বৃহস্পতিবার, ০৯ মার্চ, ২০২৩
12 Mar 2025 02:54 pm
![]() |
ছাদেকুল ইসলাম রুবেল,গাইবান্ধাঃ গাইবান্ধায় গোবিন্দগঞ্জের কামদিয়া ইউনিয়নে চকমানিকপুর গ্রামের মো. মমতাজ উদ্দিনের বড় ছেলে মো. মশিউর রহমান (৩১) তার সাবেক স্ত্রী মোছা.মাফি আক্তার মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগী মশিউর রহমান জানান, গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার বববনপুর (পারগয়রা) গ্রামের মো. রোমান মণ্ডলের বড় মেয়ে মোছা. মাফি আক্তারের সাথে পারিবারিক আলোচনায় গত ২০১০ সালের ১৯ জুলাই এক লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা দেনমহরে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। বিবাহের পর তাদের সংসার জীবন ভালোভাবেই চলছিলো, কিন্তু হঠাৎ গত ২০১২ সালে ২৮ সেপ্টেম্বর তার ডিভোর্সি স্ত্রীর দাদি স্ট্রোক করে মারা গেলে মাফি আক্তার বাবার বাড়ি চলে যায়। তার দাদির মৃত্যুর পরবর্তী কুলখানির পূর্বে ৫ম দিনে, মশিউর রহমান শ্বশুরবাড়ি গিয়ে দেখেন তার স্ত্রী নেই। পরে শাশুড়িকে জিজ্ঞাসা করেন স্ত্রী মাফি কোথায় উত্তরে জানায় বাড়ি নেই, তবে আসবে।
পরোক্ষণে মশিউর রহমান তার জেঠাশ্বশুর বাড়ি গিয়ে লোকমুখে জানতে পারেন তার স্ত্রী আগের দিন রাত ১২টায় মুন নামে একটি ছেলের সাথে মটরসাইকেলযোগে পালিয়ে যায়, এবং তাকে ফিরিয়ে আনার জন্য তার বাবা, চাচা, জেঠা, সকলেই ছেলের বাড়ি যায়। মশিউর রহমান ওইদিন আরো জানতে পারেন, তার ডিভোর্সি স্ত্রী বিয়ের সাতদিন পূর্বেও নাকি একই ছেলের সাথে পালিয়ে গিয়ে, বেশকিছুদিন বগুড়ায় মুনের আত্মীয়ের বাসায় আত্মগোপনে ছিল তারা। সেখান থেকে তাকে ফিরিয়ে আনা হয়। এমনকি নিজ গ্রামেও পাশ্ববর্তী বাড়ীর শামিম নামে ছেলের সাথেও প্রেম ভালোবাসায় জড়িয়ে পরে এবং শামিম, মাফির সম্পর্ক আত্বীয়তা সূত্রে চাচা-ভাতিজি বিধায় পারিবারিকভাবে শামিমের সাথে বিয়ে দেয়নি তাঁর বাবা মা। যা মশিউর রহমানের বাবা মা,আত্মীয় স্বজনদের বিষয়টি জানা ছিল না। পরবর্তীতে আত্মীয় স্বজনসহ গ্রাম্য সালিশ বৈঠকে মাফি আক্তার, মশিউর রহমানের কাছে তার এহেন অপরাধের ভুল বুঝতে পেরে ক্ষমা চাইলে মশিউর রহমান তাকে ক্ষমা করে দিয়ে পুনরায় ঘর সংসার শুরু করেন। সংসার জীবনে ২০১৭ সালে ১ জুলাই তাদের মাশিয়া রহমান মিজা(৬) নামে কন্যা সন্তান জন্ম হয়।
পরবর্তীতে আবারো মাফি আক্তার ২০১৯ সালে পার্শ্ববর্তী গ্রাম গোয়ালপাড়ার জুয়েল নামীয় একটি ছেলের সাথে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পরে এবং তারা দীর্ঘদিন মোবাইলে অডিও, ভিডিও কলে কথা বলতো এবং নিজ শরীরের অশ্লীল ছবি ম্যাসেঞ্জারে আদান-প্রদান করতো। সে সময় মাশিয়া রহমান মিজা(২) বছরের শিশুকে ফেলে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে, তার বাবা-মার বাধায় পালিয়ে যেতে ব্যর্থ হয়। সে সময় মশিউর রহমান চাকরির সুবাদে ঢাকায় বসবাস করতো। বিষয়টি নিয়ে আবারও গ্রাম্য সালিশ বৈঠকে মাফি আক্তার, এহেন অপরাধের ভুল বুঝতে পেরে ক্ষমা চাইলে মশিউর রহমান তাকে ক্ষমা করে দিয়ে পুনরায় ঘর সংসার শুরু করেন।
পরবর্তীতে ২০১৯ সালের এহেন ঘটনার কারণে মশিউর রহমান ঢাকা হতে বদলি নিয়ে নিজ থানায় যোগদান করেন এবং ২০২১ সালে একই অফিসে অনলাইন সেবা সংক্রান্ত কল সেন্টারে মাফি আক্তার চাকরিতে যোগদান করেন। চাকুরি করা সময়ে আবারও পার্শ্ববর্তী গ্রাম বালুপাড়ার রউফ নামে ছেলের সাথে মোবাইলে প্রেমের সর্ম্পকে জড়িয়ে যায়। সে সময় রউফ বিভিন্ন ফেক ইমু মাধ্যম মশিউর রহমানকে মাফি আক্তারের অশ্লীল ছবি পাঠিয়ে, অনলাইনে ছবি প্রকাশ করবে মর্মে ভয়ভীতি দেখাতো। ছবিগুলো সংরক্ষিত আছে। সে সময় হঠাৎ একদিন মশিউর রহমান, মাফি আক্তারকে না জানিয়ে শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে দেখেন মাফি আক্তার অন্য রুমে লুকিয়ে মোবাইলে কারো সাথে কথা বলছে। এমন সময় মশিউর রহমান তার হাত থেকে মোবাইলটি ছিনিয়ে নেয়। মোবাইলটি ছিনিয়ে নেয়ার পর দেখেন, এটা মশিউর রহমানের কিনে দেয়া মোবাইল নয়। সে মোবাইলটি মশিউর রহমান তার কাছে কিছুদিন চালু রাখলে বিভিন্ন নম্বর থেকে কল আসলে জানা যায় মোবাইলটি তার পরকীয়া প্রেমিক রউফের কিনে দেয়া। বিষয়টি নিয়ে আবারও গ্রাম্য সালিশ বৈঠক বসা হলে, মাফি আক্তার উক্ত বৈঠকে ভুল স্বীকার করে বলেন, আর জীবনেও এ ধরনের ভুল কাজ করবো না মর্মে আবারও সংসার জীবন শুরু করেন।
বারবার মাফি আক্তার বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত থাকার কারণে মশিউর রহমানের বাবা মা তাদেরকে পরিবার থেকে আলাদা ঘরসংসার করার নির্দেশ দিলে মশিউর রহমান স্ত্রী, সন্তানকে নিয়ে গোবিন্দগঞ্জ একটি ভাড়া বাসাতে বসবাস শুরু করেন। বসবাস করা অবস্থায় মশিউর রহমান দিনের বেলায় অফিস যাতায়াত করতো, এবং বাসায় প্রায় সময় মাফি আক্তার তার সন্তান মাশিয়াকে নিয়ে একাই থাকতো। এখানেও সে স্বামী মশিউর রহমানের দিনের বেলায় অনউপস্খিতির সুযোগে আবারও মোবাইলে পঞ্চগড় সদরের রবিউল করিম নামে একটি ছেলের সাথে প্রেমের সর্ম্পকে জড়িয়ে যায়। এরপর ২০২২ সালের ১১ সেপ্টেম্বর মাফি আক্তারের জেঠা মো. রবিউল ইসলাম রুবু মারা গেলে মাফি আক্তার গোবিন্দগঞ্জ ভাড়া বাসা হতে মশিউর রহমান কে না জানিয়ে রাত ৮টায় তার বাবাবাড়ি চলে যায়। পরদিন সকালে মশিউর রহমান জানাজা নামাজ শেষে গোবিন্দগঞ্জ ভাড়া বাসায় ফিরে আসার ৩দিন পর মাফি আক্তারকে নেয়ার জন্য শ্বশুরবাড়ি গেলে মাফি আক্তার বলে, সে বাসাতে যাবে না এবং সংসারও করবে না। পরে বিষয়টি নিয়ে উভয়পক্ষ বৈঠক বসার সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠক বসার দিন ধার্য করা হলে, তার পূর্বেই ২০২২ সালের ৩০ অক্টোবর মাফি আক্তারের বাবা মো. রোমান মন্ডল, নাতনী মাশিয়া রহমান মিজা ও মাফিকে গোবিন্দগঞ্জ বাল্যশিক্ষা স্কুলে মোটরসাইকেলযোগে রেখে যায়। রেখে যাওয়ার কিছু সময় পর মাফি আক্তার মেয়ে মাশিয়া রহমান মিজা কে স্কুলের শ্রেণীকক্ষে রেখে কাউকে কিছু না জানিয়ে রিকশাযোগে আবারও কোথাও পালিয়ে যায়।
সংবাদ পেয়ে বাবা মশিউর রহমান তাৎক্ষণিক স্কুলে হাজির হয়ে দেখেন মেয়ে মাশিয়া প্রচুর কান্নাকাটি করছে। পরবর্তীতে মশিউর রহমান, মাফি আক্তারের বাবা মো. রোমান মন্ডলকে বিষয়টি জানায়। রোমান মন্ডল বিষয়টি জানার পর স্কুলে হাজির হয়ে জামাই মশিউর রহমানকে নিয়ে গোবিন্দগঞ্জ শহরে অনেক খোঁজাখুজি করিয়া না পাইলে, ৩১ অক্টোবর রোমান মন্ডল তার জামাই মশিউর কে সাথে নিয়ে থানায় হাজির হয়ে সাধারণ ডায়েরি করেন। যার নং-১৭২৭, তারিখ:-৩১/১০/২০২২ইং। পুলিশি তৎপরতায় ৫ নভেম্বর রাত ২টায় ঢাকা মোহাম্মদপুরের এক ভাড়া বাসা হতে মো. রবিউল করিম নামে ছেলেসহ তাকে আটক করা হয়। ৯ নভেম্বর ঢাকা হতে মাফি আক্তারকে বাবার বাড়িতে এনে উভয়পক্ষ গ্রাম্য সালিশ বৈঠক বসে। সে সময় মাফি আক্তার বলে, সে আর সংসার করবে না, ডির্ভোস চায়, উভয় পক্ষের সমঝোতায় এক লাখ ৫০ হাজার টাকা দেনমোহর নগদ পরিশোধ করে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। একই বৈঠকে বিচারকগণ মেয়ে মাশিয়া রহমান মিজা কে মায়ের জিম্মায় দিতে চাইলে মা,মাফি আক্তার তা অস্বীকার করে এবং গোবিন্দগঞ্জ নোটারি পাবলিকের অ্যাফিডেভিট ঘোষনাপত্র-৩৬৯/২২,,তারিখ:-০৯/১০/২০২২ইং, মূলে মাশিয়া রহমান মিজাকে তার বাবার জিম্মায় শেচ্ছায় দেওয়া হয়। পরবর্তীতে গত ১৫ জানুয়ারি/২৩ গোবিন্দগঞ্জ থানায় মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে, পুলিশসহ রাত সাড়ে ১০টায় মশিউর রহমানের বাড়িতে হাজির হয়, মাশিয়ার মা, নানা, খালা, খালু, ইত্যাদি অনেক লোকজন নিয়ে যায়। তার অভিযোগ, ২০২২ সালের ৫ ডিসেম্বর মশিউর রহমান, মেয়েকে নানাবাড়ি হতে দাদা দাদীর সাথে দেখা সাক্ষাৎ এর জন্য ভুলিয়ে ভালিয়ে নিজ বাড়িতে আনে এবং তাকে জোরপূর্বক আটকে রাখে। পরে মেয়ে মাশিয়া রহমানের জবান বন্দিতে বিষয়টি মিথ্যা বলে প্রমানিত হয়।
এতেও তারা ক্ষান্ত হয়নি, পরবর্তীতে গত ২৪ জানুয়ারি বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ২য় আদালত গাইবান্ধায় মিথ্যা অভিযোগ এনে ধারা-১০০, আইনে, মশিউর রহমানকে ১নং এবং তাঁর পিতা মমতাজ উদ্দিনকে ২নং, ও মাশিয়া রহমান মিজাকে ভিকটিম হিসেবে মামলা রুজু করেন। মামলায় তার বর্ণনাতে উল্লেখ করেন মশিউর রহমান, আত্বীয়তা ভঙ্গকারী, যৌতুকলোভী ও পরঅন্যায়কারী। ২০২২ সালের ৫ ডিসেম্বর মশিউর রহমান মেয়েকে নানাবাড়ি হতে ভুলিয়ে ভালিয়ে নিজ বাড়িতে আনে এবং তাকে জোরপূর্বক আটকে রাখে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। বর্তমানে মিথ্যা বানোয়াট মামলায় মশিউর রহমান, মাশিয়াসহ পরিবারের সকলেই মানবতার জীবন যাপন করছেন