বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২৪
31 Dec 2024 01:42 am
প্রেস বিজ্ঞপ্তিঃ-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জনবল কাঠামো ও এমপিওনীতিমালায় (২০১৮) সৃষ্টি করা হয় চারু ও কারুকলা শিক্ষক পদ। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২০১৯ সালের ৩০ মে প্রকাশিত একটি বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, ২০২২-২৩ অর্থবছর থেকে এ পদে শিক্ষক নিয়োগ ও এমপিও দেওয়া হবে।
এখন বর্তমানে এমপিওভুক্ত বেসরকারি মাধ্যমিক পর্যায়ের বিদ্যালয়গুলোতে প্রয়োজন ২১ হাজারেরও বেশি চারুকলা শিক্ষক। আগামীতে যত সংখ্যক মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হবে এ সংখ্যা তত বৃদ্ধি পাবে।
নীতিমালা অনুযায়ী (২০২১ সংশোধনী) চারুকলা শিক্ষক পদে আবেদনের নূন্যতম যোগ্যতা চারুকলায় স্নাতক (পাস/অনার্স) অথবা যে কোন একটি সাবজেক্টে অনার্স/ডিগ্রি শেষে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এডভান্স সার্টিফিকেট ইন ফাইন আর্টস কোর্স কমপ্লিট করা। বয়সসীমা সর্বোচ্চ ৩৫বছর সাথে ‘এনটিআরসিএ’ থেকে নিবন্ধন।
এনটিআরসিএ প্রকাশিত ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনে চারুকলায় একটি বিশালসংখ্যক প্রার্থী আবেদন করেন। প্রায় ১৩ হাজার শিক্ষার্থী সেখানে নিবন্ধিত হওয়ার জন্য আবেদন করেন। কিন্তু প্রিলি পাস করে মাত্র ৩৫০০ জন লিখিত পরীক্ষা দেওয়ার জন্য উত্তীর্ণ হোন।
এনটিআরসিএ এবং পরীক্ষকের অবহেলায় লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নের ধারা ব্যবহারিক এবং তত্ত্বীয়তে পৃথক পৃথক পাস এই বৈষম্য জনক পাশ পদ্ধতির জন্য অধিকাংশ প্রার্থী লিখিত পরীক্ষার গন্ডী পার হতে পারেনি, সেখানে মাত্র ১৯২ জনকে উত্তীর্ণ করা হয়।
বর্তমান হিসাব অনুযায়ী, আগামী ৩০/৪০ বছরেও এনটিআরসিএ পক্ষে ২১/২২ হাজার চারুকলা শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া সম্ভব নয়। উক্ত কারণ, যারা শিক্ষকতায় আসতে আগ্রহী তাদের একটি অংশ বর্তমান শিক্ষক নিবন্ধনের কঠিন স্তর গুলো থেকে ঝরে পড়ছে কর্তৃপক্ষের অবহেলায়। চারুকলার প্রথম শিক্ষক নিবন্ধন ২০১৮ সালের ১৫তম নিবন্ধনের প্রিলিমিনারি টেস্টে চারুকলার মোট অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে মাত্র ২৬ জন। এদের মধ্যে ১৩জন চূড়ান্ত ফলাফলে উর্ত্তীণ হয়েছে।
তাহলে দেখা যাচ্ছে, দরকার ২১ হাজার শিক্ষক, কিন্তু একবছরে পাওয়া গেল মাত্র ১৩ জন শিক্ষক এবং ১৫, ১৬, ১৭ তম নিবন্ধনে সর্বমোট পাশ করে মাত্র ৭৯ জন। আগামীতে যদি প্রতি বছরে এ সংখ্যা ১৩ জন থেকে ৫০০ জনেও উন্নিত হয়, তবুও ২১ হাজার সৃষ্ট চারুকলা শিক্ষক পদ পূরণের জন্য ৪২ বছর লেগে যাবে।
এনটিআরসিএ এবং পরীক্ষকের অবহেলায় লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নের ধারা ব্যবহারিক এবং তত্ত্বীয় তে পৃথক পৃথক পাস ব্যবস্থা তুলে দিয়ে সকল শিক্ষার্থীকে মৌখিক পরীক্ষায় বসার সুযোগ চেয়ে এনটিআরসি কার্যালয়ে আন্দোলন করেছেন শিক্ষার্থীরা। তার পরিপ্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের দাবীগুলোকে আমলে নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রনালয় বরাবর চিঠি পাঠিয়েছে।
বাংলাদেশের মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে একদিকে যেমন শিক্ষক সংকট, তেমনি এই শিক্ষক সংকট পূরণে এনটিআরসি উদাসিন এবং অবহেলার ভূমিকা পালন করছে।১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনে চারু ও কারুকলায় লিখিত পরিক্ষায় ১৯২ জনকে পাশ করিয়ে চারু ও কারুকলা বৈষম্য সৃষ্টি করেছে।আন্দোলনরত চারু ও কারুকলা নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষার্থীদের দাবীগুলোকে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ে প্রেরণ করলেও এখনো পর্যন্ত এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান কোন উত্তর দেননি।
সংকট নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে মাধ্যমিক পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষক সংকট আরও বাড়বে এবং শিক্ষার্থীরা সঠিক শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন আন্দোলনরত চারুকলা শিক্ষার্থীরা।
সংবাদ প্রেরক,শফিক আজাদ