রবিবার, ১২ জানুয়ারী, ২০২৫
13 Jan 2025 01:12 am
পলাশবাড়ী (গাইবান্ধা) সংবাদদাতাঃ জেলার পলাশবাড়ী পৌরসভার গাইবান্ধা আঞ্চলিক সড়কের পাশেই ময়লার ভাগাড় তৈরি হয়েছে। পৌর শহরের সব ময়লা-আবর্জনা এনে ফেলা হচ্ছে গাইবান্ধা সড়কের পাশেই। দুর্গন্ধে যানবাহনের চালক, যাত্রীসহ পথচারীরা রয়েছেন চরম দুর্ভোগে। পৌরসভার টেলিফোন এক্সচেঞ্জ পার হলেই আঞ্চলিক সড়কের পাশেই দেখা মেলে ময়লার এই বিশাল আকৃতির ভাগাড়!
সরেজমিনে দেখা গেছে, এই ময়লার ভাগার এলাকা পার হতেই পরিবহনের যাত্রী ও পথচারীরা নাকমুখ চেপে রাখেন। ময়লার ভাগাড়ের পাশ দিয়ে যেতেই দুর্গন্ধে বাস ভরে যায়। ময়লার স্তূপ পেরিয়ে গেলেও দুর্গন্ধ আটকে থাকে বাসের মধ্যে। দীর্ঘদিন ধরেই গন্ধের এই দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী যাত্রী, বাসের চালকসহ স্থানীয়রা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে,পৌরসভার আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না থাকায় পৌরসভার ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে পৌরসভার গাইবান্ধা আঞ্চলিক সড়কের ব্যস্ততম সড়কের পাশেই। অনেকদিন ধরে ময়লা ফেলার ফলে সড়কের পাশেই এখন বিরাট ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে।
পলাশবাড়ী পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ড থেকে প্রায় ১৫ টন বর্জ্য বের হয়। বিপুল পরিমাণ এই বর্জ্য ফেলার জন্য পৌরসভার নিজস্ব কোনো জমি না থাকায় ভাগাড় বা ডাম্পিং স্টেশন করা সম্ভব হয়নি। তাই দীর্ঘ দিন ধরে পৌরসভার গাইবান্ধা সড়কের পাশেই জামালপুর ওয়ার্ড এলাকায় ময়লা ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আঞ্চলিক এই সড়ক বেশি চওড়া না হওয়ায় বেশ কিছু জায়গা ময়লার ভাগাড়ের দখলে যাওয়ায় সড়কের ঐ স্থানটি সরু হওয়ায় বিপদের আশংকা থেকে যায় সবসময়। সাধারণ মানুষকে নাকে-মুখে হাত চেপে,নিঃশ্বাস বন্ধ করে চলাচল করতে হচ্ছে। দুর্গন্ধ বাতাসের সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ছে আশপাশের বসতবাড়িতে।
ময়লা ভাগাড় নিকট বর্তী স্থানীয় দুই বাসিন্দা মোনোয়ারা বেগম ও মন্জুয়ারা বেগম বলেন, দুর্গন্ধের কারণে এখানে থাকাই দায়। নাক মুখ চেপে চলাচল করতে হয়। দুর্গন্ধ হওয়ায় অসহ্য যন্ত্রণা ভোগ করছি,বাড়ির বাচ্চারা দুর্গন্ধের কারণে ঠিক মতো খাবার খেতে পারছেনা এবং তারা মাঝে মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়ছে, এছাড়াও গরু ছাগলও ঠিক মতো খেতে পারছে না অতিরিক্ত গন্ধ ও মাছির জন্য।এমনকি এই ময়লার ভাগারের দুর্গন্ধের জন্য আত্মীয় সজনরাও আমাদের বাড়ীতে আসতে অসুস্থী বোধ করছে। আমরা একাধিক বার পৌরসভায় ময়লার ভাগারটি অন্যত্র সরানোর আবেদন করলেও সরানোর আশ্বাস দিয়েও এখনো তা করেননি পৌর কতৃপক্ষ। পৌরসভার কাছে আমাদের দাবি, ময়লার ভাগাড়টি এখান থেকে অন্য স্থানে সরিয়ে নিয়ে আমাদের স্বাভাবিক ও স্বাস্থ্য সম্মত জীবন যাপন করার সুযোগ করে দেয়া হোক।
এই সড়কের নিয়মিত এক বাসযাত্রী এস রহমান নামে এক ব্যক্তি বলেন, ময়লার অংশটুকু পার হতে গেলেই দুর্গন্ধ গাড়ির মধ্যে ঢুকে। ময়লার স্থান পার হলেও দুর্গন্ধ যেতে সময় লাগে। অনেক সময় বাচ্চারা বমি করে ফেলে। জেলার সিভিল সার্জন ডা.কানিজ সাবিহা বলেন,সড়কের পাশে ময়লা ফেলার কারণে পথচারীদের দুর্গন্ধে বিভিন্ন রকমের রোগ হতে পারে। খোলা স্থানে বর্জ্য ফেলার ফলে ওই এলাকার মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্য ঝুঁকির প্রভাব পড়ছে। পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। এর ফলে ওই এলাকায় মশা-মাছির উপদ্রব বাড়ছে। এসবের কারণে শিশু ও বৃদ্ধরা শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হতে পারে।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও পলাশবাড়ী পৌরসভা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) আল-ইয়াসা রহমান তাপাদার বলেন, আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না থাকায় ও নিজস্ব জায়গা না থাকায় এসমস্যা হচ্ছে, পৌরসভা ইতি মধ্য জমি খোজার কাজ শুরু করেছে।আশা করছি শীঘ্রই এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।