সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর, ২০২৪
12 Dec 2024 12:30 pm
স্টাফ রিপোর্টার : বগুড়ার শাজাহানপুরে পৈত্রিক সম্পত্তি নিয়ে দুই শরিকের মধ্যে চলা দীর্ঘ্য দিনের বিরোধের নিস্পত্তির প্রায় ৭মাস পর পুনঃরায় জবরদখল চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানাযায়, জেলা বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার গোহাইল ইউনিয়নের খন্ডক্ষেত্র গ্রামে পৈত্রিক জায়গা-জমি নিয়ে আশরাফুল ইসলাম রহিত দিং ও মোসলেম উদ্দিন দিং এর মধ্যে প্রায় শতবছরের বিরোধ ছিলো। প্রায় ১বছর পূর্বে গোহাইল ইউনিয়ন পরিষদে বাদীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে দফায় দফায় শালিশি বৈঠক শেষে প্রায় ৭মাস পূর্বে গত ২১/০৫/২০২৪ইং তারিখে উভয় পক্ষের কাগজপত্র পর্যালোচনা করে জজকোর্ট বগুড়া’র একজন সাবেক জি.পি’র আইনগত মতামত এর ভিত্তিতে ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিততিতে গোহাইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলী আতোয়ার তালুকদার ফজুর নির্দেশে স্থানীয় মেম্বার আব্দুল কুদ্দসের মধ্যস্থতায় সরকারি সার্ভেয়ার দিয়ে মাপযোগ করে ও গ্রাম পুলিশ দ্বারা খুঁটি পুতে সীমানা নির্ধারণ করে উভয় পক্ষের মধ্যে সম বন্টনের মাধ্যমে দীর্ঘ্যদিনের বিরোধ নিষ্পত্তি করেন স্থানীয় মেম্বার আব্দুল কুদ্দস। এরপর থেকে আশরাফুল ইসলাম রহিত দিং উক্ত বন্টনকৃত জমিতে যে কোন কাজ করতে গেলেই মোসলেম উদ্দিন দিং পক্ষ বিভন্ন অকথ্য ভাষায গালিগালাজ করতো এবং সুযোগ পেলেই জায়গার সাধ মিটিয়ে দিবো বলে হুমকি ধামকি দিতো। জীবিকার তাগিদে বাদী বগুড়ায় থাকার সুবাদে অভিযোগে উল্ল্যেখিত বিবাদীরা রাতের অন্ধকারে উদ্দেশ্য প্রনোদিত হয়ে উক্ত সম্পতি জোর দখলের উদ্দেশ্যে চেয়ারম্যান-মেম্বারদের শালিশ বৈঠককে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে গ্রাম পুলিশ দ্বারা পোতা খুটির উপর দিয়েই ৪টি বড় বড় খড়ের পালা দেয়। বাদী আশরাফুল ইসলাম রহিত মুঠোফোনে বিষয়টি জানতে পেরে অদ্য ৮/১২/২০২৪ইং সকাল ১০.০০টায় বিবাদীদের কাছে না জানিয়ে খড়ের পালা দেয়ার কারণ জানতে চাইলে বিবাদীগণ বিভিন্ন অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করতে থাকে এবং তোরা যদি বেশি বাড়াবাড়ি করিস তাহলে তোদেরকে জীবনে শেষ করিয়া ফেলিব বলিয়া প্রাণ নাশের হুমকিসহ বিভিন্ন ধররেণর ভয়ভিতী ও হুমকি দিতে থাকে। বিষয়টি সুরাহার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে বাদী স্থানীয় মেম্বার আব্দুল কুদ্দুসকে অবগত করলে তা জানতে পেরে বিবাদী এনামুল হক মুঠো ফোনেও বাদিকে বিভিন্ন অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করে ও দেখিয়ে নেয়ার হুমকি প্রদান করে। উক্ত ঘটনার বিষয়ে শাজাহানপুর থানায় ৮জনের নাম উল্ল্যেখ করে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এ বিষয়ে মেম্বার আব্দুল কুদ্দস এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঘটনার সত্যতার কথা মুঠোফোনে জানান এবং উক্ত ঘটনার বিষয়ে চেয়ারম্যানকে অবগত করে দ্রুত যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলেও জানান তিনি। উল্লেখ্য, গোহাইল ইউনিয়নের খন্ডত্রে গ্রামের মৌজা: খন্ডত্রে, জে.এল-২০৪, ১৯২০ সালের রেকর্ড অনুসারে সাবেক ১০৭ দাগে খোলা ৪৪ শতক, ১০৮ দাগে পুকুর ৩৫শতক ও ১০৯ দাগে বাড়ি ৩৯ শতক। এস.এ খতিয়ান-৩৪ ও সি.এস খতিয়ান-৩৭ মূলে উক্ত সম্পত্তির আটআনা অংশের মালিক মৃত:ময়েজ উদ্দিন মন্ডল ও মৃত: ময়েন উদ্দিন মন্ডল উভয়ের পিতা: মৃত: ফয়েজ উদ্দিন মন্ডল। তাদের মৃত্যুর পর ওয়ারিশ সূত্রে আট আনা অংশের মালিক আশরাফুল ইসলাম রহিত, শহিদুল ইসলাম , মকবুল হোসেন মন্ডল, আবু জাফর মন্ডল ও আকরাম মন্ডল দিং। অপর পে আটআনা অংশের মালিক মৃত: মজিবর রহমান মন্ডল, মৃত: মফেজ উদ্দিন মন্ডল ও মৃত: মহসিন মন্ডল, সকলের পিতা: মৃত: মানিক উল্লাহ মন্ডল। তারা আটআনা অংশের মালিক হওয়া সর্তেও উক্ত সম্পত্তির সিংহভাগ অংশ জবরদখল করে ভোগ দখল করতে থাকে এবং তাদের মৃত্যুর পর তাদের ওয়ারিশগণও একই ভাবে জবর দখলে রেখে উক্ত সম্পত্তি ভোগ করে আসছিলো। একাধিকবার গ্রাম্য সালিশে বিষয়টির প্রতিকার না পেয়ে অবশেষে আশরাফুল ইসলাম রহিত দিং বাদী হয়ে এই সম্পত্তির বৈধ হকদার হিসাবে অবৈধভাবে জবর দখলের বিরুদ্ধে গত ০৭/১২/২০২৩ইং তারিখে ৬নং গোহাইল ইউনিয়ন পরিষদে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে, উক্ত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলী আতোয়ার তালুকদার ফজু উল্লেখিত বিষয়ে তদন্তপূর্বক ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার আব্দুল কুদ্দুসকে সালিশি মিমাংসার দায়িত্বভার অর্পন করেন। তারই ধারাবাহিকতায় গত ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ইং, বুধবার চেয়ারম্যান আলী আতোয়ার তালুকদার ফজুর নির্দেশে সার্ভেয়ার ইউসুফ আলী মামুনসহ দুইজন দফাদারের সহযোগীতায় উভয় পরে দলিলপত্র পর্যালোচনা করে নালিশি সম্পত্তি মাপযোগ করে উভয়পকে পুর:রায় বৈঠকে বসিয়ে প্রথমে নালিশি ২১৩ দাগের ৪৪ শতক খোলা উভয়পরে মধ্যে সুষ্ঠুভাবে ভাগ-বন্টন করে প্রায় এবং নালিশি ২১২ দাগে ৩৯ শতক বাড়ি সমবন্টনের লক্ষ্যে অর্ধেক অংশ খুটি দ্বারা বিভক্ত করে প্রায় একশত বছরের অধিক সময় ধরে চলা বিরোধের নিস্পত্তি করেন। এর পরেও নানাভাবে কোন অদৃশ্য কারণে বারবার বিবাদীপক্ষ গায়ের জোর দেখিয়ে বৈধ পৈত্রিক সম্পত্তি জবর দখলের পায়তারা অব্যহত রেখেছে।