শুক্রবার, ২৭ জুন, ২০২৫
26 Aug 2025 06:15 pm
![]() |
আবু ইউসুফ নওগাঁ প্রতিনিধি:- নওগাঁর রাণীনগরে এক ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে ভুয়া সনদ দিয়ে বিদ্যালয়ের সভাপতি হওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে।অভিযোগ উপজেলার ত্রিমোহণী উচ্চ বিদ্যালয়ে ডিগ্রি পাসের ভুয়া ওই সনদটি জমা দিয়ে এ্যাডহক (ম্যানেজিং) কমিটির সভাপতি হতে চেয়েছিলেন তিনি।সম্প্রতি তার সনদটি যাচাইয়ে ভুয়া বলে তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়।
অভিযোগ ওঠা ব্যক্তির নাম মোকলেছুর রহমান বাবু। তিনি কাশিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং উপজেলা বিএনপির সাবেক আহŸায়ক কমিটির সদস্য। এছাড়া বর্তমান প্রস্তাবিত কমিটির সহ-সভাপতি বলে জানা গেছে।
মকলেছুর রহমান বাবুর ভুয়া সনদ কান্ড নিয়ে সর্বমহলে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।তবে চেয়ারম্যান বলছেন তিনি কোন সনদ বিদ্যালয়ে জমা দেননি।আর বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বলছেন সনদ জমা দিয়েছিলেন। অপরদিকে সনদটি জাল বলে জানান শিক্ষা অফিসার।
জানা গেছে, উপজেলার ত্রিমোহনী উচ্চ বিদ্যালয়ের (ম্যানেজিং) এ্যাডহক কমিটি গঠনের জন্য প্রতিষ্ঠান প্রধান বিদ্যালয়ের শিক্ষক, অভিভাবক ও স্থানীয়দের বিষয়টি অবহিত করেন। আলোচনা সাপেক্ষে সভাপতি পদে তিনজনের নাম প্রস্তাব করেন তারা।যথাযথ নিয়মে প্রার্থীর কাছ থেকে ডিগ্রি (স্নাতক) পাশের সনদসহ প্রয়োজনীয় কাজগপত্র সংগ্রহ করে তিনজনের নাম জানুয়ারি মাসে সংশ্লিষ্টদের মাধ্যমে শিক্ষা বোর্ডে পাঠান প্রতিষ্ঠান প্রধান। তিনজন প্রার্থীর মধ্যে চেয়ারম্যান মকলেছুর রহমান বাবু একজন প্রার্থী।তিনি এ্যাডহক কমিটির সভাপতি হওয়ার জন্য বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি পাশের (বিএসএস) প্রোগ্রামের সনদ জমা দেন। এরপর বাবুর ডিগ্রি পাসের সনদ নিয়ে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা।
একপর্যায়ে ওপর দুই প্রার্থীর মধ্যে একজন প্রার্থী চেয়ারম্যানের সনদের বৈধতা যাচাইয়ের জন্য জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তার সনদটি যাচাইয়ের জন্য উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রেরণ করা হয়। এরপর তদন্তে বেরিয়ে আসে চেয়ারম্যান মকলেছুর রহমান বাবুর সনদটি ভুয়া।
বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) যুগ্ম পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ইন্জিনিয়ার এসএম কামরুল আহসান স্বাক্ষরিত সনদ যাচাই প্রতিবেদনে বলা হয়- মকলেছুর রহমান এর বিএসএস প্রোগ্রামের আইডি নং ০১-০-২৩-৩৬০-০৪৯ এর মূল সনদের ফটোকপি যাচাই পূর্বক ভুয়া চিহ্নিত করে উক্ত সনদের ফটোকপি সংযুক্ত সীলগালাকৃত খামে জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর প্রেরণ করা হয়। প্রতিবেদনে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে জরুরী ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যও বলা হয়েছে।
ডিগ্রি পাশের সনদ সম্পর্কে জানতে চাইলে মকলেছুর রহমান বাবু গণমাধ্যমকর্মীকে বলেন, আমি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের কাছে কোন সনদ জমা দিইনি। তিনি কোথায় সনদ পেয়েছেন তা আমি জানিনা। এই বিষয়ে তিনিই বলতে পারবেন। আর আমার সনদ ঠিক আছে।উপজেলার ত্রিমোহনী উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল মোত্তালিব বলেন, আমার কাছে চেয়ারম্যান তার প্রতিনিধির মাধ্যমে উন্মুক্তের ডিগ্রি পাশের সনদসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাঠিয়েছিলেন। তিনজন সভাপতি প্রার্থীর নাম ও কাগজপত্র সংশ্লিষ্টদের মাধ্যমে শিক্ষা বোর্ডে পাঠিয়েছি। তার সনদ সঠিক না ভুয়া তা আমি জানিনা।
জানতে চাইলে নওগাঁ জেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) শাহাদৎ হোসেন বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে সনদটি যাচাইয়ের জন্য উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রেরণ করা হয়। সেখান থেকে সনদটি জাল বলে প্রতিবেদন দেয়।