শুক্রবার, ০৫ জুলাই, ২০২৪
22 Nov 2024 03:29 am
৭১ভিশন ডেস্ক:- পুরুষের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতে আদায় করার চেস্টা করতে হবে। জামাতে নামাজ আদায় করার তাগিদ দিয়ে আল্লাহ বলেন, রুকুকারীদের সঙ্গে রুকু করো। (সুরা বাকারা, আয়াত: ৪৩)
রাসুলুল্লাহ বলেছেন, জামাতে নামাজ পড়লে একাকী নামাজের তুলনায় সাতাশ গুণ বেশি সওয়াব পাওয়া যায়। (বুখারি, হাদিস: ৬১৯)
জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করতে গিয়ে সাধারণত যেসব ভুল অনেকে করে থাকেন।
কাতার সোজা না করা
জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায়ের প্রথম ধাপ হলো কাতার সোজা রেখে দাঁড়ানো। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা অবশ্যই তোমাদের কাতার সোজা করে দাঁড়াবে, অন্যথায় আল্লাহ তোমাদের মাঝে শত্রুতা ও মতভিন্নতা সৃষ্টি করে দেবেন। (বুখারি, হাদিস: ৭১৭)
হজরত উমর (রা). নামাজের কাতারগুলো সোজা ও ঠিকঠাক করার জন্য কিছু লোককে দায়িত্ব দিয়ে রাখতেন। যতক্ষণ না কাতার পুরোপুরি সোজা হতো, ততক্ষণ তিনি তকবির বলতেন না। (তিরমিজি)
হাদিসে কাতার সোজা না রাখার ব্যাপরে কঠোর সতর্কবাণী উচ্চারণ করা হয়েছে। কাতার সোজা করার সহজ পদ্ধতি হলো মসজিদে কাতারের জন্য যে দাগ দেওয়া থাকে, পায়ের গোড়ালি সেখানে রাখা। সবার পায়ের পেছনের অংশ একই রেখায় থাকলে আপনা–আপনিই কাতার সোজা হয়ে যাবে। দাগে পায়ের গোড়ালি রাখাই কাতার সোজা করার পদ্ধতি।
সামনের কাতারে খালি জায়গা রেখে পেছনে দাঁড়ানো
সামনের কাতারে জায়গা ফাঁকা রেখে পেছনে দাঁড়ানো ঠিক নয়। নিয়ম হলো, প্রথমে সামনের কাতার পূর্ণ করবে। এরপর পেছনে নতুন কাতার করবে। এভাবে সামনে ভরে এলে ক্রমে ক্রমে পেছনের কাতার গড়ে তুলতে হবে।
জাবির ইবনু ছামুরাহ (রা.) বলেছেন, ‘একদিন রাসুলুল্লাহ (সা.) বেরিয়ে এসে আমাদের বললেন, ফেরেশতারা যেভাবে তাদের পালনকর্তার সামনে সারিবদ্ধ হন তোমরা কেন সেভাবে সারিবদ্ধ হও না? আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! ফেরেশতারা কীভাবে তাদের পালনকর্তার সামনে সারিবদ্ধ হন? রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, তারা (প্রথমে) সামনের কাতারগুলো পূরণ করেন এবং শীসাঢালা প্রাচীরের মতো ফাঁক-ফোকর বন্ধ করে কাতারে দাঁড়ান। (মুসলিম, হাদিস: ৪৩০)
কখনো কখনো দেখা যায়, জামাত শুরু হয়ে যাওয়ার পর কেউ কেউ মসজিদে এসে তাকবির বা রুকু পাওয়ার জন্য তাড়াহুড়ো করে পেছনে দাঁড়িয়ে যায়। অথচ তখনো সামনের কাতারে দাঁড়ানোর জায়গা ছিল। কেউ কেউ আবার একটু শারীরিক আরামের জন্য সামনের কাতার ফাঁকা রেখে পেছনে দাঁড়ায়। অথচ রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা সামনের কাতার আগে সম্পূর্ণভাবে পূর্ণ করো, তারপর এর পেছনের কাতার (এভাবে পর্যায়ক্রমে কাতারগুলো) পূরণ করো। যাতে করে অপূর্ণতা যদি থাকে, সেটা যেন সর্বশেষ কাতারেই থাকে। (আবু দাউদ, হাদিস: ৪৭১)
কাতারের মাঝখানে ফাঁক রেখে দাঁড়ানো
কাতার সোজা করার পর লক্ষ রাখতে হবে, কাতারের মাঝখানে যাতে কোনো ফাঁক না থাকে। অনেক সময় কেউ কেউ এমনভাবে ফাঁক রেখে দাঁড়ান যে যেখানে দুজন দাঁড়িয়েছেন, সেখানে খুব সহজেই তিনজন দাঁড়াতে পারত। হাদিসে এভাবে ফাঁক রাখতে নিষেধ করা হয়েছে। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাতার সোজা করার প্রতি জোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা কাতারগুলো সোজা ও সঠিক করো, পরস্পরের কাঁধ সমান্তরাল রেখো, ফাঁক-ফোকর বন্ধ করো। ইবনু উমার (রা.)–এর বরাতে আছে যে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা তোমাদের কাতারগুলো সোজা করে নাও, পরস্পর কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়াও, উভয়ের মাঝখানে ফাঁক বন্ধ করো আর তোমাদের ভাইদের হাতে নরম হয়ে যাও। (তিনি আরো বলেন,) শয়তানের জন্য কাতারের মাঝখানে ফাঁকা জায়গা রেখে দিও না। যে ব্যক্তি কাতার মেলাবে, আল্লাহও তাকে তাঁর রহমত দিয়ে মেলাবেন। আর যে ব্যক্তি কাতার ভঙ্গ করবে, আল্লাহও তার ওপর থেকে নিজের রহমত কেটে নেবেন। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৬৬৬)
ফেরদৌস ফয়সাল
প্রথম আলো