সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
25 Feb 2025 04:47 am
![]() |
কাহালু (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ বগুড়ার কাহালু উপজেলায় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে রিলে বা বিনা চাষে সরিয়া চাষ। রিলে বা সাথী পদ্ধতি অনেকের কাছে নতুন মনে হলেও দিন দিন জনপ্রিয়তা বাড়ছে এর। কম খরচে ভালো উৎপাদন হওয়ায় কৃষক এ পদ্ধতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হচ্ছেন। রিলে পদ্ধতির ফলে দুই ফসলি জমি এখন তিন ফসলিতে রুপান্তর হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় কাহালু উপজেলায় রিলে বা সাথী পদ্ধতিতে চাষাবাদ বেড়েছে। গত বছরের তুলনায় রিলে পদ্ধতিতে এবার তিনগুণ সরিষা চষাবাদ হয়েছে। তাই ভালো ফলনেরও স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা। এ পদ্ধতিতে একটি ফসল জমিতে থাকাকালীন বিনা চাষে অন্য একটি ফসল আবাদ করা যায়। এ পদ্ধতিতে অর্থ, পরিশ্রম ও সময় সাশ্রয় হয়। আমন ধান কাটার আগে ওই জমিতে সরিষার বীজ বপন করেন কৃষকরা। কৃষকরা এ সরিষা ঘরে তুলে আবারও নতুন করে বোরো ধান রোপন করতে পারেন।
কাহালু কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, এবছর কাহালু উপজেলায় ২৮টি বøকে ৬ হাজার ৩”শ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে রিলে বা বিনা চাষে ২০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে।
কাহালু উপজেলার মালঞ্চা ইউনিয়নের এরুইল গ্রামের মৃত রমজান আলীর পুত্র কৃষক মো. ইনছান আলী সহ উপজেলার একাধিক কৃষকদের সাথে কথা বলা হলে তারা জানান, আগে শুধু আমন ও বোরো ধানের আবাদ হতো, এখন সেই জামিতে আমনের ভেতর সরিষার বীজ ছিটিয়ে আরেকটি ফসল আবাদ করা হচ্ছে। এ কাজে আমাদেরকে উপ-সহকারি কৃষি অফিসারবৃন্দরা সহযোগিতা করেছেন। রিলে পদ্ধতিতে সরিষার ভালো ফলন দেখে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার অনেক কৃষক উদ্ধুদ্ধ হচ্ছেন।
কাহালু উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোসা. জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, রোপা আমন ধান কাটার ১০ থেকে ১৫ দিন আগে সাধারণত যে সকল জমিতে জো আসেনা বা পানি থাকেনা কিন্তু জমি কাঁদা কাঁদা ভাব থাকে সে সকল জমিতে সরিয়া ছিটিয়ে রোপন করা হয়। এটাকেই মূলত রিলে পদ্ধতি বলে। এ পদ্ধতিতে এক বিঘা জমির জন্য এক কেজি সরিষা বীজের প্রয়োজন হয়। এভাবে সঠিক সময়ে সরিষা চাষ করলে দেখা যায় যে, আবার বোরো ধানটাও যথা সময়ে আবাদ করা যায়। তিনি আরও বলেন, এবছর কাহালুতে রিলে পদ্ধতিতে সরিষা চাষের মাধ্যমে প্রায় ২”শ কৃষক স্বাবলম্বী হওয়ার পথে এগিয়ে যাচ্ছেন। এই উদ্যোগ দেশের কৃষি খাতে নতুন এক দিগন্তের সূচনা করেছে।
কাহালু উপজেলার মালঞ্চা ইউনিয়নের এরুইল বøকে কৃষক মো. ইনছান আলীর রিলে বা বিনা চাষে বারি সরিয়া-১৪ এর প্রদর্শনী পরিদর্শন করেছেন বগুড়া খামারবাড়ী বনানী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. মতলুবর রহমান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বগুড়া খামারবাড়ী বনানী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার কৃষিবিদ এ কে এম মফিদুল ইসলাম, কাহালু উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোসা. জান্নাতুল ফেরদৌস, অতিরিক্ত কৃষি অফিসার মো. মীর কাশিম আলী, কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার ইফতেখার রাসুল সিদ্দিক, তানভির হাসান, উপ-সহকারি কৃষি অফিসার এস এম আল আমিন, উপ-সহকারি উদ্ভিদ সংরক্ষণ অফিসার মো. মাসুদ রানা, মালঞ্চা ইউ পি সদস্য নজরুল ইসলাম, কৃষক ইনছান আলী প্রমুখ।