রবিবার, ০১ জানুয়ারী, ২০২৩
25 Nov 2024 02:11 am
ছাদেকুল ইসলাম রুবেল,গাইবান্ধাঃ দেশের বহুল আলোচিত সংসদীয় আসন গাইবান্ধা-৫। গত ১২ অক্টোবর এই আসনটির উপনির্বাচনে ভোট প্রদানকালে নানা অনিয়মের অভিযোগে ভোটগ্রহণ বন্ধ ঘোষণা করে ইসি। ফের ৪ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ভোটগ্রহণ। সম্প্রতি এই নির্বাচনকে ঘিরে জমে উঠেছে প্রচার-প্রচারণা। প্রার্থীরা ছুটছেন এপ্রান্ত থেকে ও প্রান্তরে। এলাকার উন্নয়নে নানা প্রতিশ্রুতি নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তারা। এভাবে দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই ভোটারদের কদর বাড়ছে।
জানা যায়, গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনের উপনির্বাচনে ৫ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে এরই মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী নাহিদুজ্জামান নিশাত ভোট থেকে সরে গেছেন। বর্তমানে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মাহামুদ হাসান রিপন, জাতীয় পার্টি থেকে গোলাম শহীদ রঞ্জু, বিকল্প ধারার জাহাঙ্গীর হোসেন, স্বতন্ত্র হয়ে সৈয়দ মাহবুবুর রহমান ভোটের মাঠে আছেন।ভোটযুদ্ধে ওইসব প্রার্থী ও সমর্থকরা তীব্র শীতকে উপেক্ষা করে ভোটপ্রার্থনায় চষে বেড়াচ্ছেন প্রত্যান্ত অঞ্চলে। একেবারে প্রচার-প্রচারণায় সরব হয়ে ওঠেছেন তারা। বিরামহীনভাবে চালিয়ে যাচ্ছেন গণসংযোগ। কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে ভোরের সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই বেরিয়ে পড়ছেন ভোট প্রার্থনায়। চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন গ্রাম-গঞ্জ ও হাট-বাজারে গিয়ে নিজেদের অবস্থান জাহির করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। দিন শেষে গভীর রাত পর্যন্ত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন প্রার্থীরা। ভোটের খোঁজে নৌযোগে চরাঞ্চলে গিয়ে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে নির্বাচনী ঈস্তেহার ঘোষণা করছেন। একই সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, পেজ ও গ্রুপ খুলে নিজেকে সৎ নির্ভীক হিসেবে জাহির করাসহ নানা ধরনের ভিডিও-স্ট্যাটাস পোস্ট করতে দেখা গেছে।
এদিকে, সাধারণ ভোটাররা জানিয়েছেন, গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে ৪ জন প্রার্থীর মধ্যে মাহামুদ হাসান রিপন ও গোলাম শহীদ রঞ্জুর মধ্যে মূল লড়াই হবে। এর কারণ হিসেবে তারা বলেন, এই আসনে রিপনের অনেক অবদান রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এলাকার উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়া রঞ্জুকেও বাদ দেওয়া যাবে না। একসময় ভোট ব্যাংক হিসেবে পরিচিত ছিল এই আসনটি। সেক্ষেত্রে নতুন করে জাতীয় পার্টিরও অনেক ইমেজ উঠেছে।
জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট গোলাম শহীদ রঞ্জু বলেন, গত ১২ অক্টোবরের মত পেশি শক্তি ব্যবহার না করা হয় তাহলে জাতীয় পাটির বিজয় সুনিশ্চিত। তবে আমি আশঙ্কা করছি গতবারের উপনির্বাচনের মত আবার আমার দলের নেতা কর্মীর নামে মামলা, হামলা হবে কি না। ভোটাররাও শঙ্কা প্রকাশ করছেন। ভোট দিতে দিয়ে পূনরায় তাদের কাছ থেকে ভোট জোর করে বোতাম চাপ নিয়ে নেওয়া হবে কিনা। আমি শেষ পর্যন্ত ভোটের লড়াইয়ে থাকবো। সাধারণ জনগণ আমার সঙ্গে আছে। জিতবে এবার লাঙ্গল।
আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহামুদ হাসান রিপন বলেন, নিজের এলাকায় দেড় দশকের বেশি সময় ধরে উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে সরাসরি সম্পৃক্ত আছি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি না হয়েও প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ এই এলাকার মানুষের জীবনমান স্থায়ীভাবে পরিবর্তন করতে কাজ করে যাচ্ছি। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে অসহায় মানুষের পাশে আগে থেকে আছি এবং আগামীতেও থাকবো। জনগণ আমাকে স্বতস্ফুর্তভাবে ভোট দিবে। ফলে আমার বিজয় সুনিশ্চিত।
গাইবান্ধা জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলা নিয়ে এ সংসদীয় আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৭৪৩ জন। এর মধ্যে ফুলছড়ির ৭ টি ইউনিয়নে এক লাখ ১৪ হাজার ৬৭৬ জন এবং সাঘাটার ১০ ইউনিয়নে ২ লাখ ২৫ হাজার ৭০ জন ভোটার আছেন। ফুলছড়িতে ৫৭টি এবং সাঘাটায় ৮৮টি মোট ১৫৪টি ভোট কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, গত ২৩ জুলাই সাবেক ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার মৃত্যুতে ৩৩, গাইবান্ধা ৫ আসনটি শূন্য হয়। সংসদীয় এই আসনে গত ১২ অক্টোবর ভোটগ্রহণ চলাকালে নানা অনিয়মের অভিযোগ সেটি বন্ধ ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশনার (ইসি)। ফের কমিশনের সিদ্ধান্তে আগামী ৪ জানুয়ারি ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।