রবিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৫
24 Aug 2025 07:00 am
![]() |
বাংলাদেশের রাজনীতিতে আবারও "মাইনাস-টু" ফর্মুলা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যায়, ২০০৭ সালের ১/১১-পরবর্তী সময়ে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে প্রথমবার এ ধরনের উদ্যোগ সামনে আসে। উদ্দেশ্য ছিল দেশের দুই শীর্ষ নেত্রী—শেখ হাসিনা ও বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দিয়ে একটি তথাকথিত "শুদ্ধিকরণ প্রক্রিয়া" চালু করা। যদিও শেষ পর্যন্ত সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয় এবং জনগণের রায়ের ভিত্তিতে রাজনৈতিক নেতৃত্ব তাদের অবস্থান পুনরুদ্ধার করে।
কিন্তু আজ আবারও দেশি-বিদেশি কিছু মহল নতুনভাবে একই প্রক্রিয়া প্রয়োগের চেষ্টা করছে। এবার আর সেনাসমর্থিত সরকার নয়, বরং রাজনৈতিক অচলাবস্থা, অর্থনৈতিক চাপ ও আন্তর্জাতিক প্রভাব খাটিয়ে ভিন্ন রূপে "মাইনাস-টু" ফর্মুলা সামনে আনা হচ্ছে। মূলত উদ্দেশ্য একই—দেশের জনপ্রিয় নেতৃত্বকে সরিয়ে এমন একটি কাঠামো দাঁড় করানো, যা হবে সুবিধাভোগীদের জন্য কার্যকরী, কিন্তু গণতন্ত্র ও জনগণের স্বার্থ থেকে অনেক দূরে।
কেন আবার মাইনাস-টু আলোচনায়?
১. রাজনৈতিক অচলাবস্থা: এই সুযোগে কিছু মহল রাজনৈতিক প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে।
২. অর্থনৈতিক চাপ: ডলার সংকট, বৈদেশিক ঋণ ও মূল্যস্ফীতির মতো সমস্যাগুলোকে অজুহাত করে "ব্যবস্থার পরিবর্তন" দাবি তোলা হচ্ছে।
৩. আন্তর্জাতিক প্রভাব: ভূরাজনীতির কারণে বড় শক্তিগুলো বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করতে চায়। এ জন্য তারা এমন একটি সরকার চায়, যাকে নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে।
ইতিহাস থেকে শিক্ষা
১/১১ সময়কার মাইনাস-টু ফর্মুলা জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছিল। কারণ, বাংলাদেশের মানুষ জানে নেতৃত্ব কাকে বেছে নেবে, সেই অধিকার কেবল তাদেরই। ষড়যন্ত্র যত বড়ই হোক, গণআন্দোলন ও ভোটের মাধ্যমে জনগণই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেয়।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে করণীয়
রাজনৈতিক দলগুলোকে পারস্পরিক আস্থা ও সংলাপের পথে আসতে হবে।
জনগণের ভোটাধিকার ও সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
বিদেশি চাপ বা দেশি ষড়যন্ত্র নয়, বরং জাতীয় স্বার্থকে সর্বাগ্রে রাখতে হবে।
সর্বোপরি, বাংলাদেশের রাজনীতিতে "মাইনাস-টু" ফর্মুলা আসলে গণতন্ত্রকে দুর্বল করার কৌশল। জনগণের শক্তি ও ঐক্যই হতে পারে এই ষড়যন্ত্র মোকাবেলার একমাত্র অস্ত্র।
মোঃ আজিজুল হুদা চৌধুরী সুমন: লেখক ও রাজনীতিবিদ