বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
05 Feb 2025 05:49 am
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পোষ্য কোটা বাতিল ঘোষণা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিক্ষোভকারীদের সামনে তিনি এ ঘোষণা দেন।
এ সময় উপাচার্য জানান, ‘মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির সভায় পোষ্য কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দীর্ঘদিন নানাভাবে বঞ্চিত হয়েছে।
তাদেরও কিছু দাবি-দাওয়া রয়েছে যেগুলো নিয়ে দীর্ঘ সময় আন্দোলন করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা, কর্মচারীদের প্রয়োজনীয় প্রাতিষ্ঠানিক যে সুবিধা রয়েছে সেটা বিবেচনা করার জন্য একটি কমিটি করা হয়েছে। আজ বুধবার পোষ্য কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।’ পোষ্য কোটা বাতিল হওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার মুন্না বলেন, ‘অযৌক্তিক কোটা বাতিল হওয়ায় আমরা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
আমরা চাই এই যে ধারাটা বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে সেটা বিদ্যমান থাকুক। সব ধরনের বৈষম্য নিপাত যাক।’এদিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য বরাদ্দকৃত পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে এক বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা ৷ মিছিলটি ছেলেদের ১০টি আবাসিক হল ঘুরে নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে শেষ হয়। এ সময় তারা প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন।
এতে আটকে পড়েন প্রশাসনিক ভবনে অবস্থানরত শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
এদিকে বিকাল ৪টার দিকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এসে কথা বলেন। তখন শিক্ষার্থীরা রাত ৯টা পর্যন্ত সময় দেন তাঁকে। ৯টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিতে হবে। তখন উপাচার্য শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমি প্রশাসনের বাকিদের সঙ্গে কথা বলে তোমাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে সিদ্ধান্ত জানাচ্ছি।
’এদিকে রাত ৯টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে মিছিল নিয়ে নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে জড়ো হোন শিক্ষার্থীরা।
এর আগে গত রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে অনশন শুরু করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
প্রশাসনের আশ্বাসে ওই দিন দিবাগত রাতে অনশন ভাঙলেও পরদিন আবারও অনশন শুরু হয়। এরপর গতকাল রাতে পোষ্য কোটা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত জানায় প্রশাসন।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এখন থেকে প্রতিবছর ৪০টি আসনে পোষ্য কোটায় শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হবে। পোষ্য কোটায় ভর্তি হতে হলে অন্তত ৪০ শতাংশ নম্বর পেতে হবে। একজন চাকরিজীবী একবারই পোষ্য কোটা ব্যবহার করতে পারবেন।
সেখানে গিয়ে তারা পোষ্য কোটা বাতিল সংক্রান্ত পোস্টার ছিড়ে ফেলেন বলে অভিযোগ এনেছেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় প্রতিবাদ জানাতে গেলে এক শিক্ষার্থীকে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ধাক্কা দেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবি, পূর্বের নিয়মেই পোষ্য কোটায় ভর্তি নিতে হবে।
পোষ্য কোটা সংক্রান্ত সব শর্ত বাতিল ও ফের বহালের দাবিতে আগামীকাল থেকে লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ।
কালের কণ্ঠ