শনিবার, ০৬ জুলাই, ২০২৪
22 Nov 2024 05:12 am
শাহ্ আলী বাচ্চু জামালপুর জেলা প্রতিনিধিঃ-কয়েকদিনের টানা ভারী বর্ষণ ও পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে জামালপুরে যমুনা, ব্রহ্মপুত্র,জিঞ্জিরাম ও দশআনীসহ সব নদ নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।গত ২৪ ঘন্টায় যমুনা নদীর পানি বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে ৩১ সে,মিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে ৯৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছে জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড পানি মাপক গ্যাজ পাঠক আবদুল মান্নান।জেলার সাতটি উপজেলার মধ্যে ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জ মাদারগঞ্জ মেলান্দহ ও সরিষাবাড়ি উপজেলার নিম্নঞ্চল প্লাবিত হয়ে উচু এলাকায় দিকে প্রবেশ করতে শুরু করেছে বন্যার পানি।
নদী তীরবর্তী অঞ্চলে এরমধ্যে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক ২৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে।যমুনার পানি দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাওয়ায় সড়ক ভেঙে ইসলামপুর ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের সঙ্গে উপজেলা শহরের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।জামালপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ও ইসলামপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, ইসলামপুর উপজেলার ১১টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ১২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এছাড়া মেলান্দহ উপজেলায় ২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে।দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার ১৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে পানি ঢুকেছে। তবে এখন পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়নি। পানি আর একটু বৃদ্ধি পেলে সেগুলো বন্ধ করা হবে।ইসলামপুর ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল থেকে যমুনার পানি বাড়তে শুরু করে। রাত থেকে বিভিন্ন খাল, বিল ও যমুনার ছোট ছোট শাখা প্লাবিত হয়।
এ সময় পানি লোকালয়ে ঢুকতে শুরু করে। পানি বাড়ায় ইসলামপুর উপজেলার চিনাডুলী,কুলকান্দি,বেলগাছা, নোয়ারপাড়া ও সাপধরী ইউনিয়ন, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চুকাইবাড়ী, বাহাদুরাবাদ ও চিকাজানী ও মেলান্দহ উপজেলার ঘোষেরপাড়ক, মাহমুদপুর, নাংলা ইউনিয়নের নদীতীরবর্তী নিম্নাঞ্চল এবং দুর্গম চরাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। বিভিন্ন গ্রামের ফসলি মাঠ তলিয়ে গেছে।
এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে পানিবন্দি হয়ে পড়ার শঙ্কা করছেন তারা।দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফাতেমা সুলতানা বলেন, উপজেলার ১৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাঠে পানি ঢুকেছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। শুক্র ও শনিবার যেহেতু বন্ধ তাই এখনো বন্ধ ঘোষণা করা হয়নি। তবে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস কার্যালয়ের চারপাশে বন্যার পানি চলে এসেছে।
ইসলামপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা বলেন, বন্যার পানি বিদ্যালয়ে ঢুকে পড়ায় ১২টি মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
জামালপুর জেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আবু তারেক মো. রওনাক আখতার বলেন, বন্যার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ইসলামপুর উপজেলায় ১২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং মেলান্দহ উপজেলায় ২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
এদিকে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ইসলামপুর উপজেলার চিনাডুলী, নোয়ারপাড়া, কুলকান্দি,পাথর্শী, সাপধরী, বেলগাছা, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চিকাজানী, চুকাইবাড়ী ও বাহাদুরাবাদ; মেলান্দহ উপজেলার ঘোষেরপাড়া, আদ্রা, মাহমুদপুর, নাংলা ও কুলিয়া ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে।
পানি বেড়ে যাওয়ায় ইসলামপুর-গুঠাইল সড়কের দেলিরপাড় এলাকার ড্রাইভেশন ডুবে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।এছাড়া পানির তোড়ে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার দেওয়ানগঞ্জ-খোলাবাড়ি সড়ক ভেঙে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
জামালপুর জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন বলেন,যমুনা নদীতীরবর্তী এলাকাগুলোতে পানি প্রবেশ করছে। পানিবৃদ্ধি নিয়ে নদী তীরবর্তী অঞ্চলের তথ্য চাওয়া হয়েছে।এছাড়া বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব প্রস্তুতি রাখা হয়েছে।
জামালপুরের জেলা প্রশাসক মা. শফিউর রহমানের দাবি বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের সব প্রকার প্রস্তুতি রয়েছে।এরমধ্যে সব বিভাগের সঙ্গে জেলা প্রশাসনের জরুরি বৈঠক হয়েছে।বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রতিটি সেক্টর যার যার অবস্থান থেকে যথাযথভাবে কাজ করছে।
জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, দেওয়ানগঞ্জের যমুনার বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।আরো পানি বাড়ার শঙ্কা রয়েছে।