শনিবার, ০৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
22 Nov 2024 12:46 pm
শাহ্ আলী বাচ্চু জামালপুর প্রতিদিনঃ-জামালপুরে সরকারের প্রণোদনায় সার এবং উন্নত জাতের বীজ বিনামূল্যে পেয়ে চলতি মৌসুমে সরিষা চাষে ব্যস্ত সময় পার করেছেন জামালপুর জেলার ৭টি উপজেলার গ্রামগন্জের কৃষকরা।
আবহাওয়া অনূকূলে থাকায় বাম্পার এ বছর বাম্পার ফলনের আশা করছেন করছেন কৃষক কৃষাণীরা। সরিষার বাম্পার ঔলনে তাদের মুখে রঙিন হাসি ফুটে উঠেছে। সরিষার হলুদ রংগের হাসি যেন ফুটে আছে কৃষক কৃষাণীর স্বপ্ন।
এ বছরের চেয়ে আগামী মৌসুমে সরিষার চাষাবাদ আরও বৃদ্ধি পাবে। আস্ত আস্ত সরিষার চাষ বৃদ্ধি পাবে এবং
তেল আমদানি হ্রাস পাবে বাংলাদেশে।
আপর দিকে চাষিরা অধিক মুনাফা লাভ করবে বলে দাবি করছেন জেলা ও উপজেলা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা।
কয়েক বছর ধরে ‘বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট’ উদ্ভাবিত উচ্চ উচ্চ ফলন শীল (উফশী) জাতের সরিষা চাষে কৃষকদের উদ্ধুূদ্ধ করে কৃষি বিভাগ।
জামালপুর জেলার প্রত্যেকটি মাঠে দিকে তাকালে চোঁখে পড়েে হলুদের সমারোহ সরিষার ক্ষেত।মনে হয় কোন এক রমণীর বিশাল শাড়ি কাপড় ছড়িয়ে রেখেছে বিস্তৃত মাঠে। আবার কিছু কিছু মাঠ দেখা যায় পাকা যায় শুধু পাকা হলুদের সমারোহ। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষক সরিষার আবাদ করেছে প্রাণ খুলে।৭০/৮০ দিনের মধ্যে আবাদে কৃষকদের বেশি একটা খরচ হয় না বলে তাঁরা সরিষার চাষ করে থাকেন।
আমন ধান উঠার পর পর কৃষকেরা জমি চাষ করে অথবা অনেকেই ধান কাটার পর হালচাষ না করে ওই জমিতে ছিটিয়ে সরিষার আবাদ করে থাকেন। জামালপুর উপজেলার শরিফপুর ইউনিয়নের রাঙ্গামাটিয়া গ্রামের কৃষক মেহেদী হাসান কনক বলেন, গত বছর দু বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করে ফলন ভাল ভালো পাওয়া এ বছরও প্রায় পাঁচ বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছি।
ইতিমধ্যে কিছু কিছু জমি থেকে সরিষার গাছ উঠাতেও শুরু হয়েছে। যদি আবহাওয়া ভালো থাকে তাহলে কৃষকরা বুকভরা আশা বেঁধেছে। নিজ নিজ চাহিদা মেটানোর পর বিক্রি করে অনেক লাভবান হবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর(খামারবাড়ি) সূত্রে জানা যায়, ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীত থাকলেও জেলায় এবার সরিষার ভাল ফলন হয়েছে। এছাড়া এ জেলার প্রত্যেকি উপজেলার মাটি সরিষা চাষের জন্য বিশেষ খুবই উপযোগী।জামালপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও ইউনিয়ন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সরিষা চাষীদের যথাযথ পরামর্শ ও সহযোগীতা করছেন মাঠে পর্যায়ে তৃণমূল কৃষকদের।
জামালপুর খামার বাড়ির উপপরিচালক জাকারিয়া সুলতানা এই প্রতিবেদক কে জানান, এ জেলায় চলতি মৌসুমে২৭ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। অর্জিত হয়েছে ৩২ হাজার ৫০০ হেক্টর। গত বছর নির্ধারণ করা হয়েছিল ২২ হাজার ৫০০ হেক্টর, অর্জিত হয়েছিল ২৩ হাজার ৪০০ হেক্টর।
গত বছরের তুলনায় এ বছর সরিষার চাষ বেশি হয়েছে।তিনি আরও জানান, এ বছর জেলার ৭টি ৬৮ টি ইউনিয়নে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে সরিষা উৎপাদন বেশী হবে বলে আশা প্রকাশ করেছন। ইতিমধ্যে জেলার বিভিন্ন গ্রামে সরিষা উঠানো শুরু হয়েছে। কোনো প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে অল্প কিছু দিনের মধ্যেই সম্পুর্ণ সরিষা উঠানো এবং মাড়াইয়ের কাজ শেষ হবে। কৃষকদের কৃষি বিভাগ থেকে সার্বক্ষণিক পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। কৃষকরা সরিষা উত্তোলন করে বোরো ধান চাষ করতে পারেন বলে এটাকে ‘ ফাও ফসল’ বলে মনে করেন সরিষা চাষিরা।
ইসলামপুরের ইনদুল্লাবাড়ী গ্রামের সরিষা চাষি আব্দুল আজিজ জানান, গত বছর প্রতি মণ সরিষা ১৮-১৯ শত টাকায় বিক্রি হয়েছে। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে সয়াবিন তেলের দাম বেশী। নতুন সরিষার বাজারে কৃষকেরা ৩১-৩২ শত টাকায় বিক্রি করছ। এবছর সরিষার চাষ পদ্ধতি খুব সহজ ও কম খরচে অল্প সময়ে খুবই লাভজনক ফসল।