রবিবার, ০৫ নভেম্বর, ২০২৩
03 Dec 2024 11:25 pm
৭১ভিশন ডেস্ক:- অ্যাজমা রোগীদের জন্য শীতকাল হতে পারে বছরের সবচেয়ে কঠিন সময়। ঠান্ডা, শুষ্ক বাতাস এবং আবহাওয়ার হঠাৎ পরিবর্তন অ্যাজমা রোগীদের শ্বাসনালীকে অস্বস্তিকর অবস্থার মাঝে ফেলতে পারে।
শীতকালে অ্যাজমার মাত্রা কেন বেড়ে যায়?
শীতকালে অ্যাজমা রোগীদের লক্ষণগুলো খারাপ হওয়ার অনেক কারণ রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বাইরের বাতাস শুষ্ক থাকা। আমাদের ফুসফুসের বায়ুপথ তরল স্তর দ্বারা সুরক্ষিত থাকে যা ঠান্ডা বাতাসের সংস্পর্শে এলে বাষ্পীভূত হয়ে শ্বাসনালীতে প্রভাব ফেলে। এছাড়াও আমাদের শ্বাসনালীতে শ্লেষ্মার একটি প্রতিরক্ষামূলক স্তর রয়েছে যা
বাইরের ঠান্ডা আবহাওয়ায় ঘন হতে পারে এবং সাধারণ সর্দি বা ফ্লুর মতো শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।
শীতকালে অ্যাজমার লক্ষণগুলো কি আলাদা?
শীতের মাসগুলোতে অ্যাজমার লক্ষণগুলো অন্যান্য মাসের লক্ষণগুলোর মতোই, তবে পার্থক্য হচ্ছে, লক্ষণগুলো স্বাভাবিকের চেয়ে তীব্র এবং শীতের আবহাওয়ায় সেগুলো নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে যায়। লক্ষণগুলোর মাঝে রয়েছে বুকে ব্যথা, কাশি, শ্বাস নিতে সমস্যা, বুকে চাপাভাব ইত্যাদি।
শীতকালে অ্যাজমা অ্যাটাক প্রতিরোধে কিছু টিপস
অ্যাজমার লক্ষণগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখাটাই হতে পারে অ্যাজমা রোগীদের জন্য সুস্থ থাকার অন্যতম কৌশল। জেনে নিন প্রয়োজনীয় কিছু পরামর্শ।
১। অ্যাজমার লক্ষণগুলোকে প্রভাবিত করে এমন প্রভাবকগুলো এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। যেমন মাইট, ধুলাবালি ইত্যাদি। এই প্রভাবকগুলো থেকে নিজেকে নিরাপদ রাখতে নিয়মিত ঘরের বিছানার চাদর পরিষ্কার করতে হবে এবং সপ্তাহে একদিন গরম পানিতে ধোয়া জরুরি। পুরো ঘর পরিষ্কার রাখবেন এবং শোয়ার ঘরে পোষা প্রাণী রাখবেন না।
২। নিজেকে হাইড্রেটেড রাখতে প্রচুর পানি এবং ক্যাফেইনমুক্ত চা পান করুন।
৩। ঠান্ডা এবং ফ্লুর মতো শ্বাসযন্ত্রের রোগ প্রতিরোধে দুই হাত নিয়মিত সাবান এবং পানি দিয়ে ধোঁয়া জরুরি। আশেপাশে কেউ অসুস্থ হলে তাদের এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। কাশি আসলে টিস্যু বা কনুই ব্যবহার করুন।
৪। বাইরে বের হলে গরম পোশাক পরিধান করুন ঠিক মতো।
৫, ফ্লু এর যে ভ্যাকসিনগুলো আছে সেগুলো নিয়ে নিন। এগুলো ফ্লুতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।
৬। বাইরে যাওয়ার সময় ইনহেলার সঙ্গে রাখুন সবসময়।
৭। ধূমপায়ীদের বা ধূমপানের ধোঁয়ার সংস্পর্শে না থাকার চেষ্টা করুন।
৮। বাইরে যাওয়ার সময় অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করুন।
সর্বোপরি অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে প্রতিদিনের অ্যাজমার ওষুধ সঠিকভাবে নির্দেশিত নিয়মে খেতে হবে। এরপরেও যদি লক্ষণগুলো তীব্র হয়, দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।
লেখক: ডা. কামরুজ্জামান নাবিল
এমবিবিএস, ইস্পাহান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ইরান