রবিবার, ০৮ জানুয়ারী, ২০২৩
25 Nov 2024 01:13 am
৭১ভিশন ডেস্ক:- স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, বঙ্গবন্ধু এই রাজারবাগ মাঠে বলেছিলেন, তোমরা জনগণের পুলিশ হবে। বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন আজ আপনারা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করেছেন। আজ পুলিশ জনগণের সবচেয়ে বড় ভরসাস্থল ও আস্থায় পরিণত হয়েছে।
পুলিশ সপ্তাহ-২০২৩ এর ৫ম দিনে শনিবার (৭ জানুয়ারি ২০২৩ খ্রি.) রাতে রাজধানীর রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।
ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম-বার, পিপিএম এর সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোঃ আমিনুল ইসলাম খান।
পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপিগণ, ঢাকাস্থ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের প্রধানগণ, সকল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি ও জেলার পুলিশ সুপারগণ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও জলদস্যু দমনে সাফল্য অর্জন করেছেন। বান্দরবানে বড় ধরনের জঙ্গি আস্তানায় সাহসিকতার সঙ্গে অভিযান চালিয়ে সফল হয়েছেন।
মন্ত্রী আরো বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। আপনারা সেই জায়গা থেকেই কাজ করছেন। যে কোন বিপর্যয়ে পুলিশ জনগণের বন্ধু হিসেবে কাজ করছে। করোনাভাইরাস মহামারীর সময়ে পুলিশ জনগণের পাশে থেকে কাজ করেছেন। এমনকি আক্রান্ত হয়ে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। পুলিশ দায়িত্ব পালনে কখনো পিছুপা হয়নি। আগের পুলিশ আর এই পুলিশ এক নয়। পুলিশ খেলাধুলাসহ সবকিছুতে এগিয়ে যাচ্ছে।
জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোঃ আমিনুল ইসলাম খান বলেন, পুলিশ কর্মকর্তারা পুলিশের সক্ষমতা বাড়াতে বেশ কিছু প্রস্তাব উপস্থাপন করেছেন। সবগুলো প্রস্তাবই অত্যন্ত যৌক্তিক। পুলিশের কাজের ধরণ অনুযায়ী চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে হলে অবশ্যই সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রয়োজন রয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম-বার, পিপিএম বলেন, পুলিশের যতটুকু সার্ভিস দেওয়ার কথা সর্বোচ্চ সামর্থ্য দিয়ে আমরা সবটুকু সার্ভিস দেওয়ার চেষ্টা করেছি। করোনাভাইরাস মহামারীর সময় পুলিশের প্রতিটি সদস্য জীবন বাজি রেখে সাধারণ মানুষকে সেবা দেওয়ার জন্য নিজ দায়িত্বের অতিরিক্ত কাজ করেছেন। আমাদের দায়িত্ব ছিলো কোয়ারেন্টাইন এনফোর্স করা, স্বাস্থ্যবিধি এনফোর্স করা। এর বাইরে গিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে সেবা করেছে পুলিশ।
আইজিপি আরো বলেন, করোনার সময় আমরা টেলিফোন নাম্বার বা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নাম্বারের মাধ্যমে ফোন কল পেয়ে অনেককে সাহায্য করেছি। অনেকে হয়তোবা কারো কাছে সাহায্য সহযোগিতা চাইতে পারেনি। তখন আমাদেরকে লুকিয়ে লুকিয়ে ফোন করেছে। তাদের ঘরে আমরা খাবার পৌঁছে দিয়েছি। সামাজিক দূরত্ব মানার জন্য তারা ঘর থেকে বের হতে পারতো না। কাজ করতে পারত না। ফলে ঘরে আহার ছিল না। সে কারো কাছে চাইতে পারত না। তাকেও আমরা খাবার পৌঁছে দিয়েছি। করোনার সময় রোগীদের মানবিকতার চরম বিপর্যয় ঘটেছিলো। সে সকল রোগীকেও আমরা হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছি। করোনায় মৃত ব্যক্তির সৎকার করেছি। আপনারা আমাদেরকে যে সহায়তা দিয়েছেন তার জন্য পুলিশের প্রতিটি সদস্য মনে করেছে এদেশের জন্য ও এদেশের মানুষের জন্য সাপোর্ট দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। সে দায়িত্ববোধ থেকে পুলিশ সদস্যরা তাদের কর্তব্য পালন করেছে। আমি নিশ্চয়তা দিচ্ছি সাধারণ মানুষের জন্য যা করা দরকার এটা আমাদের পুলিশ বাহিনী করবে। এছাড়াও, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার জন্য আগামী দিনের যেকোনো চ্যালেঞ্জ, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের মতো যে সকল শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে চায়, পুলিশ যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আন্তরিকভাবে সাহসিকতার সাথে সবসময় কাজ করছে। আগামীতেও করবে।
এর আগে সভায় উপস্থিত কর্মকর্তারা পুলিশের সক্ষমতা বাড়াতে বিভিন্ন প্রস্তাব তুলে ধরেন।
‘বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে পুলিশ আছে জনতার পাশে’ প্রতিপাদ্যে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে পুলিশ সপ্তাহ-২০২৩। মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি ২০২৩ খ্রি.) সকালে রাজারবাগ পুলিশ লাইনস মাঠে বার্ষিক পুলিশ প্যারেডের মধ্য দিয়ে পুলিশ সপ্তাহ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছয় দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য পুলিশ সপ্তাহ শেষ হচ্ছে ৮ জানুয়ারি ২০২৩ খ্রি.।ডিএমপি