বুধবার, ০৯ এপ্রিল, ২০২৫
13 Apr 2025 02:36 am
![]() |
পীরগঞ্জ(রংপুর) প্রতিনিধিঃ-রংপুরের পীরগঞ্জে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভুট্টার চাষ ভালো হয়েছে, চাষিরা নতুন ভুট্টা আনন্দে মাড়াই করছে। ধান-ভুট্টা ও সবজির রাজ্য খ্যাত এই করতোয়া নদীর বালু চর।এবার সেই বালু চরে চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক পরিমাণ জমিতে ভুট্টা চাষ করা হয়েছে।ভুট্টার ফলনও ভালো হয়েছে।
অনুকূলে আবহাওয়া ও আধুনিক কৃষি প্রযুক্তিতে কৃষকদের আগ্রহ সৃষ্টি হওয়ায় স্বল্প খরচে যথাসময়ে কৃষকরা এবার ভুট্টা মাড়াই শুরু করেছে।
খরচ কম হওয়ায় এ বছর ভুট্টার চাষে কৃষকরা বেশি ঝুঁকে পড়ছেন।মৌসুমের শুরুতেই নতুন ভুট্টার ক্রেতা কম দামও কম বলে কৃষকরা বলছেন।ভালো ফলনের আশায় উপজেলার কৃষকেরা রাতদিন পরিশ্রম করে যাচ্ছে।কৃষকদের পাশাপাশি বসে নেই কৃষি কর্মকর্তারাও।
কৃষি অফিসের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪/২০২৫ অর্থ বছরের ৮ হাজার ২ শত হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ করা হয়েছে।একটি পৌরসভা এবং ১৫ টি ইউনিয়নে ৮ শত ৭০ জন কৃষককে বিনামূল্যে সর ও বীজ প্রণোদনা হিসাবে বিতরণ করা হয়েছে।
উপজেলার করতোয়া নদীর চর অঞ্চলের অনেক চাষি বলছেন, অন্যান্য ফসলের তুলনায় বেশি লাভ ও আবাদ পদ্ধতি সহজ হওয়ার কারণে কৃষকেরা দিন দিন ভুট্টা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে।
পার কুমারপুর গ্রামের ভুট্টা চাষি মোজাহার আলি বলেন, গমের মতো ফসলের তুলনায় ভুট্টা চাষে লাভ বেশি হয়, এতে পরিচর্যাও কম লাগে। চরে ভুট্টার ফলন বেশি হয় এবং মাড়াই প্রক্রিয়াও বেশ সহজ। এ ছাড়াও একই জমিতে সাথি ফসলও চাষ করা হয়। মূলত এসব সুবিধার কারণেই কৃষকেরা ভুট্টা চাষে এখন বেশি আগ্রহী। একই এলাকার আরেক চাষি এনছার আলী জানান, শীত মৌসুমের শুরতেই এবং বালু চর থেকে পানি নেমে গেলে অক্টোবর-নভেম্বর মাসে ভুট্টার বীজ রোপণ করা হয় আলুর জমিতে। মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে ভুট্টা ঘরে উঠাতে শুরু করে। তবে চর এলাকায় এখন রবি মৌসুমে বেশি ভাগ জমিতে ভুট্টার চাষ করা হচ্ছে, কারন এই ফসলে খরচ কম সুবিধা বেশি।
উপজেলার বাটকে মারি গ্রামের চাষি মোনারুল ইসলাম জানান, কিছুদিন আগে সকল ফসলের চাষাবাদ করা হতো একসাথে। বালু মাটিতে অতিরিক্ত সেচ দেয়া লাগে এবং আগাছা পরিস্কার করতে লেবার পাট খরচ বেশি হয়। যে কারনে এলাকার চাষিরা ভুট্টা চাষে ঝুঁকছে।
ব্যবসায়ী মতিয়ার রহমান বলেন, সুবিধা মতো চাষিরা জমিতে ভুট্টা মাড়াই করে থাকে। আমরা ভুট্টা কিনে চাতালে নিয়ে রোদ দিয়ে যাচাই-বাছাই করে মোকামে পাঠাই বিক্রির জন্য। কৃষকদের উৎপাদিত ভুট্টা মন প্রতি ৮৫০ থেকে ৮০০ টাকায় কেনা হচ্ছে। অল্প সময়ের মধ্যে ব্যবসায়ীরা ভুট্টা কিনতে মাঠে নেমে যাবে, হয়তো তখন বাজার আরও বেশি হতে পারে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাদেকুজ্জামান সরকার জানান, বর্তমানে অনেক কৃষক ভুট্টার সঙ্গে সাথি ফসলেরও চাষ করছেন।আলুর জন্য আগেই জমিতে সার দিয়ে থাকেন সেই কারনে ভুট্টা চাষে সার কম লাগে। আবার ভুট্টার বীজ রোপণের আগেই অনেকে লালশাক, মুলা বা ফুলকপির মতো সবজির বীজও রোপণ করেন। ভুট্টার চারা মোটামুটি বড় হতে হতে এসব সবজি তুলে ফেলা যায়। এভাবে অনেকেই অধিক লাভবান হচ্ছেন। এছাড়াও আমাদের কৃষি বিভাগের লোকজন মাঠে ঘাটে চাষিদের কে চাষাবাদের জন্য পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে।
মোঃ আকতারুজ্জামান রানা পীরগঞ্জ,রংপুর