বৃহস্পতিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৩
24 Nov 2024 01:30 pm
ছাদেকুল ইসলাম রুবেল,গাইবান্ধাঃ- বর্তমানে বাজারে পেঁয়াজের ঝাঁজ অনেক বেশি। তাই স্বাভাবিকের তুলনায় দ্বিগুণ দাম হওয়ায় অনেক কৃষক সময়ের চেয়ে আগে মাঠের পেঁয়াজ উঠিয়ে বাজারে বিক্রি করছেন
জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হঠাৎ পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ হওয়ায় ক্রেতাদের চোখেমুখে হতাশার ছাপ পড়েছে। কিন্তু একই সময় বিক্রেতা এবং কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে। উপজেলার ৫ নয় মহদীপুর ইউনিয়নের কৃষক মো.মনু ইসলাম বেপারী বলেন, প্রতি বছর পেঁয়াজ-রসুনে লোকসান হয়। এবার বাজারে বেশি দাম হওয়ায় আমরা পেঁয়াজ ওঠাতে শুরু করেছি। কারণ, পরে যদি দাম কমে যায়।
কৃষক রনা মোল্লা বলেন, বর্তমান বাজারে প্রতি মণ পেঁয়াজ চার থেকে সাড়ে চার হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এমন সংবাদে এক বিঘা জমির পেঁয়াজ উঠিয়েছি। বাজারে তিন মণ পেঁয়াজ সাড়ে চার হাজার টাকা দরে বিক্রি করেছি।
তিনি বলেন, এখনও ২ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ রয়েছে।এমন দাম থাকলে সব পেঁয়াজ উঠিয়ে বিক্রি করব। ১৫-২০ দিন পর এই পেঁয়াজ ওঠালে এক বিঘাতে ১০/১২ মণ পেঁয়াজ বেশি হবে। তবে এমন দাম হয়তো আমরা তখন পাবো না। যে কারণে ইচ্ছা না থাকার পরও অসময়ে অপরিপক্ব কাঁচা পেঁয়াজ উঠাতে হচ্ছে।
এই কৃষক আরও বলেন, পেঁয়াজ নিয়ে কারসাজি এর আগেও হয়েছে। সিন্ডিকেট না ধরে কৃষকের কাছে এলে কী হবে। পেঁয়াজের কারসাজি বন্ধ করতে হলে অবশ্যই সিন্ডিকেট ধ্বংস করতে হবে। আইনের আওতায় সিন্ডিকেট গডফাদারদের নিয়ে আসতে হবে। আমরা চাষি চাষ করি বিক্রি করি। এখন দাম ভালো তাই বিক্রি করে দিচ্ছি।এ সময় আরেক কৃষক নজরুল খাঁ বলেন, প্রথম দফায় পাঁচ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি করেছিলাম। দিনদিন দাম কিছুটা কমে আসছে। এ কারণে বেশি দামের আশায় দ্রুত তুলে বিক্রি করছেন। গত বুধবার চার হাজার টাকায় এক মণ মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিক্রি করেছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিশু জানায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৬৫০ হেক্টর জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজ রোপণ করা হয়েছে। অক্টোবর মাসের শুরু থেকে মুড়িকাটা পেঁয়াজ রোপণ শুরু হয়। রোপণের ১০০ বা ১১০ দিন বা তিন মাস পর পেঁয়াজ পেকে পরিপক্ব হয়।
পলাশবাড়ী কৃষি কর্মকর্তা ফাতেমা কাউসার মিশু বলেন, বর্তমান বাজারমূল্য বেশি থাকায় অধিকাংশ কৃষক আগেভাগে পেঁয়াজ তুলে ফেলছেন। পেঁয়াজ তোলা শেষে ওই জমিতে হালি পেঁয়াজ, ভুট্টাসহ অন্যান্য ফসলের আবাদের সুযোগ পাচ্ছেন। তবে কিছুদিন পর পেঁয়াজটা উত্তোলন করলে ফলন আরও ভালো হত। তবে আগেভাগে পেঁয়াজ তোলায় উৎপাদন কিছুটা কম হলেও অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছে তারা। তবে আমরা তাদেরকে পরামর্শ দিচ্ছি যাতে পরিপক্ক হলে পেঁয়াজটা উত্তোলন করে।