বুধবার, ১৪ মে, ২০২৫
14 May 2025 07:21 pm
![]() |
সাইফুর রহমান শামীম,কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:-কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের সুভারকুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে ক্লাস করছে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে। ছাদ থেকে পলেস্তারা খসে পড়ছে, দেয়ালজুড়ে দেখা দিয়েছে ফাটল, কোথাও কোথাও বেরিয়ে এসেছে মরিচাধরা রড। বৃষ্টির সময় ছাদ চুঁইয়ে পানি পড়ে শ্রেণিকক্ষ ভিজে যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত এমন পরিস্থিতিতে পাঠদান চলায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে শিক্ষার্থীরা।বিদ্যালয়ের ছয় কক্ষবিশিষ্ট ভবনের একটি শ্রেণিকক্ষে পাঠদান পুরোপুরি বন্ধ, আর দুটি কক্ষ ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
অফিসকক্ষের অবস্থাও নাজুক—ছাদ থেকে খসে পড়ছে পলেস্তারা, দেখা যাচ্ছে রড। জরাজীর্ণ এই ভবনে প্রতিদিনই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আসতে হচ্ছে ২৬৪ জন শিক্ষার্থী ও ৫ জন শিক্ষককে।পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র আরিফুল ইসলাম বলে, “প্রতিদিন আতঙ্ক নিয়ে ক্লাস করি। ছাদ থেকে যখন তখন কিছু খসে পড়ে মাথায় লাগে। ঠিকমতো পড়াশোনাতেও মন বসে না।”
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৪৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২০০১ সালে একটি দ্বিতল ভবন নির্মাণ করা হয়। তখন থেকেই এই ভবনেই পাঠদান চলছিল।বর্তমানে ভবনের বিভিন্ন অংশে ফাটল ও ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা বাড়তে থাকায় অনেক শ্রেণিকক্ষ ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খন্দকার তানজিনা মমতাজ বলেন, “ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে একটি কক্ষ আমরা নিজেরাই বন্ধ রেখেছি।আরও দুটি কক্ষ ব্যবহার করতেও ভয় হয়। ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য উপজেলা প্রশাসন ও প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে একাধিকবার আবেদন করা হয়েছে।”অভিভাবকরাও বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। স্থানীয় বাসিন্দা ফিরোজ আলী বলেন, “প্রতিদিন ভয় নিয়ে সন্তানকে স্কুলে পাঠাই। যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
এত বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়ে আছে একটা প্রাথমিক বিদ্যালয়, অথচ কারও নজর নেই।”জরাজীর্ণ ভবনের কারণে প্রতিবছর বিদ্যালয় থেকে ৫ থেকে ১০ জন শিক্ষার্থী ঝরে পড়ছে বলে জানা গেছে।উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আপাতত বিকল্প হিসেবে টিনশেড ঘর তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে।অবিলম্বে নতুন ভবন নির্মাণের দাবিতে অভিভাবক ও এলাকাবাসী যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।