শনিবার, ১৮ মার্চ, ২০২৩
29 Nov 2024 03:29 am
শাহ্ আলী বাচ্চু জামালপুর প্রতিনিধিঃ- লিচু গাছের প্রতিটি ডগা এখন প্রস্ফুটিত মুকুলে সয়লাব। সকালের স্নিগ্ধ রোদের ঝিলিক যেন সোনা ঝরে পড়ছে। মৌমাছির দল লিচু ফুলের গায়ে উপড়ে পড়ছে। গুন গুন শব্দে মাতোয়ারা। এ যেন সত্যি অন্যরকম অনুভূতি।
লিচুর রাজ্য নামে পরিচিত জামালপুর সদর উপজেলার শরিফপুর ইউনিয়নের শ্রীরামপুর, রঘুনাথপুর,রাঙ্গামাটিয়া ও শীতলকুর্শা এলাকা লেচুর জন্য বিখ্যাত ও লেচুর গ্রাম নামে খ্যাত শ্রীরামপুর। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে জামালপুর এবার লিচু ও আমের ভালো ফলন হবে বলে আশা করছেন বাগান মালিকরা। করোনা কালিন সময়ে গত দুই বছরের ক্ষতি এবার পুষিয়ে নেওয়ার স্বপ্ন দেখছেন এ জেলার বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা।রসালো ফল লিচুর মুকুলে ভরে উঠছে গাছগুলো। জানান দিচ্ছে লিচুর আগমনী বার্তা। গত বছরের মত এবারও বাম্পার ফলনের আশা করছেন লিচু চাষিরা। জামালপুর সদর উপজেলায় এবার সব লিচু গাছেই মুকুল শুভা পাচ্ছে।
সারাদেশ থেকে অনেকেই টসটসে রসালো লিচুর স্বাদ নিতে জামালপুর সদর উপজেলার শ্রীরামপুর,রঘুনাথপুরসহ আশেপাশে গ্রামে আসেন। এখানকার লিচুর আগাম আসে বলে এর খ্যাতি সারা দেশে রয়েছে। বাম্পার ফলনের আশায় ইতোমধ্যেই মৌসুমি চাষীরা গাছের নিয়মিত চর্চা করছেন।
উপজেলার লিচু বাগান ঘুরে দেখা গেছে, বাণিজ্যিকভাবে লিচু বাগান ছাড়াও অনেকে বাসা-বাড়িতে লিচু গাছ লাগিয়েছেন। তাদের রোপণ করা বেশিরভাগ বাগানেই ফুটেছে লিচুর মুকুল।
উপজেলার শ্রীরামপুর,রঘুনাথপুর ও রাঙ্গামাটিয়া গ্রাম ঘুরে শ্রীরামপুরের লিচু বাগান মালিক অমল মিয়া জানান, বেশিরভাগ গাছে লিচুর মুকুল ধরেছে। এবার বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
উপজেলার শ্রীরামপুর পূর্ব পাড়ার অবসরপ্রাপ্ত সৈনিক ডা,খাদেমুল ইসলাম বলেন, ‘এমন কোনো বাড়ি নেই যে বাড়িতে লেচুগাছ নেই। প্রতিটি বাড়ির লেচু গাছে মুকুল এসেছে। এসব মুকুলের সুবাস মৌমাছি মুকুলে মধু সংগ্রহ করতে গুণ গুণ গানে মুগ্ধ করছে মানুষের মন’।এ ছাড়া ওই এলাকার লিচু চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখন মুকুলগুলো টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন নিয়মিত পরিচর্যা আর কৃষি অফিসের সহযোগিতা দরকার । মুকুল ধরে রাখতে পারলেই ফলন বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপজেলা কৃষিকর্মকর্ত দিলরুবা ইয়াসমিন বলেন, এবার একটু আগেই লিচু ও আম গাছে মুকুল এসেছে। উপজেলার প্রায় ৪হাজার লিচু বাগান রয়েছে।
প্রতিটি লিচু বাগানে মুকুল এসেছে। তবে বৈরী আবহাওয়া না হলে যে হারে মুকুল ধরেছে, তাতে ফলন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যেতে পারে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ জাকায়িরা সুলতানা বলেন, ‘এই জেলায় উন্নত মানের লিচু উৎপন্ন হয়ে থাকে। এসব জাতের মধ্যে রয়েছে চায়না টু, চায়না থ্রি , বোম্বাই, মাদ্রাজি, কাঠালি, হাড়িয়া, এলাচি, বারি টু বালি থ্রি, বেদন এবং সবচেয়ে জনপ্রিয় দেশী জাতের লিচু। বর্তমানে চাষিরা বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত রয়েছে। আমরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে প্রতিনিয়ত লিচু চাষিদের উন্নত জাতের লিচু উৎপাদনে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। সেই সাথে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার করা থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করছি। জৈব রাসায়নিক পদ্ধতিতে লিচু উৎপাদনের জন্য কৃষিবিভাগ নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।’