মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই, ২০২৫
29 Jul 2025 02:23 pm
![]() |
বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে" বাংলা প্রবাদ, এই অনিন্দ্যসুন্দর প্রবাদটি শিশুর নিরাপত্তা, মাতৃত্বের আশ্রয় এবং একটি স্বাভাবিক, শান্তিপূর্ণ সমাজের প্রতিচ্ছবি তুলে ধরে। এই প্রতিচ্ছবির বাস্তবায়নে একটি রাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় ভূমিকা হলো—নাগরিকদের নিরাপদ, সাশ্রয়ী, সম্মানজনক যাতায়াত ব্যবস্থার নিশ্চয়তা দেওয়া। সেই দায়িত্ব নিয়েই গঠিত হয়েছিল বাংলাদেশ রেলওয়ে—দেশের ইতিহাস, প্রকৌশল, সংস্কৃতি, শ্রম ও জাতির সামষ্টিক স্বপ্নের প্রতীক।
কিন্তু সেই স্বপ্ন আজ এক নির্মম বাস্তবতায় আছড়ে পড়েছে। আর এই পতনের পেছনে প্রধান ভূমিকা রেখেছে একটি গভীর কিন্তু অঘোষিত আমলাতান্ত্রিক দখলদারি। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অজস্র অনভিজ্ঞ হস্তক্ষেপে আজ বাংলাদেশ রেলওয়ে এক অকার্যকর, নৈরাজ্যগ্রস্ত, অবিন্যস্ত প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।
রেলওয়ে: একটি স্বতন্ত্র কারিগরি প্রতিষ্ঠান-
বাংলাদেশ রেলওয়ে কোনো সাধারণ সরকারি বিভাগ নয়। এটি একটি স্বতন্ত্র কারিগরি প্রতিষ্ঠান, যার প্রতিটি কার্যক্রম—ইঞ্জিনিয়ারিং ডিজাইন, অপারেশন, সিগনালিং, ট্র্যাক মেইনটেন্যান্স, নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি—উচ্চ পর্যায়ের প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার উপর নির্ভরশীল। সেখানকার কর্মকর্তারা প্রকৌশলী, অপারেশন স্পেশালিস্ট, লোকোমাস্টার, সিগন্যাল এক্সপার্ট বা নিরাপত্তা কন্ট্রোলার—যারা বছরের পর বছর মাঠ পর্যায়ে কাজ করে এই জ্ঞান অর্জন করেন।
কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে তা একটি আমলাতান্ত্রিক শৃঙ্খলের অধীনে এনে ফেলা হয়েছে, যেখানে প্রকৌশলী নয়, একটি সাধারণ প্রশাসনিক ক্যাডার রেলওয়ের নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি এবং এমনকি নীতিনির্ধারণেও একচ্ছত্র ক্ষমতা ভোগ করছে।
নিয়োগ–পদোন্নতি–বদলিতে আমলাতান্ত্রিক অপশাসন:-
রেলওয়ের নিয়োগ ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত মানদণ্ড, মাঠ-অভিজ্ঞতা, নিরাপত্তা প্রশিক্ষণ, ওয়ার্কিং আওয়ার, লোকোমোটিভ দক্ষতা ইত্যাদি বিবেচনায় নেওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে তা হয় না। বর্তমান প্রেক্ষাপটে:
• নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রণয়ন করছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, যারা রেলওয়ের প্রকৌশল কাঠামো সম্পর্কে ন্যূনতম ধারণাও রাখে না।
• পদোন্নতির যোগ্যতা নির্ধারণে মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত রেলওয়ের মাঠ পর্যায়ের বাস্তবতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
• বদলির জন্য প্রশাসনিক সুপারিশ ও প্রভাবশালী হস্তক্ষেপ এখন সর্বজনবিদিত। একটি স্টেশন মাস্টার কোথায় যাবে, কোন গার্ড কবে বদলি হবে—এ পর্যন্ত মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত দিচ্ছে।
এই ভয়াবহ অবস্থার ফলে যোগ্য ব্যক্তি বঞ্চিত হচ্ছেন, এবং পুরো অপারেশন কাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
পোষ্য কোটা বিলুপ্তির প্রস্তাব:- ইতিহাস-ঐতিহ্যের অবমাননা-
রেলওয়ের অন্যতম মানবিক ও ন্যায্য নীতি ছিল “ নিয়োগে পোষ্য কোটা”—অর্থাৎ কর্মরত বা অবসরপ্রাপ্ত বা মৃত রেলওয়ে কর্মচারীদের সন্তানদের চাকরিতে অগ্রাধিকার। এটি শুধু মানবিক না, এটি ছিল অভিজ্ঞতার ধারাবাহিকতা রক্ষার প্রথাগত উপায়। কারণ, একটি পোষ্য সন্তান ছোটবেলা থেকে রেলজীবনের বাস্তবতা বোঝে—সে ট্রেন অপারেশন, স্টেশন সংস্কৃতি, ইঞ্জিন টার্নিং, নিরাপত্তা সংকেত এসবের মধ্যে বেড়ে ওঠে।
কিন্তু জনপ্রশাসনের তথাকথিত “মেধাভিত্তিক নিয়োগ” নামে এই কোটা অঘোষিত বাতিল করে দেওয়া হয়েছে এবং সংশোনাধীন নিয়োগ বিধিমালায় বিলুপ্তির প্রস্তাব করা হয়েছে, যা রেলওয়ের হাজার হাজার পোষ্য সন্তানকে বঞ্চিত করার ষড়যন্ত্র, এক গভীর সামাজিক ও প্রশাসনিক অবিচার রচনা করেছে।
মাঠ-অভিজ্ঞতা বর্জনের পরিণাম:-অপারেশনাল বিপর্যয়-
রেলওয়ে পরিচালনায় মাঠ পর্যায়ের অভিজ্ঞতা এক অমূল্য সম্পদ। একটি লোকো মাস্টার, একটি গার্ড, একটি স্টেশন মাস্টার, একটি খালাসি ও ওয়েম্যান, পোটার, টিটিই টিসি, বুকিং সহকারী বা একটি সিগন্যালম্যান—যাদের কর্মঘণ্টা দিনের পর দিন জমা হয়, তারা বাস্তবতার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। কিন্তু বর্তমানে নিয়োগ, বদলি, ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে অনভিজ্ঞ প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের কাগজে-কলমে তৈরি করা ফাইলই মুখ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে যিনি প্রকৌশল কিংবা অপারেশনে পারদর্শী, তিনি বঞ্চিত হচ্ছেন; আর যিনি রাজনীতি, তদবির বা আমলাতান্ত্রিক সুবিধায় চলে আসতে পারেন, তিনি পদ পাচ্ছেন।
এই অবস্থার পরিণতিতে ঘটছে:
• ট্রেন পরিচালনায় সময়সূচি ভেঙে পড়া,দুর্ঘটনার প্রবণতা বাড়া,সংকেত বিভ্রাট,ইঞ্জিন স্টার্টআপে বিলম্ব,সামগ্রিক যাত্রীসেবায় দুর্বলতা।
ডিজি এর কর্তৃত্ব হরণ:-একটি প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্বহীনতা-
বাংলাদেশ রেলওয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক পদ হলো মহাপরিচালক । অথচ বাস্তবে মহাপরিচালক এখন আর রেলওয়ের নিয়ন্ত্রক নন, বরং মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ব্যতীত কোনো প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। ট্রেন চালু, রুট সম্প্রসারণ, লোকবল নিয়োগ, এমনকি অফিসারদের পদোন্নতি বদলিতেও তাঁকে অপেক্ষা করতে হয় মন্ত্রণালয়ের ফাইলে স্বাক্ষরের জন্য।
এই অবস্থা রেলওয়ের নেতৃত্ব কাঠামোকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে এবং প্রতিষ্ঠানটি স্বায়ত্তশাসনহীন এক “সাবঅর্ডিনেট ইউনিট”-এ পরিণত হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের অব্যবস্থাপনা: প্রকল্প ও জনবল সংকটে রেল-
রেলওয়ের চলমান ও প্রস্তাবিত উন্নয়ন প্রকল্পগুলোতেও মন্ত্রণালয়ের একচ্ছত্র কর্তৃত্ব দেখা যায়। যেমন: ইঞ্জিন আমদানি: ডিজি বা রেলওয়ে প্রকৌশল বিভাগ নয়, বরং মন্ত্রণালয়ের আমলা ঠিক করেন কোথা থেকে, কেমন ইঞ্জিন কেনা হবে। প্রকল্প বাস্তবায়ন: রেলওয়ের প্রকৌশল বিভাগের সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও মন্ত্রণালয় প্রকল্প বাস্তবায়নকারীর ভূমিকা নিচ্ছে। নিরাপত্তা সরঞ্জাম ক্রয়: প্রয়োজন অনুযায়ী নয়, বরং আমলাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটকে সুবিধা দিতে গিয়ে অপ্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ক্রয় করা হয়।
জনবল সংকটও এই অদক্ষতার ফল। মাঠ পর্যায়ে হাজার হাজার পদ শূন্য, তবুও নিয়োগ বিলম্বিত হয়, পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস হয়, এবং যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগ প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হয়। রেলওয়ে মত বিশেষায়িত কারিগরি প্রতিষ্ঠানের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পদ পদবি সম্পর্কে অনভিজ্ঞ জনপ্রশাসন ও রেলপথ মন্ত্রনালয় এবং পিএসসি’র প্রতিনিধিত্বর কারণে চাকরি পাওয়ার পূর্বেই অর্ধেক প্রশিক্ষিত রেলওয়ে পোষ্যরা ত্রুটিপূর্ণ নিয়োগ পদ্ধতির কারণে নিয়োগ বঞ্চিত হচ্ছে। ফলে রেলওয়ে দক্ষ জনবল সংকটে পতিত হয়েছে।
ইঞ্জিন সংকট ও অপারেশনাল ব্যর্থতা:- বাংলাদেশ রেলওয়ের ট্রেন চলাচলের মূল শক্তি ইঞ্জিন। কিন্তু বর্তমানে দেখা যাচ্ছে:- অনেক ইঞ্জিন বছরের পর বছর ধরে অকেজো পড়ে আছে,মেরামতের জন্য অর্থ বরাদ্দ থাকলেও তা অনুমোদনের জটিলতায় আটকে থাকে,ট্রেন চলাচলের সময় একাধিকবার ইঞ্জিন বিকল হয়ে ট্রেন থেমে থাকে,যার ফলাফল—সাধারণ যাত্রীদের ভোগান্তি এবং রেলের প্রতি অনাস্থা বাড়ছে।
এ অবস্থায় মন্ত্রণালয় নিজেই ঘোষণা করছে ইঞ্জিন কেনা হবে—কিন্তু সেটা ডিজি বা লোকোমোটিভ বিভাগের পরিকল্পনার সঙ্গে একত্রিত নয়। অনেক সময় দেখা যায় নতুন ইঞ্জিন ট্র্যাকে চালানোই যাচ্ছে না,কারণ তা সিস্টেম-কম্প্যাটিবল নয়।
রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী:- অস্তিত্ব সংকটে--
রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী একসময় একটি শক্তিশালী বাহিনী ছিল। কিন্তু বর্তমানে:- নতুন নিয়োগ বন্ধ,প্রশিক্ষণ ব্যাহত,সরঞ্জামের অভাব,অস্ত্র, যোগাযোগ ব্যবস্থা, ইউনিফর্ম, গাড়ি—সবকিছুর সংকট।
সবচেয়ে উদ্বেগজনক হলো:—মাঠ পর্যায়ে এবং গুরুত্বপূর্ণ কাজে এই বাহিনীকে ব্যবহার না করে এখন তামাক নিয়ন্ত্রণসহ রেল সংশ্লিষ্ট নয় এমন কাজে ব্যবহারের প্রবণতা বাড়ছে, যা রেলওয়ের নিরাপত্তা, শৃঙ্খলা এবং মর্যাদাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
পোষ্যদের বঞ্চনার গভীর ক্ষত:-
বাংলাদেশ রেলওয়ের পোষ্য সন্তানরা শুধু চাকরির দাবিদার নয়, তারা রেল সংস্কৃতির ধারক ও বাহক। কিন্তু: সংশোনাধীন নিয়োগ বিধিমালা ২০২০ পোষ্য কোটা বিলুপ্তির প্রস্তাব,এরপর যে-কোনো নিয়োগ প্রক্রিয়ায় পোষ্যরা প্রাধান্য পাচ্ছে না,মন্ত্রণালয় বলছে, “মেধার ভিত্তিতে হবে”—কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, সেখানে রাজনৈতিক, আঞ্চলিক ও আর্থিক সুবিধা নির্ধারক।
ফলে বহু পোষ্য, যাদের পরিবার রেলেই জীবন দিয়েছে, আজ রেল চত্বর থেকে বিতাড়িত, বঞ্চিত।
রেলওয়ের কর্মঘণ্টা ও শ্রমনীতি লঙ্ঘন:-
রেলওয়ের একটি বড় শক্তি তার “রানিং স্টাফ”—যারা ট্রেন চালিয়ে বা মেইনটেন করে রেলকে সচল রাখেন। কিন্তু: রানিং কর্মীদের বিশ্রাম সময় মেনে চলা হয় না,তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর অতিরিক্ত কর্মঘণ্টা দেওয়ার পরও অতিরিক্ত ভাতা ঠিকমতো মেলে না,অনেক সময় বিনা প্রশিক্ষণে অপারেশনাল দায়িত্ব দেওয়া হয়,কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা নেই, এবং কাজের চাপ ভয়াবহ।
এসব কারণে রেলওয়ের দক্ষ চালক, গার্ড, অপারেটর, কন্ট্রোলার সহ তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা মনোবল হারিয়ে ফেলছেন।
দুর্নীতির চক্র এবং নিয়োগ বাণিজ্য:-
জনপ্রশাসন ও রেলপথ মন্ত্রণালয়ে এবং পিএসসি’র মাধ্যমে নিয়োগ বাণিজ্য এখন ওপেন সিক্রেট। নিয়োগ পরীক্ষার: প্রশ্নপত্র ফাঁস,বিশেষ তালিকা তৈরি,আর্থিক লেনদেন,দলীয় তদবিরে নিয়োগ।
এতটাই প্রকাশ্য যে, বহু মেধাবী তরুণ রেলওয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণই করছেন না এবং যে সমস্ত রেলওয়ে পোষ্যরা এমসিকিউ পরীক্ষায় উত্তির্ন হচ্ছে নিয়োগ দূর্নীতির কারণে তারা নিয়োগ বঞ্চিত হচ্ছে।
প্রতিষ্ঠান হিসেবে রেলের ভাঙন:- আত্মপরিচয়ের সংকট- এক সময় মহাপরিচালক ছিলেন স্বয়ং সম্পূর্ণ —তিনি সিদ্ধান্ত নিতেন, নেতৃত্ব দিতেন। এখন সেই অবস্থান পরিণত হয়েছে “কাগজপত্র ফাইল পাঠানো কর্মকর্তা”-তে পরিনত হয়েছে। তিনি জানেন কোন সিদ্ধান্ত কার্যকর, কিন্তু পারছেন না—কারণ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া কোনো নড়াচড়া সম্ভব নয়।
এটি শুধু একটি ব্যক্তির অপমান নয়, এটি একটি প্রতিষ্ঠানের আত্মমর্যাদাকে ধ্বংস করে দেওয়া।
প্রস্তাবনা: পুনর্গঠনের ১০ দফা প্রস্তাব--
১. বাংলাদেশ রেলওয়েকে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন দিতে হবে, মহাপরিচালক-কে “সচিব” মর্যাদা দিয়ে একটি আলাদা রেল বোর্ড গঠন করতে হবে
২. নিয়োগ, পদোন্নতি, বদলি মহাপরিচালক-এর নিয়ন্ত্রণে দিতে হবে, কারিগরি বোর্ডের মাধ্যমে পরীক্ষা ও নির্বাচন হবে
৩. পোষ্য কোটাকে সংবিধানসম্মত ও আইনি কাঠামোতে ফিরিয়ে আনা
৪. নিরাপত্তা বাহিনীকে আধুনিকীকরণ, অস্ত্র ও প্রযুক্তি সরবরাহ নিশ্চিত করা
৫. ইঞ্জিন ও বগির আমদানি সিদ্ধান্ত কারিগরি কমিটির হাতে দেওয়া
৬. ট্রেন চলাচলে এআই ও স্বয়ংক্রিয়তা বৃদ্ধির জন্য গবেষণা ইউনিট গঠন
৭. দুর্নীতি প্রতিরোধে স্বতন্ত্র অডিট ইউনিট চালু
৮. মাঠপর্যায়ের কর্মীদের রেস্ট, ভাতা ও নিরাপত্তা আইন বাস্তবায়ন
৯. রেলওয়ের ইতিহাস ও সংস্কৃতি সংরক্ষণের জন্য “রেল জাদুঘর” ও ট্রেনিং একাডেমি বিস্তার
১০. রেলওয়ের সব সিদ্ধান্তে প্রকৌশলীদের নেতৃত্ব ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।
রেল রক্ষা করো,দেশ রক্ষা করো”-- বাংলাদেশ রেলওয়ে শুধুমাত্র এক প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠান নয়—এটি আমাদের ইতিহাস, আত্মপরিচয়, প্রযুক্তিগত সক্ষমতা, সংস্কৃতি এবং স্বপ্নের অংশ। এটি যেন “মন্ত্রণালয়ের লেজুড়বৃত্তিক বিভাগ” না হয়, বরং নিজস্ব শক্তিতে গর্বিত এক আধুনিক প্রতিষ্ঠান হয়—এটাই জাতির প্রত্যাশা।
আজ শিশুদের কণ্ঠে যদি সত্যিই ফিরে আসে:
“বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে"
তবে সেই শীতল আশ্রয়ের অন্যতম ভিত্তি হতে হবে—নিরাপদ,স্বাধীন,কার্যকর রেল।
লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট এবং সভাপতি, বাংলাদেশ রেলওয়ে পোষ্য সোসাইটি