে। মরাপাথর, সিংগেলস বা চকলেট পাথর সহ ময়লা আর্বজনা মিশ্রিত স্থানীয় উন্নত মানের ভিট বালু দিয়ে ঢালাইয়ের কাজ চলছে। পাউবো’র এসও ইমরান উপস্থিত না থাকলেও ওয়ার্ক এসিস্টেন্ট নাসির আহম্মেদ দাড়িয়ে আছেন। চোখের সামনে নি¤œমান সামগ্রি ব্যবহৃত হলেও এদিকে তার আগ্রহ নেই।
কথা হয় কয়েকজন নির্মাণ শ্রমিকের সাথে, পেটের দায়ে প্রচন্ড ঠান্ডা উপেক্ষা করে সকাল ৬টার কাজ শুরু করি। ইতোমধ্য একটি সিঁড়ি ঢালাই সম্পন্ন হয়েছে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে জানান, অফিসের স্যাররা দুপুরের পর আসে, কোনদিন আসে, কোনদিন আসে না।
রোববার সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের আব্দুল মান্নান ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি পাথর ও বালু সম্পর্কে সদুত্তোর না দিয়ে মুঠোফোনে জনৈক ব্যক্তিকে সাংবাদিকের উপস্থিতির কথা জানান।কিছু সময় পরই হাজির হন পৌর যুবদলের জনৈক নেতা। যুবদল নেতার উপস্থিতিতে আব্দুল মান্নান সাংবাদিকদের উপরে চড়াও হয়।
এদিকে যুবদল নেতা ঠিকাদারদের দলীয় লোক হিসেবে উপস্থাপন করে হাইকমান্ডের ফোন আসছে বলেও জানান। মুঠোফোনে বাপাউবো রংপুর পওর বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলামকে ঘটনা জানালে, কাজ বন্ধ রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি এবং নিজে সরেজমিনে পরিদর্শন করবো বলে জানান তিনি। অন্যদিকে এসডিও আখিরুজ্জামান মুঠোফোনে ওই কাজের তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করে বলেন, রংপুর অফিসে আসেন। পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন- আমি কি আপনাদের চাকুরি করি? পরে তিনি জানান সাইট আপাতত বন্ধ আছে, পরিদর্শণ পুর্বক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এলজিইডি ঠিকাদার কেএম ফিরোজ রব্বানী জানান, চকলেট বা সিংগেলস্ পাথরে সিমেন্ট, বালু এমনটি বিটুমিনও ধরবে না।তাই এই পাথর ঢালাই কাজে ব্যবহৃতে বিধান নেই, কবে বøক তৈরীতে ব্যবহৃত হয়।৮দিন ধরে প্রকল্পের নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে।পাউবো’র উর্দ্ধতণ কর্মকর্তারা এখনও ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেনি।ইতোমধ্য ঢালাইয়ে ব্যবহৃত স্তুপ করা চকলেট বা সিংগেলস্্ পাথর অন্যত্র সরানো হয়েছে।
এসকল অভিযোগের প্রেক্ষিতে বাপাউবো রংপুর পওর বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, আপাতত সাইট বন্ধ রয়েছে, পরিদর্শনের পর যথাযথ ব্যবস্থা।
মোঃ আকতারুজ্জামান রানা,পীরগঞ্জ,রংপুর