শুক্রবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
21 Nov 2024 12:23 pm
শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ
বগুড়ার শেরপুরে শাহ বন্দেগী ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম এর ভূয়া নাম ব্যবহার করে ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ এর বিরুদ্ধে অভিযোগ করায় প্রতিবাদ জানিয়ে শেরপুর থানায় জিডি করেছে ওই ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম। ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমার নাম ও মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে কে বা কাহারা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনলাইনের (ঙহষরহব এজঝ ঝুংঃবস) মাধ্যমে জেলা প্রশাসক বরারব অভিযোগ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। তিনি নিজেই সে বিষয়ে কিছুই জানেন না। ইউপ সদস্য আরও বলেন আমি গত ২৭/০৭/২০২৩ খ্রিঃ তারিখে রাত্রি ১২.০৪ ঘটিকার সময় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি তার মোবাইল নম্বর ০১৫৫২-১৪৬২২৪ থেকে আমার ০১৭৪০-৮০৬০৬৩ একটি মেসেজ প্রদান করে। উক্ত ম্যাসেজে বলা হয় আমি অভিযোগ দাখিল করেছি। যার ট্রাকিং নং-০১৭৪০৮০৬০৬৩০০০১ এবং একই তারিখে রাত্রি ১২.১০ মিনিটে আরো একটি অভিযোগ দাখিলের ম্যাসেজ আসে যার ট্রাকিং নং-০১৭৪০৮০৬০৬৩০০০২। অথচ আমি থানায় বা অন্য কোথাও কোন বিষয়ে কোন অভিযোগ না করায় বর্নিত মোবাইল নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। যার ফলে গত ২ সেপ্টেম্বর শেরপুর থানায় জিডিও করেছি। কে বা কারা আমার নাম ব্যবহার করে ভুয়া মিথ্যা এই অভিযোগটি দায়ের করেছেন তা তিনি জানেন না।
এদিকে ইউপি চেয়ারম্যান কাজী আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে ওঠা অনিয়ম দুনীতির অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। বগুড়া জেলা প্রশাসকের নির্দেশে উপজেলা প্রকৌশলী লিয়াকত হোসেনকে আহ্বায়ক করে ওই কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ওবায়দুল হক ও মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সুবীর কুমার পাল। বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) উপজেলা প্রশাসনের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র এই তথ্য জানায়।
গঠিত ওই কমিটিকে আগামি সাত কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। জানা যায় উপজেলা শাহ বন্দেগী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাজী আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে বারো টি অনিয়ম দুনীতির অভিযোগ এনে পরিষদের বেশ কয়েকজন ইউপি সদস্য অনলাইনের মাধ্যমে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগে বলা হয়,শাহ বন্দেগী ইউনিয়ন পরিষদের জায়গা ক্রয়ের নামে প্রায় ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান কাজী আবুল কালাম আজাদ। এছাড়া বাড়ির হোল্ডিং ট্যাক্স, ব্যবসা বানিজ্যের ট্যাক্স বাবদ বিগত ২ বছর অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। ইউনিয়ন পরিষদেও তিনবছর ১% এর যে টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তার সিংহভাগ টাকার কোন হদিস নেই। হতদরিদ্রদের কর্মসৃজন প্রকল্পের শ্রমিকের পারিশ্রমিকের টাকা, ভিজিডি,ভিজিএফ, মা ও শিশু ভাতা, বয়স্ক ও বিধবা ভাতার কার্ড বিতরণেও অনিয়ম করা হয়েছে। জন্ম নিবন্ধন, ট্রেড লাইসেন্স, প্রত্যয়ন, ওয়ারিশিয়ান সনদ প্রাপ্তিতেও সীমাহীন ভোগান্তি ও মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন ওই ইউপি চেয়ারম্যান। এমনকি গ্রাম আদালতে বিচার প্রার্থীদের হয়রানি ও গোপনে টাকা নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। অভিযোগে আরোও বলা হয় ইউনিয়ন পরিষদের কোন কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত হয়নি। এমনি কি পরিষদের মাসিক কোন সমন্বয় সভা করা হয় না। এসব বিষয়ে প্রতিবাদ করলে ইউপি সদস্যদের নানামুখী হুমকী ধামকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
চেয়ারম্যান কাজী আবুল কালাম আজাদ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরের বিষয়টি স্বীকার করলেও এটি ভুয়া অভিযোগ আখ্যায়িত করে বলেন, যার নাম ব্যবহার করে অনলাইন (ঙহষরহব এজঝ ঝুংঃবস) যে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে সেই ইউপি সদস্য জাহাঙ্গির আলম অভিযোগ দাখিলের কথা অস্বিকার করে নিজেই থানায় জিডি করেছেন যে তার সাথে অভিযোগের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই।
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমাদের আটজন ইউপি সদস্যের নাম উল্লেখ করে ওই অভিযোগটি দেওয়া হলেও আমার নামে আবেদন জমা ও আমার মোবাইল নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আমি কোন অভিযোগ দায়ের করিনি এবং পাশাপাশি অভিযোগে আমার নাম ব্যবহার করায় থানায় আমি সাধারণ ডায়েরি করেছি।
জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক উপজেলা প্রকৌশলী লিয়াকত হোসেন বলেন, অভিযোগ গুলো গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা হবে। সে অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।