বুধবার, ০১ জানুয়ারী, ২০২৫
04 Jan 2025 01:58 am
পীরগঞ্জ (রংপুর)প্রতিনিধি:- রংপুরের পীরগঞ্জে কাঁচামাল ব্যবসায়ীদের আড়তে অভিযান চালিয়ে নগদ ৯৯ হাজার ৭’শ টাকা,৬টি মোবাইল কেড়ে নিয়ে মারপিটের পর থানায় নিয়ে জুয়া মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে থানা পুলিশের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীরা জড়িত পুলিশ সদস্যদের শাস্তির দাবীতে মানববন্ধন করেছে।পরে ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।এতে সড়কে শতাধিক গাড়ী আটকা পড়ে।৩১ ডিসেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের কলাবাগান (শুকানচৌকি) বাজারে মানববন্ধন শেষে মহাসড়কের এক দিকে যান চলাচল বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ করে।
এতে বক্তব্য রাখেন ভুক্তভোগি ব্যবসায়ী রাশেদুল ইসলাম, আবু তাহের, নালো মিয়া,স্থানীয় বাসিন্দা একরামুল হক,দেলোয়ারা বেগমসহ আরো অনেকে।ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা জানান,গত ২৭ ডিসেম্বর শুক্রবার দিবাগত রাতে পীরগঞ্জ থানা পুলিশের এসআই মশিউর ও এএসআই জুয়েল রানা কয়েকজন পুলিশ সদস্য রাত দেড়টার দিকে ব্যবসায়ী রাশেদুল ও সাজু’র আড়ত ঘরে ঢোকে।সে সময়ে পেঁয়াজ ও মুখী কচুর বীজ লোড আনলোড শেষে ৭ জন ব্যবসায়ী অবস্থান করে হিসাবনিকাশ করছিল।প্রবেশ করে তল্লাশি চালায় এবং যার কাছে যা কিছু আছে দিয়ে দিতে বলে পুলিশ।
এ সময় জোরপুর্বক আড়তদার রাশেদুল ইসলামের ১০ হাজার ৫’শ, বাক্সে রক্ষিত ৮ হাজার ৫’শ, সাজু মিয়ার ১২ হাজার ৩’শ, ব্যবসায়ী আবু তাহেরের ১৫হাাজর ৪’শ, মিলন মিয়ার ১৩ হাজার ৭’শ, বিলু মিয়ার ১৭ হাজার ৩’শ, রবিউল ইসলামের ৭ হাজার, নালো মিয়ার ১৫ হাজার টাকা মোট ৯৯ হাজার ৭০ টাকাসহ ব্যবহৃত মুঠোফোন গুলো কেড়ে নিয়ে এলোপাথারি চড়-থাপ্পড় দেয়।
এক সময়ে নালো মিয়া কৌশলে ঝাপ খুলে পালিয়ে যায়।৬জনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে ও তাস জুয়া খেলার অপরাধে এস আই মশিউর বাদী হয়ে মামলা করে আদালতে পাঠানো হয়।মামলার জব্দ তালিকায় ৯ হাজার ৮’শ ৭০ টাকা উল্লেখ করলেও বাকী ৮৯ হাজর ৮’শ ৩০ টাকা ও মোবাইল ফেরত দেয়নি পুলিশ।ওই এলাকার একাধিক বাসিন্দা জানান, ইদানিং পুলিশ বিভিন্ন ভাবে মানুষকে হয়রানি করছে।
এলাকায় মাদকে ছড়াছড়ি, অথচ মাদক কারবারিদের আটক না করে সেবনকারীকে মাঝে মধ্য গ্রেফতার করে থানায় নেয়ার পথে টাকার বিনিময়ে মাঝপথে ছেড়ে দেয়।তারা আরও জানায়, রাশেদুলসহ ভুক্তভোগিরা এলাকার প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী, তাদের জুয়া মামলায় ফাঁসিয়ে টাকা মেরে দিয়েছে পুলিশ।দ্রæত মামলা প্রত্যাহার,কেড়ে নেয়া টাকা ফেরত দেয়াসহ অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের শাস্তির দাবী জানান।মহাসড়ক অবরোধকালে মহাসড়কের এক পাশের্^ তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
এসআই মশিউর জানান,এলাকাবাসীর অভিযোগে জুয়া খেলার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই ঘরে অভিযান পরিচালিত হয়।এখন তারা পুলিশের বিরুদ্ধে বানোয়াট,ভিত্তিহীন ও মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করছে।
এএসআই জুয়েল রানা জানান,তাস দিয়ে তারা জুয়া খেলা অবস্থায় হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়।ভিডিও ফুটেস সংরক্ষিত আছে। টাকার পরিমান যা ছিল তা জব্দ তালিকায় দেখানো হয়েছে।বাড়তি টাকার বিষয়টি সত্য নয়।
ওসি এমএ ফারুক জানান,তাস দিয়ে জুয়া খেলার অপরাধে এসআই মশিউর ও এএসআই জুয়েল রানা অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে।জুয়া আইনে নিয়মিত মামলার পর তাদের আদালতে পাঠানো হয়।পুলিশ সদস্যরা কোন অপরাধ করলে তার দায়ভার নিবনা বরং শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।রংপুরের পুলিশ সুপার আবু সাইম জানান,জুয়া বর্তমানে সমাজে ছড়িয়ে পড়েছে,পুলিশ জুয়ার বিরুদ্ধে অপারেশন চালিয়েছে।
মোঃ আকতারুজ্জামান রানা,পীরগঞ্জ(রংপুর) প্রতিনিধি