বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন, ২০২৫
28 Aug 2025 01:22 am
![]() |
ছাদেকুল ইসলাম রুবেল,গাইবান্ধাঃ- গাইবান্ধার পলাশবাড়ী পৌর শহরের ঐতিহ্যবাহী কালীবাড়ী হাট এক সময় ছিল উত্তরাঞ্চলের অন্যতম বড় চামড়ার হাট। ঈদুল আযহার পর পশু কুরবানির চামড়া বিক্রি করে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, এতিমখানা ও গরীব-দুঃখীরা সহায়তা পেতো। কিন্তু আজ চামড়া বেচাকেনার সেই দিনগুলো যেন কেবলই সোনালী অতীত।
ঈদুল আযহার কুরবানির ১২তম দিন ১৮ জুন, বুধবার বসে কালীবাড়ী হাট। এর আগে ৭ জুন (শনিবার) সারাদেশে উদযাপিত হয় ঈদ। ঈদের পর প্রথম বুধবার (১১ জুন) হাটে উল্লেখযোগ্য চামড়া না আসলেও দ্বিতীয় বুধবারে কিছুটা চাঙা ভাব লক্ষ্য করা গেছে। ছোট-বড় নানা সাইজের চামড়া এসেছে, ছিল মৌসুমি ফড়িয়া ও ক্রেতাদের উপস্থিতিও।
একসময় এই হাটে সপ্তাহের দুইদিন (বুধ ও শনিবার) চামড়া কেনাবেচার ধুম পড়ে যেতো। আজিমপুর, পোস্তা এবং ঢাকার বিভিন্ন ট্যানারির আড়ৎদাররা আসতেন সরাসরি। চলতো রাতভর বেচাকেনা, গুণগত মান যাচাই, এবং ঢাকাইয়া ভাষার মিলনমেলা। স্থানীয় কুলি-মজদুরদের জন্য এটি ছিল বাড়তি আয়ের সুবর্ণ সুযোগ। গড়ে উঠেছিল ছোট-বড় গুদাম ও আড়ৎ। কিন্তু এখন সেসব কেবলই নিস্তব্ধ স্মৃতি।
গত এক দশকে চামড়ার বাজার দর পড়তির দিকে। সিন্ডিকেট, নীতির অভাব ও সরকারের অদূরদর্শিতায় খাতটি ধ্বংসের মুখে। বর্তমানে অনেক ব্যবসায়ী পুঁজি হারিয়ে পথে বসেছেন। হাটের চাহিদা কমায় সরকারি ইজারাও কমতে শুরু করেছে। চামড়া থাকলেও নেই মহাজন, আবার মহাজন থাকলেও নেই চামড়া। অথচ চামড়া দিয়ে তৈরি পণ্যের দাম আকাশচুম্বী।
একসময় এই হাটকে কেন্দ্র করে মিষ্টির দোকান, অস্থায়ী হোটেল, খাবারের দোকানে জমজমাট পরিবেশ থাকত। আত্মীয়স্বজন হোটেলে উঠতেন আগেভাগেই। এখন তেমন কিছুই আর চোখে পড়ে না।
তবে প্রশাসন এবারও হাট সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নে তৎপর। থানা অফিসার ইনচার্জ জুলফিকার আলী ভুট্টো জানান, চামড়া বেচাকেনা এবং অর্থ লেনদেনে যেন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সে লক্ষ্যে পুলিশের কঠোর নজরদারি রয়েছে।