সোমবার, ২৪ মার্চ, ২০২৫
26 Mar 2025 01:21 am
![]() |
ছাদেকুল ইসলাম রুবেল,গাইবান্ধাঃ- গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার ৭ নং পবনাপুর ঘোড়াবান্দা ও হরিনাথপুরের ব্রিজ থাকলে রাস্তা নেই এই চিত্র বিভিন্ন উপজেলায় ব্রিজ আছে কিন্তু নেই কোন সড়ক।
ঠিকাদার, কর্মকর্তা ও তিন এমপির ভাগবাঁটোয়ারা করে ১০ ব্রিজের ১১৬ কোটি টাকা লোপাট।
গাইবান্ধায় গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও নদীর ওপর ১১টি ব্রিজ নির্মাণ প্রকল্পে ঠিকাদার, কর্মকর্তা ও তিন এমপির মধ্যে বিপুল পরিমাণ টাকা ভাগবাটোয়ারার অভিযোগ উঠেছে।
ওইসব পয়েন্টে অপরিকল্পিতভাবে ১১টি ব্রিজ নির্মাণে ১১৬ কোটি টাকা খরচ হলেও সংযোগ সড়ক না থাকায় দীর্ঘদিনেও সেগুলো চালু করা যায়নি।
গাইবান্ধা শহর ও পাশের জেলার সঙ্গে সংযোগ রক্ষার জন্য গাইবান্ধা সড়ক বিভাগ থেকে ১১টি গুরুত্বপূর্ণ সড়কের সংযোগ সেতুকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়।
ওইসব স্থানে নতুন করে ব্রিজ নির্মাণে তৎকালীন তিন সংসদ-সদস্যের সুপারিশে তাড়াহুড়া করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ থেকে ১১৬ কোটি ৬০ লাখ ৮০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।
সেই অনুযায়ী গাইবান্ধা সড়ক বিভাগ ২০২২ সালে গোবিন্দগঞ্জের করতোয়া ব্রিজ, শাকদহ ব্রিজ, সাঘাটায় বাজিতনগর ব্রিজ, কালিতলা ব্রিজ, সাদুল্লাপুরে ঘাঘট ব্রিজ, সুন্দরগঞ্জের মাঠেরহাট ব্রিজ, হলহলিয়া ব্রিজ, বাজারপাড়া ব্রিজ এবং গাইবান্ধা সদর উপজেলায় নতুন ব্রিজ, পুরান ব্রিজ ও পুলবন্দি ব্রিজের দরপত্র আহ্বান করা হয়।
তড়িঘড়ি করে আ.লীগের এমপিদের চাপের মুখে গাইবান্ধা সড়ক ও জনপথ বিভাগ ১১টি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ব্রিজ নির্মাণের কার্যাদেশও দেয়। কোনো সংযোগ সড়ক ছাড়াই ১০টি ব্রিজের কাজ সম্পন্ন করা হয়। কিন্তু দুপাশে সড়ক না থাকায় নদীর মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে ব্রিজগুলো।
এসব ব্রিজ নির্মাণে নাটেরগুরু ছিলেন জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ মাহবুব আরা বেগম গিনি, গাইবান্ধা-৩ (পলাশবাড়ী-সাদুল্লাপুর) আসনের এমপি উম্মে কুলসুম স্মৃতি ও গাইবান্ধা-২ (সদর) আসনের এমপি শাহ সারোয়ার কবীর।
তারা মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে সড়ক বিভাগের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমডি ময়েন উদ্দিন লিমিটেড, টার্চ ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড, মুহম্মদ আমিনুল হকসহ কয়েকজনের নামে ব্রিজগুলোর কাজ বাগিয়ে দেন।
গাইবান্ধা সড়ক বিভাগ কিছু বুঝে ওঠার আগেই কর্তাদের ওপর প্রভাব খাটিয়ে পরিকল্পনা ছাড়াই গাইবান্ধার তিন এমপির কেরামতির কারণে শতকোটি টাকার অনেকটাই ভাগবাটোয়ারা হয়ে যায়।
ওইসব কাজের ঠিকাদার ছিলেন গাইবান্ধা জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ আহসান হাবীব রাজিবসহ কয়েক যুবলীগ ও আওয়ামী লীগ নেতা। ফলে তারা দলীয় প্রভাব খাটিয়ে নিন্মমানের সরঞ্জাম দিয়ে তৈরি করেন ১১টি ব্রিজ।
সবকটি ব্রিজ নির্মাণ করা হয় অপরিকল্পিতভাবে। সেই কারণে ব্রিজ নির্মাণ হলেও সংযোগ সড়ক না থাকায় সেগুলো নদীর ওপর ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। ফলে জনসাধারণ ও যানবাহন চলাচলে এগুলো কোনো কাজে আসছে না।
গাইবান্ধা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পিয়াস কুমার জানান, সংযোগ সড়কের জন্য আরও অন্তত ৪৫ কোটি টাকা প্রয়োজন। বরাদ্দ ও ভূমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ হলে ব্রিজগুলো সচল করে চলাচলের উপযোগী করা হবে।