বুধবার, ০৬ মার্চ, ২০২৪
22 Nov 2024 12:10 pm
খোকন হাওলাদার, সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি:-জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) দুই হলের মাঝের দেয়াল অপসারণকে কেন্দ্র করে শহীদ রফিক জব্বার হলের সঙ্গে শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ হল ও শেখ রাসেল হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (৫ মার্চ) রাত ৯টায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।
সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এদের মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর।
জানা যায়, শহীদ রফিক জব্বার হল সংলগ্ন রাস্তায় দেওয়াল নির্মাণের ফলে দীর্ঘদিন ধরে যাতায়াতে অসুবিধাসহ বিভিন্ন ধরনের ভোগান্তি পোহাচ্ছিলেন শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ ও শেখ রাসেল হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা। সর্বশেষ গত সোমবার থেকে দেয়ালটি ভাঙার দাবিতে গণস্বাক্ষর গ্রহণ কর্মসূচি শুরু করে ওই দুই হলের শিক্ষার্থীরা। বিষয়টি জানাজানি হলে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দেয়ালটিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গ্রাফিতি অঙ্কনের চেষ্টা করে রফিক জব্বার হলের শিক্ষার্থীরা।
এসময় শেখ রাসেল হলের শিক্ষার্থীরা দেয়ালে বঙ্গবন্ধুর গ্রাফিতি অঙ্কনে বাধা দিলে দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে শেখ রাসেল হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাজউদ্দীন আহমদ হলের শিক্ষার্থীরা যুক্ত হয়ে রফিক জব্বার হলের শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দিলে তারা হলের ভেতরে চলে যায়। পরে উভয়পক্ষের মধ্যে কয়েক দফায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ, ধাওয়া ও পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় উভয় পক্ষের শিক্ষার্থীদের হাতে লাঠিসোঁটাসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দেখা গেছে। এছাড়া রফিক জব্বার হলের শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে সংঘর্ষের খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নুরুল আলম, প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান, হল প্রশাসনে দায়িত্বরত শিক্ষক, প্রক্টরিয়াল বডি ও নিরাপত্তা শাখার সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসেন। উভয় হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে রাত ২টার দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, আমি খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রক্টরিয়াল টিমকে নিয়ে ঘটনাস্থলে গেছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমরাও সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলম বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উভয়পক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা করছি। পরিস্থিতি এখন শান্ত আছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বছরের জানুয়ারি মাসে অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মিত ৬টি হলের মধ্যে মেয়েদের একটি ও ছেলেদের একটি আবাসিক হল খুলে দেওয়া হয়। এ সময় ছেলেদের নতুন হল (শেখ রাসেল হল) সংলগ্ন শহীদ রফিক জব্বার হলের কিছু ছাত্রলীগ নেতাকর্মী কয়েকটি দাবির কথা তুলে রাতারাতি দেয়াল উঠিয়ে দেয়। এতে বিপাকে পড়েন শেখ রাসেল হলের প্রায় হাজারখানেক শিক্ষার্থী।
তাদের অভিযোগ, হল ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার লিখিত ও মৌখিকভাবে দাবি-দাওয়া তুলে ধরার পরও দেয়াল অপসারণ বা ছোট ফটক তৈরির কোনোটাই করা হয়নি। এ কারণে শিক্ষার্থীদের অনেক দূর ঘুরে চলাচল করতে হচ্ছে।