মঙ্গলবার, ০৭ মার্চ, ২০২৩
28 Nov 2024 12:45 am
একাত্তর ভশিন ডস্কেঃ- বাংলাদেশ রেলওয়ের নব নিয়োগপ্রাপ্ত পয়েন্টসম্যান আজিজুল হকের মৃত্যুর জন্য রেলপথ মন্ত্রীকে দায়ী করেছেন বাংলাদেশ রেলওয়ে পোষ্য সোসাইটির সভাপতি মোঃ মনিরুজ্জামান মনির। আজ ৭ মার্চ ২০২৩ (মঙ্গলবার) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এ দাবী করেন।
মনিরুজ্জামান মনির বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ের নব নিয়োগপ্রাপ্ত সিজিপিওয়াইস্থ নিউমুরিং সান্টিং ইয়ার্ড এর পয়েন্টসম্যান জনাব মোঃ আজিজুল হক ডিউটিরত অবস্থায় নিউমুরিং ওয়েল সাইডিং এ সিগন্যাল দিয়ে সান্টিং কাজ করাকালীন সময়ে একটি বাস সিগন্যাল অমান্য করে ট্রেন ইঞ্জিন কে আঘাত করে। এতে আজিজুল হক ঘটনাস্থলেই মারা যান। দূর্ঘটনার স্থানটি রেলওয়ের পণ্য পরিবহনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট। এর পাশেই পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েল ডিপো, চট্টগ্রাম বিমানবন্দর ও নেভাল যাওয়ার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা যা সারাক্ষণই ব্যস্ত থাকে। বেপরোয়া বাসের চালকগণ প্রায় সময় সিগনাল অমান্য করেন। এখানে অরক্ষিত লেভেল ক্রসিংয়ে কোনো গেইটম্যান নেই। বারবার রাস্তা অতিক্রম করেই সান্টিং করতে হয়। পয়েন্টম্যানগন সবসময়ই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সান্টিং কাজ করেন ও সিগনাল দিয়ে রাস্তার গাড়ি পার করান।
তিনি বলেন, এত গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থানে গেইটম্যান না থাকাই দূর্ঘটনার মূল কারণ। এর দায় কোন ভাবেই রেলপথ মন্ত্রণালয় তথা রেলপথ মন্ত্রী এড়াতে পারেন না। সারাদেশেই এ ধরনের অসংখ্য অরক্ষিত রেলক্রসিং রয়েছে। এতে রেলের শ্রমিক—কর্মচারীসহ সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনায় পড়ছেন। বারবার বিভিন্ন মহলের দাবির পরও রেলপথ মন্ত্রণালয় এতে কর্ণপাত করেনি। প্রতিটি দূর্ঘটনার পর লোক দেখানো কিছু ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা এলেও কার্যকর কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয় না। নিরাপদ কর্ম পরিবেশ না থাকার ফলেই একের পর এক দুর্ঘটনায় রেলওয়ের শ্রমিক কর্মচারীরা কর্মক্ষেত্রে মৃত্যুবরণ করছেন অথচ তাদের অসহায় পরিবারের কান্না রেলভবনের দেয়াল ভেদ করে কর্মকর্তাদের কানে পৌঁছাতে পারছে না। এ অচলাবস্থা কোন অবস্থাতেই চলতে দেয়া যায় না।
রেলওয়ে পোষ্য সোসাইটির সভাপতি মনিরুজ্জামান মনির এ মৃত্যুকে অবহেলাজনিত মৃত্যু হিসেবে আখ্যায়িত করে দায়ীদের বিচার দাবি করেন এবং রেলওয়েতে নিরাপদ কর্ম পরিবেশ সৃষ্টিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম সিজিপিওয়াইস্থ নিউমুরিং সান্টিং এর রেলওয়ের পয়েন্টম্যান (ট্রেন রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তি) আজিজুল হক (২৮) ডিউটিরত অবস্থায় দূর্ঘটনার শিকার হয়ে গতকাল ঘটনাস্থলে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি চাকরিতে যোগ দিয়েছেন এক মাস হলো। নতুন চাকরির বেতন কয়েকদিন পরেই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই ঘাতক বাস কেড়ে নিলো আজিজুল হকের প্রাণ। সোমবার রাত সাড়ে ৮.৩০ মিনিটের দিকে ইপিজেড থানার নিউমুরিং এলাকায় তেলবাহী ট্রেনকে তার নির্দিষ্ট পথে যাওয়ার জন্য দিক নির্দেশনা দিচ্ছিলেন। এর মধ্যে দ্রুত গতির একটি বাস ট্রেনের ইঞ্জিনে ধাক্কা দেয়। তার আগে চাপা দিয়ে যায় আজিজুল হককে। এই ঘটনায় আজিজুল হক ছাড়াও বাসের চালক আসাদুজ্জামান এবং সহকারী মিটন কান্তি দে নিহত হন।
,