বুধবার, ৩১ জানুয়ারী, ২০২৪
23 Nov 2024 08:04 am
গত ৭ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচনের দিন রাতে দেশের জনপ্রিয় নাট্যকার পরিচালক শিমুল সরকারের উপর পৈশাচিক হামলার প্রতিবাদে সহস্রাধিক মানুষ দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করে সন্ত্রাসীদের বিচার এবং রাজশাহীর বাঘা থেকে ইমো হ্যাকার ও মাদক ব্যবসায়ীদের নির্মুল করার দাবি জানিয়েছেন। ৩০ জানুয়ারি মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার গড়গড়ি ইউনিয়নের সরেরহাট বাজারে এই কর্মসূচি পালন করেন এলাকার সর্বস্তরের জনসাধারণ। প্রতিবাদী গানের মাধ্যমে কর্মসূচি শুরু হয়। ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী তাদের বক্তব্যে বলেন শিমুল সরকারের উপর হামলা যে দুজনের নেতৃত্বে হয়েছে সেই শাহীন এবং হাফিজ অত্র এলাকার ইমো হ্যাকার এবং মাদক ব্যবসার সিন্ডিকেট চালায়। এলাকার প্রতিটি মানুষ তাদের কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ। শাহীন নিজেকে পুলিশের সোর্স হিসেবে পরিচয় দিয়ে নানা ধরনের চাঁদাবাজিতে লিপ্ত থাকে সবসময়। মামলার আসামীদের বেশিরভাগই ইমো হ্যাকার। কয়েকদিন পূর্বেই এক আসামি মাসুম মানিকগঞ্জের এক লোকের পৌনে চার লাখ টাকা মেরে দেয়ার কেসে গ্রেফতার হয়। আরেক আসামি আরিফুল ইমো হ্যাকিং এর আরেক মামলায় গ্রেফতারের পর এখন জামিনে। এই গ্যাং বাঘা ভারত সীমান্তের ছয় সাম এলাকা দিয়ে ফেন্সিডিলের ব্যবসার সাথেও জড়িত বলে অনেকেই বলেছেন। ঢাকা থেকে এদের পরিচালনা করে হঠাৎ ধনী বনে যাওয়া এক বড়ভাই। এই সকল অবৈধ ব্যবসা করে ঢাকায় দুটি বাড়ি, এলাকায় ৩০ বিঘার এক বাগান বাড়ি, রাজশাহী শহরে জমি সহ অনেক কিছুই করে ফেলেছে। নাট্যকার পরিচালক শিমুল সরকার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এইসকল অসামাজিক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে মুখর ছিলেন বলে আগে থেকেই নানান হুমকি দিয়ে আসছিল তারা। শিমুল সরকার নিজেও এই মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন লাঠিতে ভর দিয়ে। তিনি জানান
৭ জানুয়ারি রাতে আমার উপরে যে হামলা হয়েছে তা নিয়ে নানা রকম মিথ্যাচারে আমি অবাক এবং ক্ষুব্ধ। একটি সংঘবদ্ধ ইমো হ্যাকার এবং মাদক কারবারী চক্র রাজশাহীর বাঘা উপজেলার সরেরহাট বাজারে চাইনিজ কুড়াল, হাতুড়ি, লোহার রড নিয়ে আক্রমণ করে আমাকে। মাথার পিছনে তিনটা কোপ দেয় তারা, এরপর ধস্তাধস্তিতে ৫ জনের সাথে পেরে না উঠে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাটিতে পড়ে গেলে আমার সারা শরীরে হাতুড়ি, রড চাইনিজ কুড়াল দিয়ে আঘাতের পর আঘাত করতে থাকে। পাশেই, ৫/৬ টি বাইক নিয়ে তাদের ড্রাইভারেরা ফুল পিকাপ এবং হর্ণ এর সাউন্ড করতে থাকে যেন আমার চিৎকার শোনা না যায়। আমি সম্পূর্ণ জ্ঞান অবস্থায় ছিলাম বলে ওদের সবাইকেই চিনে ফেলি। ওরা গালাগালি করছিল এবং বলছিল "ভাই এর সাথে পাঙ্গা নিস?" আমাকে বাচাতে এগিয়ে আসা আমার এক ভাতিজা সে দৃশ্য পুরোটা দেখেছে। অন্য দুই তিন জন অর্ধেক দেখেছে।
এই ভাই কে? এমন প্রশ্ন করে শিমুল সরকার কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তিনি বলেন আমার উপরে হামলার বিচার না হলে না হোক, কিন্তু সমাজ থেকে এইসকল গডফাদার এবং সাইবার ক্রাইম, মাদক চক্র যেন ধ্বংস হয়। তিনি আরও জানান, আমার উপরে হামলার রাতেই টেলিভিশন নাটকের পরিচালকদের সংগঠন ডিরেক্টরস গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক এস এম কামরুজ্জামান সাগর সেই কথিত গড ফাদারকে ফোন দিলে সে বলে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন, খরচ যা লাগে আমি দিচ্ছি। বাকিটা বুঝে নিতে আর কারও কোনো সমস্যা হবার কথা নয় যে কেন সে চিকিৎসা খরচ দিতে চায়?
উল্লেখ্য নাট্যকার পরিচালক শিমুল সরকারের উপর পৈশাচিক হামলার প্রতিবাদে ঢাকা থেকে নাটকের বড় বড় সংগঠনগুলো প্রতিবাদ এবং বিচার চেয়ে বিবৃতিও দিয়েছে। তারা এটাও জানিয়েছেন যদি অপরাধী চক্রের বিচার না হয় তাহলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেয়া হবে।