বৃহস্পতিবার, ০৯ মার্চ, ২০২৩
16 Nov 2024 02:39 am
৭১ভিশন ডেস্ক:- ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ০৯ মার্চ -২০২৩ : জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি বলেছেন, রাজধানীর সিদ্দিক বাজারে ভয়াবহ বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনায় দেশের মানুষ শোকাহত। যারা স্বজন হারিয়েছে তাদের আহাজারী চলছে। স্বজনহারাদের প্রতি সহানুভুতি না জানিয়ে, দেশে আনন্দ ফুর্তি চলছে। দেশের একদিকে আহাজারী অন্যদিকে আনন্দ ফুর্তি। যখন হাসপাতালের বেডে দ্বগ্ধ মানুষ অসহনীয় কষ্টে কাতরাচ্ছে, তখন রাজনৈতিক নেতারা এটা নিয়ে একে-অপরের বিরুদ্ধে দোষারোপের রাজনীতি শুরু করছে। দুর্ঘটনা ঘটলেই দোষারোপের রাজনীতি শুরু হয়। সরকারি দলের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বিরোধী পক্ষ আন্দোলনে ব্যার্থ হয়ে নাশকতা করছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদি নাশকতা হয়েই থাকে, তাহলে সরকার নাশকতা ঠেকাতে পুরোপুরি ব্যার্থ। নাশকতা ঠেকাতে যারা ব্যার্থ হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে ?
আজ দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এর বনানীস্থ কার্যালয় মিলনায়তনে জাতীয় মাহলা পার্টি আয়োজিত “অন্তর্জাতিক নারী দিবস” উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় গোলাম মোহাম্মদ কাদের এ কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, ভয়াবহ দুর্ঘটনা থেকে দেশের মানুষকে রক্ষা করতে না পারলে রাষ্ট্র তো শোক প্রকাশ করতে পারে। দায়িত্ব পালনে ব্যার্থ হলে স্বজনহারাদের প্রতি সহানুভূতি জানানো যেতো। এখন ব্যার্থতা ঘোচাতে অপরকে দোষারোপ করা হচ্ছে। আমারা নিহতদের যথাযথ ক্ষতি পূরণ এবং আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে দাবি জানাচ্ছি। যারা ভায়াবহ দূর্ঘটনার জন্য দায়ি তাদের চিহ্নিত করা হচ্ছে না। যাদের ব্যার্থতা, অবহেলা, দায়িত্বহীনতা এবং দুর্নীতির কারনে এমন ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। একটি দূর্ঘটনা ঘটলে তা থেকে শিক্ষা নিতে হয়, যাতে এমন দূর্ঘটনা আর না ঘটে। তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় কিন্তু তদন্ত রিপোর্ট কেউ জানে না। তদন্ত কমিটি কী সুপারিশ করলো কেউ জানে না। কে দায়ী ? বা দায়ীর বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে তা কেউ জানতে পারে না। এখন সব কিছুতেই গলদ। ভবন তৈরী হয় বিল্ডিং কোড মানা হচ্ছে না, গ্যাসের লাইন বৈধ না অবৈধ তার ঠিক নেই। এগুলো দেখাশোনার দায়িত্বে যারা, তাদের খোঁজ নেই। এত বড় বড় দূর্ঘটনা ঘটছে কিন্তু কারন উদঘটনা করা সম্ভব হচ্ছে না। এর চেয়ে বড় ব্যার্থতা আর হতে পারে না।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, নারী-পুরুষের বৈষম্য স্বাভাবিকভাবেই দূর হয়ে যাচ্ছে। তবে, সবার আগে দেশের মানুষের মাঝে ক্ষমতার বৈষম্য দূর করতে হবে। ক্ষমতার ভারসম্য সৃষ্টি করতেহবে। তিনি বলেন, দেশের মানুষের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে হবে। ক্ষমতা এখন একটি গোষ্ঠী বা এক ব্যক্তির হাতে কেন্দ্রীভূত হয়ে পড়েছে। ক্ষমতা থাকলেই অধিকার নিশ্চিত হয়। দেশের মানুষের হাত থেকে ক্রমে ক্রমে ক্ষমতা দূরে সরে যাচ্ছে। তাই দেশের মানুষ অধিকার বঞ্চিত হচ্ছে। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে দেশের মানুষ বৈষম্য থেকে মুক্তি চেয়েছিলো। মুক্তির জন্য দেশের মানুষ মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নিয়েছে। আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি, পতাকা পেয়েছি, ভূখন্ড পেয়েছি একং একটি সংবিধান পেয়েছি। কিন্তু, সেই সংবিধানে যা লেখা ছিলো তা থেকে আমরা আস্তে আস্তে দূরে সরে গেছি।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, সমাজ থেকে বৈষম্য দূর করতে হলে আগে ক্ষমতার বৈষম্য দূর করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করতে পারলেই দেশ থেকে বৈষম্য দূর করা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, ক্ষমতার বৈষম্য কমছে না, বরং দিন দিন বাড়ছে। ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত হওয়ার কারনে এক শ্রেনীর মানুষ ধনী থেকে আরো ধনী হচ্ছে। আর দরিদ্র আরো দরিদ্র হচ্ছে। এক শ্রেনী এত ধনী হচ্ছে যে, তারা দরিদ্রদের চিনতেই পারছে না। তারা বলে, বাংলাদেশে দারিদ্রের কী আছে? সাধারণ মানুষের কাছে অধিকার বলতে কিছুই নেই। নাগরিক হিসেবে মানুষের যে অধিকার থাকার কথা ছিলো তা এখন আর নেই। মানুষকে তার অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় জাতীয় পার্টি মহাসচিব মোঃ মুজিবুল হক চুন্নু এমপি বলেন, নারীদের ক্ষমতা অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশের মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে নারীদের অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্ততায় জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, দেশের সকল উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে নারীর অবদান অনস্বীকার্য। আন্দোলন সংগ্রামে নারীদের আরো এগিয়ে আসতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্ততায় জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি বলেন, নারীকে বাদ দিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম অসম্ভব। আগামী নির্বাচনে জাতীয় মহিলা পার্টিকে আরো ভূমিকা রাখতে হবে।
সভাপতির বক্তৃতায় জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও জাতীয় মহিলা পার্টির আহবায়ক অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি বলেন, ইসলাম নারীর পূর্ণ মর্যাদা নিশ্চিত করেছে। দেশের স্বার্থে নারীরা আগামীতে আরো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
বিশেষ অতিথির বক্ততায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এর উপদেষ্টা ও জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির সভাপতি শেরিফা কাদের এমপি বলেন, নারীর অধিকার রক্ষা এবং বৈষম্য দূর করতে নারীকেই এগিয়ে আসতে হবে। নারীর মর্যাদা রক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করতে হবে।
জাতীয় মহিলা পার্টির আহ্বায়ক ও কো-চেয়ারম্যান সালমা ইসলাম এমপি’র সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমা আখতার এমপি’র সঞ্চালনায় বিশ্ব নারী দিবসের আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এমপি, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা শেরীফা কাদের এমপি, হেনা খান পন্নি, এডভোকেট লাকী বেগম, মহিলা পার্টির নেতৃবৃন্দের মধ্যে ডা. সেলিমা খান, অধ্যাপিকা বিলকিস আখতার পুতুল, খাইরুন নাহার, রিতা নূর, জেসমিন নূর প্রিয়াংকা, শাহনাজ পারভীন, আইরিন গমেশ ও রেশমা। উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ দিদার বখত, দফতর সম্পাদক ২ এমএ রাজ্জাক খান, মহিলা পার্টির নেত্রীদের মধ্যে তাসলিমা আকবর রুনা, মিনি খান, শারমী আখতার, মেহেরুন্নেসা হিয়া, শ্যামলী, রীনা, কিয়া মাসুদ।
জাতীয় যুব সংহতির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
আজ দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানীস্থ কার্যালয়ের মিলনায়তনে জাতীয় যুব সংহতির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন, জাতীয় পার্টির মহাসচিব মোঃ মুজিবুল হক চুন্নু এমপি।
জাতীয় যুব সংহতির আহ্বায়ক ও জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান এইচ এম শাহরিয়ার আসিফ এর সভাতিত্বে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সদস্য সচিব আহাদ ইউ চৌধুরী শাহীন। এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ, ভাইস চেয়ারম্যান তারেক এ আদেল, যুব সংহতির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মোঃ হেলাল উদ্দিন, হেলাল উদ্দিন হেলাল, মোঃ সাইফুল ইসলাম, নেওয়াজ আলী ভূঁইয়া, দ্বীন ইসলাম শেখ, শফিকুল ইসলাম দুলাল, ফখরুল আহমদ, এডভোকেট শিবলী খায়ের, মোঃ রেজাউল গণি পলাশ, বশির আহমেদ, আবুল কালাম আজাদ, অধ্যাপক নুরুল বাশার সুজন, আসাদুল হক মিলন, মোঃ তোবারক হোসেন তপু, মোঃ মিজানুর রহমান, শফিকুল ইসলাম, হানিফ হোসেন বাবু, জামাল হোসেন, হুমায়ুন কবির, শাহজাহান উদ্দিন নাজু, হেমায়েত, চন্দন বড়ুয়া, মিজানুর রহমান, আব্দুর রাজ্জাক, শরিফ হোসেন, আবুল কালাম আজাদ, মাইনুদ্দিন ইসলাম, আবু নাছের বাদল, আব্দুল্লাহ আল মামুন।