সোমবার, ২৩ জুন, ২০২৫
27 Aug 2025 01:40 am
![]() |
আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি:- বগুড়ার আদমদীঘিতে সনাতন ধর্মালম্বী শ্রী রাম চন্দ্র (৫৫) নামের এক গ্রাম পুলিশের বিরুদ্ধে ধর্মের তথ্য গোপন রেখে নিজেকে মুসলিম পরিচয় দিয়ে ২৯ বছর বয়সী এক মুসলিম নারীকে বিয়ে করে ৭ বছর সংসার করার অভিযোগ উঠেছে।ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সান্তাহার ইউপির বামনীগ্রাম গ্রামে।এদিকে বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়।
ভুক্তভোগী ওই নারী জানায়, তার সঙ্গে প্রায় ৭ বছর সংসার করেন শ্রী রাম চন্দ্র। সংসার করা কালে আমার ভাইয়ের কাছ থেকে রাম চন্দ্র প্রায় ৬ লাখ টাকা ধার নেন। পরে ফেরত চাইলে নানা রকম তালবাহানা এবং টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করে তালাকের হুমকি দিয়ে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন তিনি।ফলে অসহায় হয়ে পড়েছেন ওই নারী ও তার পরিবার। এ নিয়ে গত ৩ জুন ওই নারী আদমদীঘি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২৮ নভেম্বর আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার ইউপির সান্দিড়া গ্রামের ঋষিপাড়ার গ্রামপুলিশ শ্রী রাম চন্দ্র নিজেকে বাবু পরিচয় দিয়ে একই ইউনিয়নের বামনীগ্রামের মৃত ছামাদুল সাখিদারের মেয়েকে নওগাঁ নোটারি পাবলিক কার্যালয়ে এফিডেভিটের মাধ্যমে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে তিনি ওই নারীর বাড়িতেই থাকা শুরু করেন এবং ইসলাম ধর্ম মোতাবেক সকল সামাজিক রীতি-নীতি পালন করেন।এমনকি তিনি মসজিদে গিয়ে নামাজও আদায় করতেন। কিন্তু ২০২০ সালের জুন মাসের দিকে ওই নারী তার প্রকৃত পরিচয় জানতে পারেন। তিনি হিন্দু স¤প্রদায়ের এবং তার স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে। এরপর তার সঙ্গে সংসার করতে না চাইলে ২০২০ সালের ২ সেপ্টেম্বর তিনি এফিডেভিটের মাধ্যমে মুসলমান হয়ে আবারও বিবাহ রেজিস্ট্রি করেন। সেই সঙ্গে তিনি আগের পরিবারের সঙ্গে আর কোনোপ্রকার যোগাযোগ রাখবেন না বলে প্রতিশ্রæতি দেন।
এদিকে ২০২১ সালে তার ছেলেকে বিদেশ পাঠানোর জন্য ওই ভুক্তভোগী নারীর কাছে টাকা চাইলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়।একপর্যায়ে ওই বছরের ১৩ এপ্রিল তিনি (রাম) কোর্টে এফিডেভিটের মাধ্যমে তাকে তালাক দেন। পরবর্তীতে নিরুপায় হয়ে ওই নারী তার ভাইয়ের কাছ থেকে ৪ লাখ টাকা ধার নিয়ে ২০২২ সালের ৩ মার্চ আবারও বিবাহ রেজিস্ট্রি করেন। এরপর তিনি জটিলরোগে আক্রান্ত হলে চিকিৎসা বাবদ ওই নারী তার ভাইয়ের কাছে থেকে ফের দুই লাখ ২০ হাজার টাকা তাকে ধার নিয়ে দেন। গত এপ্রিল মাসে ওই নারীর ভাই বিদেশ থেকে দেশে আসার পর ধারের পাওনা টাকা ফেরত চাইলে তালবাহানা শুরুকরেন এবং একপর্যায়ে টাকা দিতে অস্বীকার করেন। সেই সঙ্গে ওই নারীকে আবারও তালাক দেওয়ার হুমকি দিয়ে সকল প্রকার যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। বর্তমানে তিনি নিজেকে হিন্দু স¤প্রদায়ের মানুষ দাবি করে প্রথম স্ত্রী ও তার পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন। বিষয়টির সমাধান চেয়ে গত ৩ জুন ওই নারী তার বিরুদ্ধে আদমদীঘি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযুক্ত সান্তাহার ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশ শ্রী রাম চন্দ্র জানান, এফিডেভিটের মাধ্যমে মুসলমান হয়ে ওই মেয়েকে বিয়ে করেছিলাম। তার আচার ব্যবহার ও বনিবনা না হওয়ায় তাকে তালাক দিয়ে আবারও সনাতন ধর্মে ফিরে আসি।
অভিযোগ তদন্তকারি কর্মকর্তা আদমদীঘি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বাবুল আক্তার অভিযোগ পাওয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, প্রাথমিকভাবে ঘটনাটির বেশ কিছু সত্যতা পাওয়া গেছে। রাম চন্দ্র মুসলিম হয়ে জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করতেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
আবু মুত্তালিব মতি,আদমদীঘি বগুড়া প্রতিনিধি