শনিবার, ০১ এপ্রিল, ২০২৩
29 Nov 2024 04:27 am
সঞ্জু রায়, বগুড়া: বগুড়ায় চলন্ত বাসে অজ্ঞান পার্টির খপ্পড়ে পড়া চার যাত্রীকে উদ্ধারপূর্বক চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে সদর থানা পুলিশ। শনিবার ভোর সোয়া ৪টার দিকে শহরের সাতমাথা সপ্তপদী মার্কেটের সামনে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
অজ্ঞান পার্টির খপ্পড়ে পড়া ওই চার বাস যাত্রীরা হলেন, কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রামের মাফুজ মিয়ার স্ত্রী তানিয়া বেগম (৩২), রংপুর জেলা সদরের নূর নবী সরকারের ছেলে আইনুল ইসলাম (২৫), ঠাকুরগাঁও জেলার দেওগাঁওয়ের মকবুল হোসেনের ছেলে আবু জাহিদ (২৫) ও হরিপুরের আজগর আলীর ছেলে আসিফ যারা প্রত্যেককে বর্তমানে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
এদিকে অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া অজ্ঞান পার্টির দুই সদস্য হলেন, বাগেরহাট জেলার মোল্লারহাটের মৃত আক্কাস আলীর ছেলে শহিদুল ইসলাম (৪৪) ও মৃত রোস্তম শেখের ছেলে বোরহান শেখ (৫২) যারা পেশাদার চক্রের সক্রিয় সদস্য বলে জানা যায়। পুলিশের দাবি গ্রেপ্তার দুইজন যাত্রী সেজে গণপরিবহনে ওঠেন। পরে নানা কৌশলে সাধারণ যাত্রীদের চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে সর্বস্ব হাতিয়ে নেন তারা।
শনিবার দুপুরে বগুড়া সদর থানায় অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) স্নিগ্ধ আখতার পিপিএম এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, ঢাকার গাবতলী থেকে ঠাকুরগাঁওগামী একটি বাসে অজ্ঞান পার্টির সদস্য শহিদুল ও বোরহান যাত্রী বেশে উঠে পড়েন। এই সময়ে তারা আশেপাশে থাকা যাত্রীদের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলেন। একপর্যায়ে সিরাজগঞ্জে বাসটির যাত্রা বিরতির সময় শহিদুল ও বোরহান ওই চার যাত্রীর সাথে খাওয়ার টেবিলে বসে কৌশলে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে দেন। পরে বাস ছাড়ার পর যাত্রীরা অচেতন হয়ে পড়লে অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা তাদের মুঠোফোন ও নগদ অর্থ লুট করে নেয়।
এই বিষয়ে বগুড়া সদর থানা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে সাতমাথায় চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি শুরু করলে বাস সেখানে আসার পর অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালানো সময় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় বাসে অচেতন অবস্থায় থাকা চার যাত্রীকে উদ্ধার করে শজিমেক হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আখতার আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা জানিয়েছেন বিভিন্ন গণপরিবহনে যাত্রীবেশে ওঠে চেতনানাশক ওষুধ খুইয়ে যাত্রীদের সর্বস্ব ছিনতাই করতেন তারা। তাদের গ্রেপ্তারের সময় ওই চার বাস যাত্রীদের থেকে হাতিয়ে নেওয়া ৫টি মুঠোফোন ও নগদ ১১ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়াও চেতনানাশক ওষুধ, স্প্রে, পান-সুপাড়ি ও জর্দা জব্দ করা হয়। তিনি জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের পূর্বক শনিবার আদালতে সোপর্দ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নূরে আলম সিদ্দিকী, পরিদর্শক (তদন্ত) বাবু কুমার সাহা ও অভিযানের নেতৃত্বে থাকা মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাসেল আহম্মেদ উপস্থিত ছিলেন।