মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই, ২০২৫
29 Jul 2025 11:54 am
![]() |
স্টাফ রিপোর্টার:গাজায় সংঘটিত গণহত্যার বিচার দাবিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়েরের আবেদন করেছেন বরিশালের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম মুখপাত্র মারযুক আবদুল্লাহ। সোমবার (২৮ জুলাই) আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রসিকিউটর বরাবর পাঠানো আবেদনে তিনি গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরতার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ও দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচারিক পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।
আবেদনে মারযুক উল্লেখ করেন, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৫ সালের জুলাই পর্যন্ত সময়ে গাজায় ইসরায়েল যে গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করেছে, তা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও যুদ্ধ আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। তিনি জাতিসংঘ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO), বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (WFP), হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (HRW) এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের তথ্য উদ্ধৃত করে জানান, এ সময়ের মধ্যে অন্তত ৩৯ হাজার নিরীহ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে প্রায় ১৫ হাজার শিশু।
তাঁর আবেদনে আরও বলা হয়, “ইসরায়েল পরিকল্পিতভাবে খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধের সরবরাহ বন্ধ রেখে পুরো গাজাকে মৃত্যুপুরীতে পরিণত করেছে। হাসপাতাল, স্কুল, আশ্রয়কেন্দ্র—কোনো কিছুই রক্ষা পায়নি তাদের বিমান হামলা থেকে।” মারযুক আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন,
প্রতিদিন ইসরায়েলি অত্যাচারের দৃশ্য দেখে আমি কাঁদি। মা-বাবা সন্তানের লাশ বুকে জড়িয়ে কাঁদছে, আবার শিশুরা রক্তাক্ত অবস্থায় মৃত পিতা-মাতাকে খুঁজছে।এই দৃশ্য দেখে সহ্য করা যায় না। আমরা যদি একবার কল্পনা করি—ঘটনাস্থলে যদি আমরা কেউ থাকতাম, তাহলে কি চুপ করে থাকতে পারতাম?”
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত হামলায় হাজার হাজার ফিলিস্তিনি হতাহত হয়েছেন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের যুদ্ধবিরতির আহ্বান উপেক্ষা করে ইসরায়েল গাজা উপত্যকার নাগরিক, নারী ও শিশুদের ওপর নিষ্ঠুর আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে এলাকার প্রায় সব ধরনের অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে এবং ভয়াবহ খাদ্য ও চিকিৎসা সংকট সৃষ্টি হয়েছে।
উল্লেখযোগ্যভাবে,আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (ICC) ইতোমধ্যে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (ICJ) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘গণহত্যা’ সংক্রান্ত একটি মামলাও চলমান রয়েছে।
অনেকেই বলছেন-মারযুকের এই পদক্ষেপকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের পক্ষে একটি সাহসী প্রচেষ্টা হিসেবে বিবেচনা করা যায়, যা ভবিষ্যতে আরও নাগরিক আন্দোলনকে উৎসাহিত করতে পারে।