মঙ্গলবার, ২৪ জানুয়ারী, ২০২৩
26 Nov 2024 04:50 am
৭১ভিশন ডেস্ক:- তুর্কি দূতাবাসের সামনে ইসলাম ধর্মের পবিত্র গ্রন্থ আল-কোরআন পোড়ানোর ঘটনার পর ন্যাটোর সদস্যপদ পেতে সুইডেনকে তুরস্ক আর সমর্থন দেবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগান।
সোমবার (২৩ জানুয়ারি) মন্ত্রিসভার এক বৈঠকের পর তিনি এ কথা বলেন।
এরদোগান বলেন, যারা এ ধরণের ধর্মীয় অবমাননা মেনে নিতে পারে, তুরস্কের সমর্থন তাদের প্রত্যাশা করা উচিত নয়।
সুইডিশ রাজনৈতিক দলের এসব কর্মকাণ্ডকে ‘ব্লাসফেমি’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন এরদোগান। তিনি বলেছেন, ধর্মীয় অবমাননাকে বাক স্বাধীনতার কথা বলে সমর্থনের সুযোগ নেই।
ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার ন্যাটোতে যোগদানের আবেদন করে ফিনল্যান্ড ও সুইডেন। কিন্তু স্টোকহোমের সাম্প্রতিক মুসলিম বিদ্বেষী ওই বিক্ষোভ সামরিক জোটটিতে সুইডেনের সদস্যপদ পাওয়া নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি করেছে।
তুরস্ক যেহেতু আগে থেকেই ন্যাটোর সদস্য, সেহেতু এটি অন্য দেশকে এ সামরিক জোটে যোগদানে বাধা দেওয়ার এখতিয়ার রাখে।
কোরআন পোড়ানোর ঘটনাকে অত্যন্ত নিন্দনীয় ও অগ্রহণযোগ্য দাবি করে এরদোগান বলেন, কোনো ধর্মকে অপমান করার অধিকার কারও নেই। আর আমরা সবসময় সততার সঙ্গে কথা বলি। আমাদের স্পষ্ট বক্তব্য, যখন কেউ আমাদের অসম্মান করবে, তখন আমরাও তাদের জন্য উপযুক্ত জায়গা করে রাখবো।
এদিকে, তুরস্কের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হুলুসি আকর জানিয়েছেন, সুইডিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী পাল জনসনের সফর বাতিল করতে বলেছে তুরস্ক। আগামী সপ্তাহেই আঙ্কারায় সফর করতে চেয়েছিলেন জনসন। তার এ সফরের বিষয়টি আশা জাগিয়েছিল যে, সুইডেনের ন্যাটোতে যোগদানের বিষয়ে আপত্তি কমাতে পারে তুরস্ক। কিন্তু এখন পরিস্থিতি উলটো আরো জটিল হয়ে উঠেছে।
শনিবার (২১ জানুয়ারি) পবিত্র কোরআন পোড়ানোর প্রায় দুই সপ্তাহ আগে স্টোকহোমের তুরস্ক দূতাবাসের সামনে এরদোগানের কুশপুত্তলিকা পোড়ান সুইডেনের কিছু কুর্দি বিক্ষোভকারী। পরে উগ্র ডানপন্থি রাজনৈতিক দল হার্ড লাইনের বিতর্কিত নেতা রাসমুস পালুদান পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যে দাঁড়িয়ে কোরআনের একটি কপিতে আগুন ধরিয়ে দেন।
এর আগে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে ইসলাম ধর্ম ও সুইডেনের অভিবাসন ব্যবস্থাকে আক্রমণ করে গালিগালাজপূর্ণ বক্তব্য দেন পালুদান। এসময় প্রায় ১০০ জন সমর্থক তার পাশে ছিলেন।
জানা যায়, দূতাবাসের সামনে কোনো ধরনের বিক্ষোভ আয়োজন করতে না দেওয়ার জন্য সুইডেনের কাছে আগে থেকেই একাধিকবার অনুরোধ জানিয়েছিলেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। কিন্তু সে অনুরোধ রাখতে ব্যর্থ হয় সুইডেন। যদিও পবিত্র কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে সুইডেন সরকার।
সুইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তোবিয়াস বিলসস্ট্রোম বলেন, এটি নিঃসন্দেহে একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা। তবে আমরা ব্যক্তি ও বাকস্বাধীনতার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে থাকি। কিন্তু শনিবার যে ঘটনা ঘটেছে, সেটিকে সুইডেন সরকার ও আমি কোনোভাবেই সমর্থন করি না।
বিলসস্টোম আরো বলেন, সোমবার এরদোগানের মন্তব্যের জবাব দিতে তিনি আসলে কী বলেছেন তা সঠিকভাবে বোঝার চেষ্টা করি। ন্যাটোর সদস্যপদ নিয়ে সুইডেন, ফিনল্যান্ড ও তুরস্কের মধ্যে যে চুক্তি রয়েছে, সেটিকে আমরা অবশ্যই সম্মান করবো।
সূত্র: বিবিসি