মঙ্গলবার, ০৬ মে, ২০২৫
06 May 2025 03:43 pm
![]() |
পীরগঞ্জ(রংপুর)প্রতিনিধিঃ-রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বড় বদনাপাড়া নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এক সময় কেরানী হিসেবে নিয়োগ নিয়ে ভুয়া সনদে প্রধান শিক্ষক হিসেবে রিনয়োগ নেয়া সেই প্রধান শিক্ষক মোর্শেদা বেগমকে অবশেষে সাময়ীক বরখাস্থ করা হলো।বিদ্যালয়টি এমপিও ভুক্তির পর রাতারাতি তিনি সৃজিত কাগজপত্রের মাধ্যমে স্বামী রেজাউল করিমকে সভাপতি বানিয়ে নিজে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ নেন।অভিযোগের প্রেক্ষিতে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পাবার পর ৪ মাস অতিবাহিত হলে গত ২৫ এপ্রিল বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খাদিজা বেগম তাকে সাময়ীক বহিস্কার করেন।
তদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়-“বিগত ২০০৫ সালের প্রধান শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ নেয়ার সময় মোর্শেদা বেগম চতরা ডিগ্রী কলেজ থেকে বি এ পাশ এর যে সনদ প্রদান করেছেন তা সম্পুর্ন ভুয়া। ওই সময় চতরা কলেজে ডিগ্রী খোলা হয়নি। পরবর্তীতে তিনি ২০১০ সালে উন্মুক্ত বিশ^বিদ্যালয় হতে বি এ পাশের সনদ দাখিল করে পুনরায় ২০১৪ সালে নিয়োগ গ্রহন দেখান। বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জনবল কাঠামোতে উল্লেখ রয়েছে,“নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হতে হলে ইনডেক্সধারী শিক্ষক হিসেবে ১০ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে”।এক্ষেত্রেও ২০১০ সালে ¯œাতক পাশ করে ২০১৪ সালে নিয়োগ পাওয়ার কোন সুযোগ নেই।তাছাড়া ২০১৪ সালে নিয়োগ সংক্রান্ত কোন প্রমানপত্রও দেখাতে পারেননি তিনি।
তদন্তে আরও উল্লেখ করা হয়-মোর্শেদা বেগমকে উক্ত প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পদে দেখা গেছে। উপরন্ত বিগত ২০০৫ সালের পর ওই বিদ্যালয়ে আর কোন নিয়োগই হয়নি। এজন্য মোর্শেদা বেগমের প্রধান শিক্ষক হিসেবে থাকার কোন বৈধতা নেই। তিনি ক্ষমতার জোরে পদটি দখল করে রেখেছেন”।
প্রতারনার এ ঘটনার মুল হোতা মোর্শেদা বেগমের স্বামী গিলাবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের বিএসসি শিক্ষক রেজাউল করিম এসব ভুয়া কাগজপত্র তৈরী করে রাতারাতি স্ত্রী মোর্শেদা বেগমকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। এ খবর লেখা পর্যন্ত অভিযুক্ত রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এদিকে বিদ্যালয়টির চলমান কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্য বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক আতোয়ার রহমানকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
এলাকাবাসী জানায়,তাঁর স্বামী রেজাউল করিম পার্শ্ববর্তী গিলাবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের বিএসসি শিক্ষক। এমন কোন কাজ নেই যা তিনি করতে পারেন না। ব্যাকডেটে নিয়োগ থেকে শুরু করে সৃজিত কাগজপত্রের মাধ্যমে এমপি ভুক্তি,স্কেল পরিবর্তন ও অন্যান্য কাজ সবই তিনি করে দিতে পারদর্শী।
উল্লেখ,বিগত ২০০১ ইং সালে বিদ্যালয়টি নিজের দানকৃত জমিতে প্রতিষ্ঠা করেন স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য কায়কোবাদ সাবু। তিনি বলেন-বিগত ২০১৮ সাল পর্যন্ত আমি সভাপতি ছিলাম। এমপিওভুক্ত না হওয়ায় বছরের পর বছর তালা দেয়া থাকতো স্কুলটিতে।শিক্ষক কর্মচারিরা কেউই আসতো না। এমপিওভুক্তির ঘোষনায় হঠাৎ রাতারাতি কিভাবে আমি কিভাবে সভাপতি পদ থেকে বাদ পড়লাম তা কিছুই জানি না। তিনি আরও বলেন-মোর্শেদা বেগমকে ২০০১ সালে যোগ্যতা না থাকায় আমি কেরানী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছি। সে কিভাবে প্রধান শিক্ষক হয় ? আশ্চর্যজনক হলেও সত্য যে,এমপিভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর যাবতীয় তথ্য যাচাই বাছাই কমিটি মোটা অংকের অর্থ নিয়ে মোর্শেদা বেগমের প্রধান শিক্ষক হবার জালিয়াতীর ঘটনাকে জায়েজ করে দেয়া হয়েছে।
মোঃ আকতারুজ্জামান রানা,পীরগঞ্জ,রংপুর