সোমবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৩
22 Nov 2024 03:25 pm
সাইফুর রহমান শামীম,কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:- আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের দৌড়ে ছিটকে পড়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাকির হোসেন।
কুড়িগ্রাম ৪-(রৌমারী-রাজিবপুর-চিলমারী) আসন থেকে গত ২০০৯ সালে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রথম এমপি নির্বাচিত হন তিনি। পরবর্তীতে ১৪ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির (জেপি) প্রার্থী রুহুল আমিন বাইসাইকেল প্রতীকের কাছে তার শোচনীয় পরাজয় হয়।
এরপর ২০১৮ সালে দলীয় প্রতীক নৌকা নিয়ে তিনি আবার এমপি নির্বাচিত হন এবং গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান।
এরপরই শুরু হয় তার অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও সেচ্ছাচারিতামূলক কর্মকান্ড। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে তার নির্বাচনী এলাকায় সরকারি যায়গায় অবৈধ ভাবে দখল, ব্রহ্মপুত্র নদ খননের নামে কোটি টাকার বালু উত্তোলন করে বিক্রি, প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগের সময় নিজস্ব সিন্ডিকেট তৈরি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। সহকারী শিক্ষক নিয়োগের টাকা হাতিয়ে নেয়ার একটি ভিডিও সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে এলাকায় মন্ত্রী কে নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠে। এছাড়াও কাগজ কলমে প্রকল্প থাকলেও বাস্তবে অসংখ্য অদৃশ্য প্রকল্পের টাকা হাতিয়ে নেন তিনি।
এসব বিতর্কিত কর্মকান্ডের কারণে একদিকে দলের ভাবমূর্তি আমজনতার কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হয়।
মন্ত্রী জাকির হোসেন এমপির এসব দূর্নীতির কথা শিকার করেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য এ্যডভোকেট বিপ্লব হাসান পলাশ ও রৌমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি শহিদুল ইসলাম শালু।
এরকম পরিস্থিতিতে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত ও ত্যাগী নেতা কর্মীরা ধীরে ধীরে মন্ত্রীর স্বেচ্ছাচারিতামূলক আচরণের কারণে দল থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিতে থাকেন ।
এ সময় মন্ত্রী জাকির হোসেন স্থানীয় বিএনপি ও জামায়েতসহ স্থানীয় বিতর্কিত লোকজনদের সাথে নিয়ে সরকারি বরাদ্দের সিংহভাগ অর্থ লুটপাটের মহা উৎসবে মেতে উঠেন। এমনকি তার মন্ত্রীত্বের দাপটে কেউ মুখ খোলার সাহস পেত না।
এমন প্রেক্ষাপটে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে দেশের একমাত্র ঐতিহাসিক মুক্তাঞ্চল রৌমারী উপজেলা আওয়ামী লীগে উপদলীয় কোন্দল চরম আকার ধারণ করে।সর্বশেষ উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করতে ব্যর্থ হন সম্মেলনে উপস্থিত কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতৃবৃন্দ ।সম্প্রতি রৌমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ১৫ জন প্রার্থী একজোট হয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাকির হোসেনের আমলনামা লিখিতভাবে দলীয় মনোনয়ন বোর্ডে দাখিল করলে তা প্রধানমন্ত্রীর নজরে আসে।আর এ কারণেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন এবারে নৌকা থেকে ছিটকে পড়েন।