শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
22 Nov 2024 01:39 pm
ছাদেকুল ইসলাম রুবেল,গাইবান্ধাঃ- চলতি মৌসুমের শুরুতে পলাশবাড়ীর কৃষকরা নানা প্রতিকূলতা পার করে রোপণ করেছেন আমন ধানের চারা। ইতোমধ্যে ধান ক্ষেত সবুজ আকার ধারণ করেছে। এরমধ্যে কিছু সংখ্যক ক্ষেতে শুরু হয়েছে ‘পাতা ব্লাস্ট’ রোগের আক্রমণ। এতে সবুজ ক্ষেত ধীরে ধীরে হলদে থেকে বাদামি রঙে পরিণত হচ্ছে। এ নিয়ে ফসল দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা।
সম্প্রতি সরেজমিনে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর ও পলাশবাড়ী উপজেলাসহ জেলার বেশ কিছু মাঠে দেখা গেছে- রোপা আমন ধানের ক্ষেতে পাতা ব্লাস্ট রোগের আক্রান্ত। কেউ বা বলেছেন এটি খোল পেড়া বা পঁচা রোগ। এর ফলে ধানের পাতা পচে বিনষ্ট হচ্ছে। এ রোগ প্রতিরোধে কিটনাশক প্রয়োগ করেও কাজে আসছে না বলে কৃষকদের অভিযোগ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জীবন জীবিকার জন্য পলাশবাড়ী অধিকাংশ মানুষ কৃষির ওপর নির্ভশীল। এ উপজেলার শতকরা প্রায় ৭০ ভাগ জনসাধারণ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কৃষি ফসল ঘরে তুলে তাদের মৌলিক চাহিদা পূরণে চেষ্টা করে। এসবের মধ্যে সবচেয়ে লাভজনক ফসল হচ্ছে রোপা আমন ধান। আর আমন চারা রোপণের সময় প্রত্যেক বছরে বন্যা দেখা দিলেও এ বছরে তেমনটা প্রভাব পড়েনি। আমন চারা রোপণের বেশিরভাগ সময়ে খরার কবলে পড়তে হয়েছিল। অধিকাংশ কৃষক বাড়তি খরচে সেচ দিয়ে রোপণ করেছেন এই ধানচারা।
এবার অধিক ফলনের আশায় ইতোমেধ্য পরিচর্যা ও সার প্রয়োগ শেষের দিকে। এরই মধ্যে ধান ক্ষেত সবুজ রঙ ধারণ করায় বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা কৃষকের মুখে হাসি ফুটছিল। আর এই মুহূর্তে সেই হাসি যেন ম্লান হয়ে যাচ্ছে তাদের। বর্তমানে বেশ কিছু মাঠে দেখা দিয়েছে পোকামাকড়ের আক্রমণসহ পাতা ব্লাস্ট বা খোল পঁচা রোগের প্রাদুর্ভাব। এ কারণে ধান ক্ষেত এখন হলদে থেকে বাদামি রঙে পরিণত হয়েছে। কৃষকের স্বপ্নের ক্ষেত বিনষ্টের আশঙ্কা মাথায় বাজ পড়েছে।কৃষক মহিন উদ্দিন বলেন, এবার আমি দুই বিঘা জমিতে রোপা আমন ধানের আবাদ করেছি। এর শুরুতে খরার কবলে সেচ দিয়ে চারা রোপণ করতে হয়েছে। সেই সঙ্গে অতিরিক্ত দামে শ্রমিক ও চারা ক্রয়সহ সার প্রয়োগ করেছি। এখন সেই ক্ষেত পঁচারি রোগ দেখা দিয়েছে। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে কিটনাশক প্রয়োগ করেও কাজে আসছে না।
আরেক কৃষক আজগার আলী বলেন, ধান ক্ষেতে রোগবালাই দেখা গেলেও দেখা যাচ্ছে না কৃষি কর্মকর্তাদের। তাই দোকানিদের পরামর্শে কিটনাশক কিনে প্রয়োগ করছি।পলাশবাড়ীর উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা নাজমা সিদ্দিকা বলেন, ধানের খোলপোড়া ও খোল পঁচা রোগের জন্য নাভারা, তারেদ, এসিবিন, টিপঅফ (এজক্সিস্ট্রবিন+সিপ্রোকোনাজল) কিটনাশক বিঘাপ্রতি (৩৩ শতক) ১৫ মিলি ও ১০ লিটার পানি মিশ্রিত করে স্প্রে করে দিতে হবে। অথবা এমিস্টার টপ, এমিস্কোর, সানজক্সি ১০ মিলি ও ১০ লিটার পানিতে প্রয়োগ করতে হবে। এসব ওষুধ প্রয়োগ করলে ওই রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।গাইবান্ধা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক খোরশেদ আলম জানান, চলতি মৌসুমে প্রায় ১ লাখ সাড়ে ২৭ হাজার হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষাবাদ হয়েছে। এসব খেতে পোকামাকড় ও রোগবালই প্রতিরোধে কৃষকদের পরামর্শ অব্যাহত রয়েছে।