শনিবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০২৩
24 Nov 2024 08:21 am
খোকন হাওলাদার, গৌরনদী (বরিশাল) প্রতিনিধি;-‘আয় ছেলেরা, আয় মেয়েরা / ফুল তুলিতে যাই, ফুলের মালা গলায় দিয়ে / মামার বাড়ে যাই। ঝড়ের দিনে মামার দেশে / আম কুড়াতে সুখ, পাকা জামের মধুর রসে / রঙিন করি মুখ...।’
পল্লীকবি জসীম উদ্দিনের ‘মামার বাড়ি’ কবিতার পংক্তিগুলো বাস্তব রূপ পেতে বাকি রয়েছে আর মাত্র কয়েক মাস। তবে সুখের ঘ্রাণ বইতে শুরু করেছে। গাছে গাছে ফুটছে আমের মুকুল। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে এই মুকুলের পাগল করা ঘ্রাণ।
বাতাসে মিশে সৃষ্টি করছে মৌ মৌ গন্ধ। যে গন্ধ মানুষের মনকে বিমোহিত করে। পাশাপাশি মধুমাসের আগমনী বার্তা শোনাচ্ছে আমের মুকুল। শিত আর ঘনকুয়াশা এরই মাঝে বরিশালের আগৈলঝাড়ায় আম ও লিচুর গাছে মুকুলে ছেয়ে গেছে। মৌসুমের শুরুতেই আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ছোট বড় সব গাছে এবার রেকর্ড পরিমান মুকুল দেখা দিয়েছে। আবহাওয়া ভাল থাকলে মৌসুমী আম ও লিচুর ফলের উৎপাদন লক্ষ্য মাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে উপজেলার চাষী হাবুল সরদার জানিয়েছেন।
উপজেলার বিভিন্ন স্থানে চাষীরা এখন স্প্রে দিয়ে ওষুধ প্রোয়গ করে মুকুল আটকানোর চেষ্টা করছেন। উপজেলা সদরসহ ৫টি ইউনিয়নের অনেক জায়গায় এখন বানিজ্যিক ভাবে আম, লিচু ও কাঠালের চাষ করা হচ্ছে। আগের তুলনায় এলাকায় বেড়েছে বাগান ও ফলের চাষ।
এলাকায় বাগানের পাশাপাশি সরকারী অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ফাঁকা জায়গায় সারি সারি করে বিভিন্ন প্রকার ফলজ গাছ রোপন করা হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার দোলন চন্দ্র রায় জানান, গত এক সপ্তাহের বৈরি আবহাওয়াতে আমের মুকুলের পরাগায়ন বিঘ্ন, ছত্রাকজনিত রোগের আক্রমন, পোকার আক্রমনে মুকুলে এ্যানথ্রাকনোজ রোগ দেখা দিতে পারে। এ থেকে পরিত্রান পেতে আম চাষীদের হপার পোকার জন্য তরল কীটনাশক, এ্যানথ্রাকনোজ রোগের জন্য ছত্রাক নাশক ওষুধ ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছি। আম গাছে মুকুল হলেই যে বেশি আম ধরবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন বা কুয়াশাচ্ছন্ন থাকলে বা তাপমাত্রা কমে গেলে মুকুল নষ্ট হয়ে যায়।
তিনি আরও জানান, ৯৯ ভাগ মুকুল থেকে কোন গুটি হয়না। আবার বিভিন্ন কারণে গুটিও ঝরে পরে। মাটিতে প্রয়োজনীয় রস না থাকলে গুটি ঝরে পড়ে বেশি। তাছাড়া নিয়ম ভঙ্গ করে গ্রাম গ্রামে ইট ভাঁটা স্থাপিত হওয়ায় এর ছাই প্রতি বছর আমের মুকুলের ক্ষতি করছে। যদিও এবার প্রচুর মুকুল এসেছে, তবে ফলন নির্ভর করবে পরবর্তী আবহাওয়ার উপর। যে বছর আমের ফলন বেশি হবে সে বছর গাছের কার্বন ও নাইট্রোজেনের তারতম্য ঘটে। ফলে পরের বছর আমের ফলন কমে যায়।