শনিবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০২৩
27 Dec 2024 05:01 pm
খোকন হাওলাদার, গৌরনদী (বরিশাল) প্রতিনিধিঃ প্রযুক্তির অপব্যবহার বাড়ায় দিন দিন কালের আবর্তে হায়িয়ে যাচ্ছে এক সময়ের অন্যতম বিনোদনের মাধ্যম গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী পুতুল নাচ। গ্রামগঞ্জের হাট-বাজার কিংবা খোলা মাঠের মঞ্চে এখন আর চোখে পড়ে না পুতুল নাচের আসর। পুতুল নাচ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অর্থকষ্টে দিন পার করছে বরিশালের আগৈলঝাড়ার ঐহিত্যবাহী “দি তিশা পুতুল নাচ”সহ অন্তত ৫টি পতুল নাচের দলের এর মালিক ও শিল্পীরা। পুরনো পেশা আগলে রেখে এ পেশার সাথে জড়িত জীবিকা নির্বাহ করা মানুষগুলো অর্থের অভাবে মানবেতর জীবন যাপন করছে। আগৈলঝাড়ায় ৫টি পুতুল নাচের দল ছিল এর মধ্যে দি তিশা পুতুল নাচ, দি গ্রাম-বাংলা পুতুল নাচ, দি থ্রি-স্টার অপেরা, মনফুল পুতুল নাচ, দি আল্পনা পুতুল নাচ।
একসময় গ্রামগঞ্জ, হাট-বাজার কিংবা খোলা মাঠে মঞ্চ সাজিয়ে বসতো পুতুল নাচের আসর। রঙ-বেরঙের বাহারী পুতুল সাঁজিয়ে তার সাথে সুতা বেঁধে হাতের কারুকাজের পাশাপাশি বাদ্য, গান, নাচ ও অভিনয়ের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হতো এক ফুল দুই মালি, কাশেম মালার প্রেম, বেহুলা সুন্দরী, নৌকা বাইচ, সাগরভাসাসহ বিভিন্ন পালা।
পুতুল নাচের এই পালা দেখতে ১০ থেকে ২০ টাকা দিয়ে টিকেট কেটে ভিড় করতো দর্শনার্থীরা। এখন আর চোখে পড়ে না সেই দৃশ্য। প্রযুক্তির অপব্যবহার দিন দিন হায়িয়ে যাচ্ছে এক সময়ের বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী এই পুতুল নাচ। সরকারিভাবে ঐতিহ্যবাহী এই পুতুল নাচ প্রদর্শন বন্ধ করে দেওয়ায় বিপাকে পড়েছেন বরিশালের আগৈলঝাড়ার পেশাদার পুতুল নাচের সংগঠন এর মালিক ও শিল্পীরা।
পুতুল নাচের দলের সাথে জড়িৎ মানিক বিশ্বাস,পপি ভাকুক, সজল বালাসহ শিল্পীরা আগৈলঝাড়ার ঐতিহ্যবাহী পুতুল নাচের দল “দি তিশা পুতুল নাচ” এর মালিক ননী সরকার জানান,এক সয়ম পুতুল নাচের আসর নিয়ে ব্যস্ততার মধ্যেদিয়ে সময় পার করতাস। একটি ২৫ জন লোক কাজ করতো, ১৫ বছর যাবত পুতুল নাচ না থাকায় অন্যকাজ করছি। ২০১১ সালে আমার পুতুল নাচের দলের লাইসেন্স বরিশাল ডিসি অফিসে নবায়ন করতে গেলে লাইসেন্স নবায়ন হবে না বলে আমাকে জানায়। ঘরে বসে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে প্রায় ৫ লাখ টাকার পুতুল নাচের সরঞ্জামসহ বিভিন্ন ধরণের পুতুল। এই আবহমান গ্রাম-বাংলার ঐহিত্যবাহী পুতুল নাচ প্রদর্শনের সরকারের সহযেগিতা কামনা করছি।
আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.সাখাওয়াত হোসেন সাংবাদিকদের যানায়, পুতুল নাচ প্রদর্শনের অনুমতির বিষয়টি আমার ভালো জানা নেই। লাইসেন্স নবায়নের জন্য আমার কাছে কেউ আসলে আমি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যোগাযোগ করার জন্য বলব। জেলা প্রশাসকের সাথে সভায় আমি এ বিষটি অলোচনা করবো।
এ ব্যাপারে আগৈলঝাড়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রইচ সেরনিয়াবাত জানান, পুতুল নাচ আবহমান গ্রাম বাংলার একটি ঐতিহ্য ফুটিয়ে তোলা হতো। এখন আর সেই দৃশ্য চোখে পরে না। তাই এই পুতুল নাচ’কে টিকিয়ে রাখতে বেসরকারি দাতা সংস্থাগুলোকেও এগিয়ে আশা দরকার।