অফিস ডেস্ক
প্রতিবেদন প্রকাশ: ০৮ নভেম্বার ২০২৫, সময়ঃ ০১:৪৪
মোকছেদুল মমিন মোয়াজ্জেম,দিনাজপুর প্রতিবেদক-দিনাজপুরের হাকিমপুর হিলি ও আশপাশের এলাকায় এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন আগাম জাতের আলু চাষিরা। আমন ধান কাটার পর ফাঁকা হয়ে যাওয়া জমিতে দাপটের সঙ্গে শুরু হয়েছে অ্যাস্টেরিক, কার্ডিনাল ও স্বল্পমেয়াদি শাটাল জাতের আলুর বীজ রোপণ।
মৌসুমের শুরুতে আলুর চড়া দামের প্রত্যাশায় কৃষকদের মাঝে উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা গেলেও সার, কীটনাশক ও শ্রমিকের বাড়তি দাম তাদের উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।
খট্টামাধবপাড়া, ইসবপুর, বোয়ালদাড়সহ বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়। কৃষকরা মাঠজুড়ে হাল চাষ, আগাছা পরিষ্কার, জমিতে গোবর ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ, বেড তৈরি এবং হিমাগার থেকে আনা বীজ রোপণে ব্যস্ত। শীতের আগমনী বার্তায় কৃষিজমিতে উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়েছে।
খট্রামাধবপাড়ার কৃষক আবু বক্কর বলেন, আগাম আমন ধান কাটার পরপরই আলুর জমি প্রস্তুত শুরু করেছি। হিমাগার থেকে সংরক্ষিত বীজ আনা, হাল চাষ, সার প্রয়োগ, সব মিলিয়ে মাঠজুড়ে ব্যস্ততা এখন চরমে। তবে খরচ ভয়ানক বেড়ে গেছে। এক বিঘা জমিতে ৪০ হাজার টাকার কমে আর আলু তোলা যায় না।
তিনি আরো বলেন, আগাম আলুর উৎপাদন সাধারণত ৫০ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে বাজারে বিক্রি করা যায়। কিন্তু বাজারে আলুর দাম এখনো কম। যদি ভারতসহ বিদেশে রপ্তানির সুযোগ থাকতো তাহলে কৃষকদের হাত ভালোমত শক্ত হতো।
ইসবপুরের কৃষক হান্নান জানান, আগাম তোলা আলু বাজারে বেশি দামে বিক্রি করা যায় বলেই অ্যাস্টেরিক, কার্ডিনাল ও শাটাল জাতের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। এসব আলুর প্রতি বিঘায় ৪০ থেকে ৫০ মণ উৎপাদন হয়, ফলে ভালো বাজার থাকলে লাভজনক।
মাধবপাড়ার কৃষক মিজানুর রহমান বলেন, বীজ আলুর দাম কম থাকায় প্রথমে একটু স্বস্তি পেয়েছিলাম। কিন্তু সার আর কীটনাশকের সঙ্কট আমাদের সব হিসাব পাল্টে দিয়েছে। বাজারে দাম কম থাকলে আমরা লোকসান ছাড়া কিছুই পাবো না।
আলু রোপণ মৌসুমে শ্রমিকদেরও কাজে ব্যস্ততা বেড়েছে। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জমিতে বিভিন্ন ধাপে কাজ করছেন তারা।
স্থানীয় শ্রমিক তাহের আলী বলেন, আগাম আলুর সময়ে কাজ থাকে বেশি। রোজগারও ভালো। এই আয় দিয়ে এখন পরিবার নিয়ে ভালোভাবেই চলতে পারছি।
হাকিমপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরজেনা বেগম বলেন, কৃষকদের আগাম আলু চাষে সব ধরনের কারিগরি পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আবহাওয়া এখন পর্যন্ত অনুকূল রয়েছে। আশা করছি ফলনও ভালো হবে, দামও ভালো পাবেন চাষিরা।
তিনি আরো জানান, চলতি বছরে হাকিমপুর উপজেলায় ১ হাজার ৩৭০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ইতোমধ্যে ৫০ হেক্টর জমিতে আগাম আলুর বীজ রোপণ সম্পন্ন হয়েছে।
© 71 Vision ২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
সতর্কতাঃ অনুমতি ব্যতীত কোন সংবাদ বা ছবি প্রকাশ বা ব্যবহার করা যাবে না।