মঙ্গলবার, ০৩ জানুয়ারী, ২০২৩
27 Nov 2024 04:43 am
সাইফুর রহমান শামীম, কুড়িগ্রামঃ কুড়িগ্রামে দুসপ্তাহ ধরে চলা শৈত্যপ্রবাহের ফলে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। সূর্যের আলো ঠিকমতো না পাওয়ায় বোরোর বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কায় পড়েছেন কৃষক।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্ব) সুমন মিয়া জানান “ফোরকাস্ট অনুযায়ী এ মাসে দুটি মৃদু ও মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহের পূর্বাভাস রয়েছে।”
তীব্র ঠাণ্ডায় সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বেড়েই চলেছে। বিকাল থেকে পরদিন সকাল ১০টা পর্যন্ত সূর্যের দেখা মিলছে না। প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না কেউ। গরম কাপড়ের অভাবে কাজে যেতে পারছেন না নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। কুড়িগ্রাম পৌরসভা এলাকার চর কুড়িগ্রামের অটোরিকশা চালক জয়নাল বলেন, “বাপুরে ঠাণ্ডাত হাত-পাও শিক নাগি যায়। কাঁশতে কাঁশতে অবস্থা খারাপ। দুই দিন বসি আছলং। পেটের দায়ে ফির অটো নিয়া বেড়াইছি।”
ঘোষপাড়ার হোটেলের শ্রমিক মালেক বলেন, “মহাজন ভোর থাকি কামোত আসপের কয়। এই ঠাণ্ডাত কেমন করি বাড়ি থাকি বেইর হই। ঠাণ্ডা পানি নাড়তে নাড়তে গাত জ্বর ধরছে।”এদিকে শৈত্যপ্রতাহ ও ঘন কুয়াশায় সদ্য রোপন করা বোরো বীজতলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে কৃষক। তাদেরই একজন সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের টাপুরচর এলাকার কৃষক ওমেদ আলী।
এ কৃষক বলেন, “রোদ না পাওয়ায় বীজতলা লালচে হয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও অতিরিক্ত কুয়াশার কারণে বীজতলা পানিতে ডুবে যাচ্ছে বীজও সেভাবে বাড়ছে না।”কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত জানান, শৈত্যপ্রতাহ ও ঘন কুয়াশা থেকে বীজতলা নিরাপদ রাখতে তারা মাঠ পর্যায়ে চাষিদেরকে বীজতলা পলিথিন ঢেকে রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন। এতে বীজতলার কোন ক্ষতি হবে না বলে আশা করা হচ্ছে।
সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সাইদুর রহমান জানান, টানা শৈত্যপ্রবাহের ফলে নিম্ন আয়ের মানুষরা খুব সমস্যায় পড়েছে। কাজে যেতে না পারায় তাদের আয়ও বন্ধ হয়ে গেছে।
প্রতিবছর বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও বিত্তবানরা গরম কাপড় দিয়ে সহায়তা করলেও এ বছর এখনও কোনা সাড়া মিলছে না। বিশেষ করে শিশু ও নারীদের জন্য চাদরের চাহিদা রয়েছে।” যোগ করেন তিনি।