শুক্রবার, ২৭ জানুয়ারী, ২০২৩
27 Dec 2024 12:59 pm
৭১ভিশন ডেস্ক:- বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) সুইজারল্যান্ডের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ড সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করতে এলে একথা জানান শেখ হাসিনা।
সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম।
আগামী জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন কমিশন আইন প্রণয়নের পর সরকার সার্চ কমিটির মাধ্যমে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করেছে। বিদেশি পর্যবেক্ষকরা নির্বাচন তদারকি করতে আসবে এবং তারা স্বাধীনভাবে তাদের কাজ করবে। দেশের নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ স্বাধীন। নির্বাচন কমিশন এবং তাদের বাজেটের ওপর সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দল, যার ভিত্তি তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত রয়েছে। এই রাজনৈতিক দলের (আওয়ামী লীগ) জন্ম গণমানুষের ভেতর থেকে।
বিএনপি ও জাতীয় পার্টির সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির জন্ম সেনানিবাস থেকে। এ দুই দলের প্রধান প্রথমে অবৈধভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে রাষ্ট্রপতি হন, পরে তারা তাদের রাজনৈতিক দল গঠন করেন। জনগণের মধ্যে তাদের কোনো ভিত্তি নেই।
জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কে তিনি বলেন, তারা ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত ছিল। জনগণের মধ্যে তাদেরও কোনো ভিত্তি নেই।
শেখ হাসিনা আশা প্রকাশ করে বলেন, আগামী নির্বাচনে জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দিলে তারা আবারও সরকার গঠন করবে।
তিনি বলেন, গত ১৪ বছরে সরকার দেশের ব্যাপক রূপান্তর ঘটিয়েছে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে জনগণ আওয়ামী লীগ ও তার জোটকে দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় ভোট দেয়ার কারণে এটা সম্ভব হয়েছে। আওয়ামী লীগ সবসময় জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করে এবং গণতন্ত্রের বিকাশে কাজ করে।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১০ লাখের বেশি মিয়ানমারের নাগরিক বাংলাদেশের জন্য বোঝা। মিয়ানমারের সব নাগরিককে নিজ দেশে প্রত্যাবর্তনে সমর্থন প্রসারিত করার জন্য সব পশ্চিমা দেশের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্বের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, কোভিড ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশগুলোকে কষ্টে ফেলেছে। এই যুদ্ধে কাদের লাভ, শুধু অস্ত্র বিক্রেতারাই লাভবান হচ্ছে। বিশ্বের উচিত অবিলম্বে এই যুদ্ধ বন্ধ করা।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে সুইস রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ড বলেন, বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হচ্ছে এবং তার দেশ মসৃণ উত্তরণে বাংলাদেশকে সমর্থন অব্যাহত রাখবে।
রোহিঙ্গা ইস্যু প্রসঙ্গে তিনি মনে করেন, দ্রুত রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফিরে যাওয়া উচিত।
তিনি বলেন, ‘আমি বাংলাদেশের প্রতিটি এলাকা পরিদর্শন করেছি। দেশের উল্লেখযোগ্য এবং চিত্তাকর্ষক উন্নয়ন প্রত্যক্ষ করে মুগ্ধ হয়েছি। আমি সবসময় বাংলাদেশের শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে থাকব।’
নাথালি চুয়ার্ড বলেন, ‘বাংলাদেশকে কোভিড-১৯ মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং জলবায়ু পরিবর্তনসহ কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। আমি আশা করছি যে বাংলাদেশ এই সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে আরও এগিয়ে যেতে পারবে।’
তিনি গণতন্ত্রের মান, এর স্থিতিশীলতা এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্কের প্রশংসা করেন। সেই সঙ্গে
নারীর ক্ষমতায়নের, অগ্রগতিরও ভূয়সী প্রশংসা করেন।
অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এ সময় উপস্থিত ছিলেন।