রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫
28 Jul 2025 04:29 am
![]() |
মোঃমামুন হাওলাদার শিমুল ইন্দুকানীপ্রতিনিধিঃ- পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলায় কচা নদীর স্রোতের চাপে তীরবর্তী বেড়িবাঁধ নির্মাণের দুই মাসের মধ্যেই ধস শুরু হয়েছে।এতে ফসলি জমি ও বাড়ি-ঘর হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছেন নদীতীরের বাসিন্দারা।এর আগে গত বছর ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে বিলীন হয় বাঁধটি।স্থানীয় লোকজনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কিছু অংশ নির্মাণ করে কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ২৬ ও ২৭ মে ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে ইন্দুরকানীর কচা নদীতে প্রবল জলোচ্ছ্বাস হয়।এতে নদীর তীরবর্তী ১০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধে ধস দেখা দিয়েছিল। সে সময় আশপাশ এলাকা প্লাবিত হওয়ায় হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়েন।অন্তত দুই হাজার বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কোনো সহায়তা করা হয়নি বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
ঘূর্ণিঝড়ের পর কচা নদীর তীরবর্তী বিলীন হওয়া বেড়িবাঁধ এলাকা নৌপথে ঘুরে পরিদর্শন করেন জনপ্রতিনিধিরা। এ সময় দুর্গত এলাকার বাসিন্দারা বাঁধ নির্মাণে দাবি জানালে তা পূরণের আশ্বাস দেন তারা। এর পরিপ্রেক্ষিতে কচা নদীর শুধু টগড়া প্রান্তে আংশিক বাঁধ নির্মাণের বরাদ্দ দেওয়া হয়। কাজটি শেষ হয় চলতি বছরের এপ্রিল মাসের শেষ দিকে।
বাঁধের কাছাকাছি জায়গা থেকে মাটি কেটে নির্মাণ করায় ভাঙন দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। তাদের ভাষ্য, টেকসই না করায় পানির চাপে বিভিন্ন স্থান ধসে গেছে। যে কোনো সময় এটি নদীতে বিলীন হতে পারে। টগড়া গ্রামের বাসিন্দা মো. নেসার উদ্দিন বলেন, দুই মাস আগে নির্মাণকাজ শেষ করলেও পানির তোড়ে ভেঙে গেছে। বাঁধ সংস্কার করা না হলে বর্ষায় এলাকার মানুষ ঝুঁকির মুখে পড়বে।
সরেজমিন কচা নদীতীরবর্তী টগড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাসে বিলীন হওয়া প্রায় দেড় কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণ করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। অনেক স্থান ধসে গেছে। জানা গেছে–ইন্দুরকানী, কালাইয়া, সাঈদখালী, বালিপাড়া, চরবলেশ্বর, চন্ডিপুর, খোলপেটুয়া ও কলারণের বেড়িবাঁধের ভেঙে যাওয়া বাঁধ নির্মাণে কোনো বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। এখন ভাঙা স্থান দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে বাড়ি-ঘর ও ফসলি জমি প্লাবিত হচ্ছে।
কচা নদীতীরবর্তী চন্ডিপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. মশিউর রহমান মঞ্জু বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে বাঁধ ভেঙে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। টেকসই বাঁধ ও স্লুইস গেট সচল থাকলে পানির চাপ থেকে মানুষ বাঁচতে পারবে। তিনি নদীতীরবর্তী মানুষকে রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
একই ধরনের কথা বলেন পাড়েরহাট ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার। তিনি এলাকার ঘরবাড়িসহ ফসল রক্ষায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানান।
কচা নদীতীরে নির্মাণাধীন বেড়িবাঁধসহ পুরোনো অংশে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন পিরোজপুর পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী নুসাইব হোসেন। তিনি বলেন, নতুন প্রাক্কলন করে এলাকায় টেকসই বাঁধ নির্মাণের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে কাজ শুরু হবে।