মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই, ২০২৫
25 Aug 2025 01:54 am
![]() |
পীরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি:- আবু সাঈদ বাড়িতে আসি(এসে) আগে ছোট বোন সুমিকে ডাকতো। তারপর ছোট বোনের যেটা খাইতে মন চায় সেটা হাটোত (বাজার) থেকে আবু সাঈদ কিনে নিয়ে আসি(এসে) খাওয়াতো। আবার আবু সাঈদের যেটা খাবার মন চায় সেটাও কিনে আনি দিত। আমাকেও বলতো মা তোমার কি খাইতে মন চাইছে ? আমি সেটাও কিনে নিয়ে আসবো।
আবু সাঈদ রংপুর থেকে আসলেই বাড়িতে আসি আমার সাথে কথা বলি বাজারে গিয়ে মাছ কিনে আনতো। আমি মাছ রান করে এক সাথে ভাই-বোনকে খাবার দিতাম। আজকতদিনহয়ে গেল দুই ভাই-বোনকে একসাথে খাবার খাওয়াতে পারিনা। আগে আবু সাঈদের বাপসহ আমি বাড়িতে আছিনু (ছিলাম)। আবু সাঈদ আসলে ওর দুই বোনসহ অনেক গুলো মানুষ একসাথে হছিনু (হইতাম)। সবাই আলাদা আলাদা খাইলেও আবু সাঈদ ও সুমি একসাথে খাইতো। আমি নিজ হাতে রান্না করে ওদেরকে খাওয়াইছি। ওদের খাওয়ার কথা এখনো মনে হয়।
ছোট বোন সুমিকে আবু সাঈদ অনেক বেশি আদর করতো। ছোট বোন সুমিও আবু সাঈদ ছাড়া কিছু বুঝতোনা। শেষবার যখন আবু সাঈদ বাড়িতে আসছিল (এসেছিল) তখন আবু সাঈদ ও সুমিকে মাছ রান্না করে ভাত খাওয়াইছিলাম। আমি যখন মাছ রান্না করছিলাম আবু সাঈদ তখন আমার পাশে বসে থাকি সুমির সাথে কোন যে পরীক্ষার পাশ করার গল্প করছিল। হামার বাবা আজ বাঁচি থাকলে কত দিন গল্প করলো হয়। গতকাল শনিবার বিকেলে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বাবানপুর গ্রামে আবু সাঈদের বাড়িতে আলাপচারিতায় কথাগুলো বলছিলেন আবু সাঈদের মা মনোয়ারা বেগম।
আবু সাঈদের মা মনোয়ারা বেগম আরও বলেন,আমি সাধারণ মাও।আমি সবার সাথে কথা কবার পারিনা আবু সাঈদের মাও চালাক নয়, লেখাপড়া জানেনা তাই আবু সাঈদ হামার সাথে কোন কিছ ুকতো(বলতো) না।যদি কলি (বলল) হয় তাহলে মায়ে ও ছ্যোলের(ছেলের) কথা জানলি হয়, ছ্যোলেও(ছেলেও) মায়ের কথা জানলি হয়।মাও ছ্যোলের খোঁজ নিলি হয়, ছ্যোল ও মায়ের খোঁজ নিলি হয়। ছ্যোল হামার নিজের বুদ্ধিমতো একাই গেছে। য্যায়া রক্ত দিছে,শহীদ হছে।আবু সাঈদের রক্ত যেন কেউ ভুলে না যায়।
উল্লেখ্য গত বছরের ১৬ই জুলাই বৈষম্যবিরোধী কোটাসংস্কার আন্দোলনে বেগম রোকেয়া বিশ^বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী রংপুরের পার্কের মোড়ে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়। এরপরে আন্দোলন তীব্র হয়ে ওঠে।
মোঃ আকতারুজ্জামান রানা,পীরগঞ্জ(রংপুর) প্রতিনিধি