বৃহস্পতিবার, ১৯ জানুয়ারী, ২০২৩
26 Nov 2024 03:24 pm
শাহ্ আলী বাচ্চু জামালপুর প্রতিনিধিঃ- জামালপুর সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ফসলি জমির মাটি কেটে অবৈধভাবে নিয়ে যাচ্ছে ইটভাটায়। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শরিফপুর ইউনিয়নের শ্রীরামপুর,মির্জাপুর, রঘুনাথ পুর ও রাঙ্গামাটিয়া গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে বিক্রি করছে একটি প্রভাবশালী মহল। দিনরাত ভেকু দিয়ে মাটি কেটে তা স্থানীয় গোদাশিম চৌরাস্তায় মেসার্স কাকলী ব্রিকস ফিল্ডেসহ বিভিন্ন ইটভাটায় নেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয় লোকজন জানান, যেখান থেকে মাটি কাটা হচ্ছে সেখানে খালে পরিণত হচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে ভারী বর্ষণে বৃষ্টির পানিতে মাটি কাটা জমি নদীতে পরিনত হবে। বর্ষা বৃষ্টির পানিতে শরিফ পুর, জয়রামপুর, মির্জাপুর, রাঙ্গামাটিয়া, রঘুনাথপুর, শ্রীরামপুর,রামপুর ও শীতলকুর্শা মৌজার ফসলি জমির ফসল নষ্ট হলে ৭/৮ টি গ্রামের হাজার পরিবারের সদস্য ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
জামালপুর সদর উপজেলার শরিফ পুর ইউনিয়নের রাঙ্গামাটিয়া ও মির্জাপুর মৌজার বিস্তীর্ণ এলাকায় মাটি কাটার জন্য গত কয়েক বছর ধরে বোরো মৌসুমে ইরি বোরো আবাদি জমি পতিত পড়ে আছে। এতে বোরো মৌসুমে ধান না পেয়ে কৃষক পরিবারের সদস্যরা মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে। সরিষাসহ বিভিন্ন শস্যক্ষেত থেকে মাটি কাটছে ভেকু দ্ধারা গভীর গর্ত করে মাটি কাটা হচ্ছে। মাটিবাহী মাহিন্দ্র গাড়ি ও ট্রাক চলাচলের জন্য কৃষি জমির মাঝখান দিয়ে রাস্তা তৈরি করা হয়েছে।
এতে রাস্তা তৈরির জমির উর্বরতা কমে যাচ্ছে৷ মাটিভর্তি যানবাহন দিনের বেলা লোকালয় দিয়ে চলাচলে সময় ধূলাবালি ও ট্রাকের কালো ধূয়া বাতাসে উড়ে মানুষের সর্দি কাশিসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এবং গভীর রাত পর্যন্ত ট্রাকগুলো চলাচল করায় ট্রাকের শব্দে অপর দিকে ট্রাকে ব্যবহৃত হাইড্রলিক হর্ণ ব্যবহার করা জন্য মানুষের ঘুম ব্যহৃতসহ পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। অন্য দিকে সরকারি পাকা সড়ক দিয়ে মাটি বহন করে রাস্তা নষ্ট করলেও প্রতিবাদ করার সাহস রাখেনা এলাকাবাসী এ ব্যাপারে এলাকা সচেতনমহল জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ কে জানালেও তারা মাটি কাটা বন্ধ করতে পারেনি। প্রথমে একখন্ড জমির মালিককে বেশী টাকা প্রলোভন দেখিয়ে জমিতে ৩/৪ ফুট গর্ত করে মাটি কাটা শুরু করে। পাশ্ববর্তী জমি উচু হয়ে গেলে সেই জমির মালিক মাটি দিতে বাধ্য হয়। এভাবে চলতে থাকে মাটি কাটার মহোৎসব। এইভাবেই কৃষকদের ফাঁদে ফেলে ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি কম দামে কিনে ইটভাটাসহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করছে বেশকিছু কূচক্রিমহল। আর ইটভাটা মালিকেরা ভালোমানের মাটি কম দামে পেয়ে তা কিনে নিচ্ছেন খুশিতে।
সরজমিনে গেলে স্থানীয় ভুক্তভোগী কৃষকেরা এই প্রতিবেদক কে জানান,দিনরাত অনেকগুলো ভেকু দিয়ে মাটি কেটে ৩০-৪০টি ট্রাকে করে লোকালয় দিয়ে মাটি যাচ্ছে বিভিন্ন ইটভাটায়। মাটি কাটার ফলে সেখানে জলাভূমিতে পরিনত হচ্ছে আবাদি জমি। বর্ষায় ওই এলাকার গ্রামগুলির ৫-৬ হাজার পরিবারের লোকজন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। স্থানীয় প্রভাবশালী ইটভাটার মালিকেরা প্রভাব দেখিয়ে মাটি কেটে নিচ্ছে নিজ নিজ ভাটাতে। বিষয়টি জামালপুর জেলা প্রশাসক, পরিবেশ অধিদপ্তর, উপজেলা নির্বাহী কমকর্তা ও এসিল্যান্ড মহোদয়দের জানানো হলেও ইটভাটার মাটি কাটার বন্ধের কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বলে জানান।
শ্রীরামপুর স্কুলের একজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, স্কুলের পাশ্বের রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন শতশত ট্রাক আসাযাওয়া করছে। স্কুলে এখন ক্লাস শুরু হয়েছে। ছাত্র ছাত্রী রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে ট্রাকের সাথে র্দূঘটনা ঘটে যে কোন মহূর্তে ঝরে পড়তে পারে কোমলমতি শিক্ষার্থী তরতাজা প্রাণ। এরকম র্দূঘটনা ঘটে ছিল ছোট জয়রামপুর গ্রামে। শ্রীরামপুর গ্রামের সেলিম জানান, অবৈধভাবে মাটি কাটায় আবাদি জমির ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। জরুরিভাবে বিষয়টি বন্ধ করার দরকার তিনি প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।