বুধবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৩
22 Nov 2024 04:37 pm
শাফায়াত সজল,বগুড়া জেলা প্রতিনিধিঃ- প্রত্যন্ত একটি গ্রাম দক্ষিণভাগ। বগুড়া জেলার সদর উপজেলার শেখেরকোলা ইউনিয়নে গ্রামটির অবস্থান।এই গ্রামেরই বাসিন্দা হলেন উজ্জ্বল। তার পুরো নাম এন,ই মুশফিকুর রহমান উজ্জ্বল।পেশায় একজন কৃষক।এই দক্ষিণভাগ দক্ষিনপাড়া গ্রামেই তার বেড়ে ওঠা। পিতা আবু হোসেন ছিলেন পেশায় স্কুলবশিক্ষক।বাবা মারা গেছেন প্রায় ৩ যুগ হতে চললো।৪ ভাই এবং ২ বোনের মধ্য তিনি হলেন চতুর্থ সন্তান।ছোট বেলা থেকেই উজ্জ্বলের গানের প্রতি একটা প্রবল ঝোঁক ও আগ্রহ ছিল।তিনি কয়েক মিনিট এর মধ্যেই যেকোন বিষয়ে গান লিখে ফেলতে পারেন।সমাজের বিভিন্ন অবক্ষয় নিয়ে স্বরচিত গান গুলো ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়েছে।
বাবা স্কুল শিক্ষক হওয়ার সুবাদে তিনি সেই সময় থেকে গান শেখা শুরু করেন নিজে নিজেই।আশেপাশের স্কুল কলেজের প্রোগ্রামে যেয়ে অতিথি শিল্পীদের কাছে গিয়ে দেখে দেখে রপ্ত করেন হারমোনিয়াম বাজানো।এমনকি নিজে নিজেই গান গাওয়া শুরু করেন বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান গুলোতে। উজ্জ্বল শিক্ষিত হলেও তার কিছু পিছুটানের জন্য নিজেকে এই সমাজে খুব একটা প্রতিষ্ঠিত করতে পারেননি। তিনি পার্শ্ববর্তী সাতশিমুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৮৯ সালে এসএসসি পাশ করেন। ১৯৯২ সালে মহাস্থান মাহীসওয়ার ডিগ্রী কলেজ থেকে এইচএসসি এবং সরকারি আযিযুল হক কলেজ থেকে ১৯৯৬ সালে ডিগ্রী পাশ করেন। এরই মাঝে তিনি চালিয়ে গেছেন তার গানের চর্চা। করেছেন অসংখ্য মঞ্চ অনুষ্ঠান।
মুশফিকুর রহমান উজ্জ্বল গানের প্রতি প্রবল আগ্রহ থেকে ২০০০ সালে রাজশাহীতে চলে যান এবং রাজশাহী বেতারের ততকালীন সঙ্গীত পরিচালক চপল সাহার সঙ্গীত পরিচালনায় নিজের লেখা গান এবং সুরে ২০০০ সালেই একটি অডিও ক্যাসেট বা এলবাম রিলিজ করেন। যার নাম দেওয়া ছিলো, ❝আচ্ছা খেলা দেখাইলা❞। সেই এলবামের একটি গান, ❝ও ছুড়ি তোর বাড়ি কোনা কুনটি, নাম না কলে যাবের দিমুনা সেটি❞- এই গানটি সেই সময়ে বেশ জনপ্রিয়তা পায়। বর্তমানে এখনো গানটি ইউটিউব ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।
উজ্জ্বল দাবী করেন এই জনপ্রিয় গানটি তারই নিজের লেখা ও সুর করা। যার সকল প্রমাণাদি তার নিকট সংরক্ষিত আছে বলে জানিয়েছেন। তিনি দুঃখ করে তিনি বলেন, "আমার এই গানটি অনেকে বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করে ইতিমধ্যে দেশ ও দেশের বাহিরে সুখ্যাতি ও সুনাম অর্জন করেছেন এতে আমার কোন দুঃখ নেই।দুঃখ হলো তারা গানের কথা ও সুরে আমার নাম লেখেন না। আমার এই গানটি গেয়ে অনেকে আর্থিক সুফল পেলেও আমি কিছুই পাইনি"।যদি কেহ আমার বলা গানটির মালিকানা তথ্যটি যাছাই বাছাই করতে চান তাহলে আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। আমি বর্তমানে ❝বাস্তব দুনিয়া❞ নামে একটি গানের দল গঠন করেছি। যেখানে মানিক, রবিন, রাজু ও মিলন নামের ৪ জন যন্ত্রশিল্পী রয়েছে।
তার ব্যাপারে জানতে চাইলে স্থানীয় বাসিন্দা ইয়াসিন আলী জানান,❝সেই ছোট বেলা থেকেই আমরা উজ্জ্বলকে গান করতে দেখছি। সে নিজে নিজে গান লেখে। তার গানে সামাজিক অসঙ্গতি গুলো প্রকাশ পেয়েছে। তার গান শুনে অনেকেই শিক্ষা অর্জন করবে বলে আশা করি❞।আরেক প্রতিবেশি আঃ বায়েস বলেন, ❝উজ্জ্বলের গান গেয়ে অনেকেই অর্থ আয় করলেও তার ভাগ্য ফেরেনি।তার গাওয়া গান ❝ঘুষ❞ এবং ❝টাকা❞ ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে❞।শিল্পী উজ্জ্বলের মা রাহেমা বেওয়া জানান, ❝আমার ছেলেটা ছোট বেলা থেকেই গান পাগল। তার মেধা খাটিয়ে একটি বিষয়ের উপর কয়েক মিনিটের মধ্যেই গান লিখে ফেলতে পারে। তার ভবিষ্যৎ আরো সুন্দর হোক, দেশ ও দেশের বাহিরে তাকে চিনুক এই আমার প্রত্যাশা❞।