শুক্রবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৩
25 Nov 2024 12:07 am
জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন থেকে নদী দখলদারের নাম মুছে দেওয়া এবং নদীর সংখ্যা কমানোর প্রতিবাদ জানিয়ে সব নদী দখলমুক্ত করে দখলদারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন নদী ও প্রাণ-প্রকৃতি সুরক্ষা সামাজিক সংগঠন ‘নোঙর বাংলাদেশ ট্রাস্ট’।
শুক্রবার (১০ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে নাগরিক সেমিনারে এসব কথা বলেন বক্তারা।
সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রাণ-প্রকৃতি-পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষা আন্দোলন সংগঠক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, প্রাণ-প্রকৃতি-পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষা আন্দোলন সংগঠক। তিনি বলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বারবার নদীর খাল দূষণ ও দখলের কথা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হলেও সেভাবে কাজ করছে না, দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিক ধারাবাহিকতা রক্ষায় নদী দখল দূষণ হচ্ছে, একদিকে জিডিপি বাড়তি দেখা গেল অন্যদিকে নদীর দখল দূষণের ফলে নদীগুলোকে হারিয়ে ফেলছি, নদীকে আমরা অনেকেই মুনাফা অর্জনকারী স্থান হিসেবে দেখি, নদী আমাদের অস্তিত্বের বিষয় যেভাবেই হোক নদী রক্ষা করতে হবে।
নোঙর বাংলাদেশ ট্রাস্ট চেয়ারম্যান সুমন শামস বলেন, ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব সড়কে ‘দেশের সকল নদী কে জীবন্ত সত্তা ঘোষণা করো’ দাবিতে মানববন্ধন পালন করে নদী ও প্রাণ প্রকৃতি সুরক্ষা সামাজিক সংগঠন নোঙর। এর পর ২ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে একই দাবিতে বুড়িগঙ্গা নদীতে ভাসমান সভার আয়োজন করে সংগঠনটি। এরপর ২০১৯ সালের ৩ ফেব্রুয়ারী বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী এবং বিচাপতি মো. আশরাফুল কামালের স্বাক্ষরে মহামান্য হাইকোর্ট দেশের সকল নদীকে জীবন্ত সত্তা ঘোষণা করে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনকে এদেশের নদ-নদী হাও-বাওর খাল-বিল ইত্যাদির অভিভাবক হিসেবে আইনি মর্যাদা প্রদান করেছেন। জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন তার কাজ শুরু করেছে ২০১৩ সাল থেকে। অথচ বিস্ময়কর ব্যাপার হলো নদ-নদীর সংজ্ঞা নির্ধারণে কমিশন সময় নিয়েছে দীর্ঘ দশ বছর।
চলতি বছরের (২০২৩) সেপ্টেম্বর মাসে কমিশন নদ-নদীর যে সংজ্ঞা উপস্থাপন করেছে সেটি অসম্পূর্ণ। সব থেকে দুর্ভাবনার বিষয় হচ্ছে একই সময়ে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন তড়িঘড়ি করে বাংলাদেশের নদ-নদীর সংখ্যা ১০০৮ টি নির্ধারণ পূর্বক গ্রন্থাকারে প্রকাশ করেছে। বিষয়টি নিয়ে দেশব্যাপী বিতর্কের ঝড় উঠেছে কারণ কমিশন কর্তৃক প্রদত্ত নদ-নদীর সংখ্যার চেয়ে আরও প্রায় ৬০০ এর বেশী নদ-নদীর অস্তিত্ব এদেশে রয়েছে।
২০১৮ সালের ৮ ডিসেম্বর নদী ও প্রাণ প্রকৃতি সুরক্ষা সামাজিক সংগঠন নোঙর বাংলাদেশ ‘সারা দেশের নদীখেকোদের সরকারি তালিকা চাই’ শ্লোগানে জাতীয় প্রেসক্লাব সড়কে মানববন্ধনে দাবি উঠলে ২০১৯ সালে দেশের ৬৪ জেলায় ৪৮ নদীর সমীক্ষায় ৫৭ হাজার ৩৯০ জন দখল-দূষণকারীদের নাম প্রকাশ করার উদ্দ্যোগ গ্রহণ করে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের ততকালীণ চেয়ারম্যন ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার। তার মধ্যে মোট ১৬ হাজার ৫৯০টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। এরপর ২০২০ সালে আবার দখল-দূষণকারীদের সংখ্য বেড়ে দাঁড়ায় ৬৩ হাজার ২৪৯ জন।
ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী ২০২৩ সালে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনে চেয়ারম্যান হিসাবে দ্বায়িত্ব নিয়ে বলেন,‘পূর্বের সমীক্ষায় ভূল আছে তাই নতুন করে সমীক্ষা চালিয়ে সঠিক তালিকা প্রকাশ করা হবে’! তাই আবার তিন বছর মেয়াদী ৩০ কোটি টাকার ৪৮ নদী সমীক্ষার কাজ শুরু করলে তার মেয়াদ বাড়িয়ে ৫ বছরের প্রকল্প করা হয়। যদিও সে তালিকা আজো প্রকাশ করেনি জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন।
১৯৪০ সালের সিএস নকশা অনুযায়ী দেশের সকল নদী দখদারদের উচ্ছেদ করতে আদালতের নিদের্শনা অমাণ্য করে ২০১৩ সালের পনি আইনে ৩৭,৩৯৬ জনকে নদী দখলদারের নামের তালিকা প্রকাশ করা যাবে না বলে জানালেন সাবেক নদী কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী। যদিও জলাধার ও পনি আইনেও ১৯৪০ সালের সিএস নকশা অনুযায়ী দেশের সকল নদী দখদারদের উচ্ছেদ করা কথা বলা হয়েছ।
প্রবন্ধ উপস্থাপক নদী গবেষক মাহবুব সিদ্দিকী বলেন, নদীমাতৃক দেশের নদ-নদীর প্রকৃত সংখ্যা অনুসন্ধান না করে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন গত ২৪ সেপ্টেম্বর ১০০৮টি নদী নির্ধারণ পূর্বক তাড়াহুড়া করে গ্রন্থাকারে প্রকাশ করে নদ-নদীর অসম্পূর্ণ সংজ্ঞা উপস্থাপন করেছে। অথচ নদীমাতৃক এদেশে আরও ৬০০ এর বেশি নদ-নদীর অস্তিত্ব এখনো রয়েছে। এছাড়াও সম্প্রতি ৩৭ হাজার ৩৯৬ নদী দখলদারের তথ্য মুছে আরও একটি বিতর্ক সৃষ্টি করেছে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন।
তারা বলেন, নদ-নদীর খোঁজে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে সরেজমিনে তথ্য সংগ্রহের কাজ করছি গত ৩০ বছর ধরে। এই কাজে এখন পর্যন্ত যে অভিজ্ঞতা লাভ করেছি তাতে