বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৫
24 Apr 2025 11:50 am
![]() |
বগুড়া প্রতিনিধি:- বগুড়ায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত টেকনিক্যাল আইসিটি বাংলাদেশ (TICTB) কর্তৃক পরিচালিত আর মিডিয়া আইটি সল্যুশন এন্ড ট্রেনিং সেন্টারে চুরি ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।জানা যায়, ২০০৭ সাল থেকে উক্ত প্রতিষ্ঠানটি তিনমাথা রেলগেট এলাকায় অত্যন্ত সুনামের সহিত শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতীদের আত্মকর্মসংস্থানের লক্ষে ও শিক্ষার্থীদের বেসিক কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, ফ্রিলান্সিং, আউট সোর্সিং কোর্স ও অন-লাইন ভিত্তিক বিভিন্ন কাজের প্রশিক্ষণ দিয়ে বেকার সমস্যা নিরসনে কাজ করে আসছে। বিগত ২০১৯সালে বৃহৎ পরিসরে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষে অত্র প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ও বাংলাদেশ আনসার এন্ড ভিডিপির সাবেক জেলা কম্পিউটার প্রশিক্ষক মোঃ আশরাফুল ইসলাম, স্টেশন রোড, তিনমাথা রেলগেটে মোঃ নূর ইসলাম মীর এর ৩য় তলা ভবনের (২য় তলায়), ৩০,০০০/-(ত্রিশ হাজার) টাকা অগ্রীম জামানত ও মাসিক ভাড়া ৩,০০০/-(তিন হাজার) টাকা চুক্তিতে ভাড়া নেয় এবং ইং ১০ আগস্ট ২০১৯ তারিখে ৫ বছরের জন্য ভাড়া চুক্তি সম্পাদন করে নিয়মিত ব্যবসা পরিচালনা করে‘ আসছিলেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, বিগত প্রায় দেড় বছর পূর্বে নূর ইসলাম মীর মৃত্যুবরণ করলে তার দুই পুত্র আবু সাঈদ ও সাদিক নিয়মিত ভাড়া উত্তোলন করে আসছিলো। ইতিমধ্যে ভাড়া চুক্তির মেয়াদ শেষ হলে নতুন করে ভাড়া চুক্তি সম্পাদন করতে গেলে মালিক পক্ষ জানায় নতুন বছরের শুরুতে চুক্তি সম্পাদন করা হবে। ফলে ২০২৫ সালের জানুয়ারী মাসে হঠাৎ করেই তারা মাসিক ভাড়া ৮,০০০/-(আট হাজার) টাকা ও জামানত ৩,০০,০০০(তিন লক্ষ) টাকা দাবি করে বসে, অন্যথায় জরুরী ভিত্তিতে ঘর ছেড়ে দেয়ার আল্টিমেটাম দেয়। ফলে অত্র প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ও প্রশিক্ষক আশরাফুল ইসলাম অপারগতা প্রকাশ করে ভাড়াটিয়া চুক্তির শর্ত মোতাবেক ৩ মাসের মধ্যে অগ্রীম জামানতের ৩০,০০০/-(ত্রিশ হাজার) টাকা ফেরত অন্তে ঘর ছেড়ে দেয়ার কথা জানালে ১নং বিবাদী আবু সাইদ জামানতের টাকা আজ দিবো কাল দিবো বলে সময় ক্ষেপন করতে থাকে।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ তারিখে ১নং বিবাদী আবু সাইদ জামানতের টাকা ফেরত না দিয়ে তাদের প্রস্তাবিত শর্ত মোতাবেক নতুন চুক্তি সম্পাদন করতে বলে অথবা ৭দিনের মধ্যে ঘর ছেড়ে দেয়ার জন্য বাদীকে চাপ দেয়। অন্যথায়, ৮ম দিন থেকে মাসিক ভাড়া ৮,০০০/(আট হাজার) টাকা হিসাবে গণ্য হবে বলে জানায়। ফলে চলমান প্রতিষ্ঠানের ক্ষতির কথা বিবেচনা করে আশপাশের ব্যবসায়ী ও গণ্যমান্যদের নিয়ে আলোচনায় বসলে তারা কাউকেই পাত্তা দেয় না। এবং গত ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ইং তারিখ সন্ধ্যা ৭টায় ক্লাস চলা অবস্থায় বিবাদী আবু সাইদ অফিস কক্ষে ঢুকে ক্যাশ টেবিলে রাখা ১৯,৫০০/-(উনিশ হাজার) পাঁচশত টাকা চুরি করে নেয়। এরপর ক্লাস শেষে একা পেয়ে ২নং বিবাদী সাদিক ধারালো অস্ত্রের মুখে বাদীকে জিম্মী করে রাতের আধারে অফিসের মালামাল নিজ বাসায় সরিয়ে নিতে থাকে এবং জোর পূর্বক দোকানের চাবি কেড়ে নিয়ে বাদীকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে তাড়িয়ে দেয়। তারা খুবই উগ্র মেজাজী ও গুন্ডা মাস্তান টাইপের ব্যক্তি হওয়ায় এলাকায় কেহ তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস পায় না। ফলে কয়েক দফা আপোশ মিমাংসার চেষ্টা করেও কোন লাভ হয়নি। বিধায় কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বন্ধসহ বাদীর অপূরণীয় ব্যবসায়িক ক্ষতি সাধিত হয়।
এদিকে গত ০৫ এপ্রিল ২০২৫ইং তারিখ বিকেল ৩ ঘটিকার সময় নিকটস্থ এক প্রতিবেশীর ছেলের বিয়ের বৌভাত অনুষ্ঠানে দাওয়াতি মেহমান হিসাবে বাদী স্বপরিবারে উপস্থিত হলে ১নং ও ২নং বিবাদী আবু সাইদ ও সাদিক পরিকল্পনা মাফিক বার্মিজ চাকুর মুখে জিম্মি করে প্রশিক্ষক আশরাফুল ইসলামকে চর থাপ্পর, কিল ঘুষি মারতে থাকে এবং বাদীর কোলে থাকা ৩ বছরের শিশু কন্যাকে জখম করিবার ভয় প্রদান করে কন্যার গলায় থাকা ৬ আনা ওজনের স্বর্ণের চেইন ছিনতাই করে নেয় এবং শিশু কন্যাকে ছিটকে ফেলে দেয়। বাচ্চার চিৎকার শুনে বিয়ে বাড়ির লোকজন ছুটে আসলে ১নং ও ২নং বিবাদী ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত পালিয়ে যায়।উপরোক্ত বিষয়ে বাদী হয়ে প্রশিক্ষক আশরাফুল ইসলাম ০৮ এপ্রিল ২০২৫ইং তারিখে জেলা বগুড়ার সদর আমলী আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, বিবাদীদ্বয় বেকার, নেশাখোর ও সন্ত্রাসী শ্রেণীর ব্যক্তি হওয়ায় এলাকায় এমন কোন অপরাধমূলক কাজ নেই যা তারা করে না। রাস্তার প্যানা, ফেস্টুন, বিলবোর্ড ও সাইনবোর্ড পর্যন্ত তারা চুরি করে বাসায় নিয়ে যায়।তাদের বাসায় অনুসন্ধান করলে এমন অনেক কিছুর প্রমাণ মিলবে। এছাড়া বেশ কিছুদিন পূর্বে একজন হারবাল চিকিৎসক কে একই কায়দায় দোকান ছাড়া করে তারা তার মালামাল বিক্রি করে নিয়েছে। ভাড়াটিয়াদের বেকায়দায় ফেলার কৌশল হিসাবে তারা বেশিরভাগ সময় ভাড়া আদায়ের রশিদ ছাড়াই দোকানভাড়া উত্তোলন করে থাকে, ফলে মাঝে মধ্যেই দোকানদারদের সাথে ভাড়া ও বিদ্যুৎ বিলের হিসাব নিয়ে নানা বাক বিতন্ডা লেগেই থাকে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, তাদের এই অপরিকল্পিত ৩ তলা ভবনটি সম্পূর্ণ অবৈধভাবে নির্মান করা হয়েছে।প্রভাব খাটিয়ে গায়ের জোরে তারা পৌরসভার অনুমতি ব্যতিরেখেই কোনরুপ প্লান পাশ ছাড়া মেইন রোডের সাথে বৈদ্যুতিক খুঁটি ঘেষে এমন স্থাপনা নির্মান করেছে।
এ বিষেয়ে বগুড়া পৌরসভার এক জৈষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, অবৈধ স্থাপনার বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে, শিঘ্রই বিষয়টি খতিয়ে দেখে পৌরসভা আইনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে